পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* মাটির বাস৷ --- o ত্রীসীতা দেবী ( & ) মৃগাঙ্কের সংসার এখন ভরিয়া উঠিয়াছিল। প্রিয়বালার ছয়-সাতটি ছেলেমেয়ে হইয়াছে, সব কয়টিই প্রায় সমান ডানপিটে, ঘরের কাজকৰ্ম্ম সারিতে আর ছেলেমেয়ে সামলাইতে একলা মানুষ তাহার প্রাণান্ত হইয়া যায়। বড়মেয়ে স্ববালার বয়স বছর দশ হইয়াছে, সেই যা একটু মানুষের মত । আর কোনও কাজে লাগুক বা নাই লাগুক, ছোট ছেলেমেয়েগুলিকে সামলাইয়। মায়ের অনেকটা কাজের সাহায্য করে । বাকীগুলা এখনও বনের পশুর মতই আছে, মানুষের পদবীতে উন্নীত হয় নাই। ভালর মধ্যে এইটুকু যে অসুস্থ কেহ নয়, সব-কটারই মোটের উপর শরীর ভাল । তা না হইলে এই টানাটানির সংসারে আর তাহদের বাচিতে হইত না। ঔষধ, পথ্য, ডাক্তারের ভিজিট এ-সব কোথা হইতে আসিত ? মৃগাঙ্কের অবস্থার কোনও উন্নতি হয় নাই, যেমন ছিল তাই আছে, কিন্তু মানুষ এখন এত বাড়িয়াছে যে এই অল্প আয়ে আর কুলায় না, মোটা ভাত মোট কাপড় জুটাইতেই জিব বাহির হইয় পড়ে। বড়মেয়ে স্ববালা ওরফে বুলু, তাহার পর এক ছেলে গুলু, তাহার পর আবার দুই মেয়ে টেপি আর ক্ষেপী, তাহার পরে তিন ছেলে নিধু, বিধু, আর সিধু। সিধুর বয়স মাত্র কয় মাস, সবে হামা দিবার চেষ্টা করিতেছে। গ্রামে ভাল স্কুল নাই, বিদ্যালয় বলিতে দুইটি পাঠশালা আছে, একটি ছেলেদের, একটি মেয়েদের । মেয়েদের পড়াইবার কথা প্রিয়বালা স্বপ্নে ও মনে স্থান দেন না । বুলি যদি হুটু হই করিয়া বিবি সাজিয়া রোজ দশ ঘণ্ট পাঠশালায় কাটাইয় আসে তাহ হইলে একটা আট মাসের ও একটা দুই বছরের ছেলে ট্যাকে গুজিয়া তিনি এই রাবণের গোষ্ঠীর পিণ্ডি রাধিবেন কি প্রকারে ? তিনি ত আর দশভূজা নন। ওসব মেমসাহেবীআনা । মেমসাহেবের

  • -

মেয়েদেরই পোষায়, পাড়াগায়ে হিন্দুঘরে পোষাইবে না। টেপি আর ক্ষেপীরও পড়া আরম্ভ করিবার বয়স হইয়াছে, সেগুলি ঘর হইতে যতক্ষণই বাহিরে থাকুক তাহাতে প্রিয়বালার সম্মতি বই আপত্তি নাই, কিন্তু বড় বোনকে বাদ দিয়া তাহদের পড়িতে পাঠাইলে বুলি আর মায়ের রক্ষা রাখিবে ? এমনিতেই সতীন-ঝি শহরে গিয়া পরীক্ষায় পাস দিবার যোগাড় করিতেছে, আর বুলির এখনও অক্ষর পরিচয়ের অধিক বিদ্যা অগ্রসর হইল না, ইহারই খোটা প্রিয়বালাকে কতবার থাইতে হয়। কিন্তু উপায় নাই। भूड मडीन 4दर औबिउ गडौन-दशरदः शाल পাড়িয়া যেটুকু গায়ের ঝাল মিটানো যায়, তাহার বেশী কিই বা প্রিয়বালা । করিতে পারেন? তাও যদি সতীন-বিটা গালাগুলিগুলি । শুনিতে পাইত। স্বামী ত কানে তুল গুজিয়া, পিঠে কুল৷ বাধিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া বসিয়া আছেন, একেবারে কাঠের श्रृङ्गो । - ছেলে গুলু পাঠশালাতেই পড়ে, সে বেটাছেলে তাঁহাকে লেখাপড়া শিথিতেই হইবে। পাশের গ্রামে ভাল মিডল ইংলিশ স্কুল আছে, সেখানে এ গ্রামের কয়েক জন ছেলে পড়িতেও যায়, কিন্তু প্রিয়বালার আদরের ছেলে অতদূর হাটিয়া যাইতে পরিবে না বলিয়া তাহার আজ পর্য্যস্ত স্কুলে ভৰ্ত্তি হওয়া হয় নাই। নিজে একেবারে বর্ণজ্ঞানহীন বলিয়৷ পড়াশুনার প্রয়োজনটা যে কতখানি তাহ প্রিয়বালা छेिदः বুঝিতে পারেন না। টাকা আনিবার জন্য বিদ্যার প্রয়োজন বটে, কিন্তু গুলুর বয়স ত মাত্র আট বৎসর, এখনই কি আর সময় উৎরাইয়া গিয়াছে ? - - - - - মুগান্বমোহনের বয়স বেশী হয় নাই, কিন্তু ইহারই ভিতর তিনি অনেকখানি যেন বুড়া হইয়া পড়িয়াছেন। পাশের গ্রামের জমিদারী সেরেস্তায় তিনি কাজ করেন, ইহা তাহার পৈত্রিক ব্যবসা, তাহার বাবাও এই কাজই করিতেন । কিন্তু ঐ যে যাইতে-অসিতে ক্রোশ দুই-আড়াই ইটিতে