পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कीर्डिन्क মাটির বাস। - ---- ~ &S কাচা একটু গলা ভিজাইবার দুধ পায়, নচেৎ কিনিয়া দিতে হইলে আর বাপের সাধ্যে কুলাইত না । গন্ধ দুহিয়া দিয়া যায় বুড়ী তারণের মা, গোয়ালিনী, তাহাকে কিছু ধান পারিশ্রমিক স্বরূপ ধরিয়া দিতে হয়। ঘেদিন সে অসিতে না পারে সেদিন ভীমসেনাকৃতি ভারণ ঘোষই আসিয়া কাজ উদ্ধার করিয়া দিয়া যায়। বাহির হইতে বুড়ীর ভাঙা গলায় চীৎকার শোনা গেল, *ওগো কে বাছুর ধরবেক, এস গো ।” গুলু মুড়ির ধামি রাখিয়া উঠিয়া দৌড়িয়া চলিল। বাছুর ধরাট। তাহারই নিত্যকৰ্ম্ম, বুলি যাইতে চায় না, টেপী, ক্ষেপী এখনও গরুর ফোসফোসানিতে ভয় পায়। যাইবার সময় ভাইবোনদের শাসাইয়া গেল, “কেউ আমার ধামি থেকে এক মুঠো মুড়ি কি একটু গুড় লিয়েছিস কি, ফিরে এসে ঠ্যাং ভেঙে দুব ।” ক্ষেপী তাহাকে মুখ ভ্যাংচাইয়া বলিল, “দিবে বইকি ? ঠ্যাং মাগন, লয় ?” গুলু তখন বাহিরে চলিয়া গিয়াছে, কাজেই ঝগড়াটা তেমন জমিল না । প্রিয়বালা কড়াইয়ের ডাল চড়াইয়া বাহিরে আসিয়া বলিলেন, “ঘোষা’ন-বুড়ী বড় দেরি করে দিলেক গ৷ ” গুলুর মুড়ির উপর মাছি বসিতেছে দেখিয়া তিনি একখানা তালপাখা দিয়া ধামাটা চাপা দিয়া দিলেন । ঘরের ভিতর হইতে আবার সিধু গলা ছাড়িয়া কাদিয়া উঠিল। তাহাকে দিনের বেলায় সামলানোর কাজটা বুলুর, কাজেই সে অত্যন্ত বিরক্ত মুখে মুড়ি রাখিয়া দিয়া ছোট ভাইকে দেখিতে চলিল। সিধু ভিজা কাথায় শুইয়া আকাশ ফাটাইয়া চীৎকার করিতেছে। এক হাতে হ্যাচক টান দিয়া তাহাকে কোলে তুলিয়া লইয়া আর-এক হাতে কাথাখান বাহিরের দাওয়ায় ফেলিয়া দিয়া, বুলি দুম দুম করিয়া পা ফেলিয়া আবার ফিরিয়া আসিল। মায়ের দিকে সিধুকে অগ্রসর করিয়া ধরিয়া বলিল, “ধর গো, তোমার ছা, মুড়ি কাট থেয়ে লি।” ম। ছেলেকে কোলে গুজিয়া বালতির দুধ মাপিতে বসিয়া গেলেন। কোনদিন বেশী হয়, কোনদিন কম হয়। বেশী থাকিলে একটু দই, ক্ষীর করা যায়, কম হইলে ছেলেমেয়েদের থাইতে দিতেই কুলায় না। - নাতির স্বন্ধে জুড়িয়া বসিবার উপক্রম মস্ত একটা কড়ায় করিয়া দুধ উনানের উপর বসাইয়া দেওয়া হইল। নিধু বিধু সিধু, তিনজন আসল দুগ্ধপোয্যের দলে, ক্ষেপী, টেপীও কিছু কিছু ভাগ পায়। তাহার পর গুলু, সে একে বেটাছেলে, তাহার উপর বুলুন্ন চেয়ে বয়সেও ছোট বটে, কাজেই বুলির ভাগ্যে দুধটা বড় জোটে না। যেদিন দই বা ক্ষীর হয়, সেদিন অবশু সে ভাগ পায় । ছেলেমেয়েদের মুড়ি খাওয়া চুকিয়া গেল। বিধু মুড়ি বড়-একটা খাইতে পারে না, ধামায় করিয়া লইয়া চারিদিকে ছড়াইয় বেড়ায়। সে যথাকর্তব্য সমাপন করিয়া এখন দুধের জন্য কাদিতে বসিল । মুগাস্কমোহন বাহির হইতে এই সময় ঘুরিয়া আসিলেন। ছেলের চেচানিতে বিরক্ত হইয় বলিলেন, “赤,访,访儿 লেগেই আছে। ঘরে কাক চিল বসবার জো নাই।” প্রিয়বালা রান্নাঘরের ভিতর হইতে গর্জন করিয়া বলিলেন, “ই আঁটকুড়ার ঘর লয়।” অর্থাৎ ছেলেপিলে থাকিলে তাহারা অবশুই চীৎকার করিবে, ইহু তাহাদের বিধিদত্ত অধিকার । মৃগাঙ্ক আর কথা না বাড়াইয়া ঘরের ভিতর চলিয়া গেলেন। গামছাখানা হাতে করিয়া বাহিরে আসিয়া ডাকিলেন, “বুলু, গরম জল কই গো ?” বুলু একটা কেরাসিনের টিনে আধ টিন গরম জল সংগ্ৰহ করিয়া আনিল। জল অবশু প্রিয়বালাই গরম করিয়া দিয়াছেন। বকবিকি রোজই করেন, তবে জলটাও ८ब्लांछ३ তিনি গরম করেন। তাহার আর যে দোষই থাক, অলস তিনি নন। আর হাপানি বাধাইয়া মুগাস্কমোহন শয্যা লইলে ভূগিবেন ত তিনিই, আর কেহ ভূগিতে আসিবে না | পল্লীগ্রামে সকলেই শীত গ্রীষ্মে নিৰ্ব্বিচারে পুকুরে স্নান করে। নিতান্ত রোগী ভিন্ন ঘরে স্নান কেহই করে না। কিন্তু ইহারই মধ্যে মৃগাঙ্কমোহনকে রোগীর দলে ভৰ্ত্তি হইতে হইয়াছে। তাহার দিদিমার হাপানি ছিল বলিয়া শোনা যায়, এখন সেই রোগটি উড়িয়া আসিয়া করিতেছে। অল্লেতেই তাহার সদি লাগে, সন্দি লাগিলেই কাশি,