পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

షారీ কানাই ব’লে উঠল—দেখতে হবে বইকি মা । হারামজাদার কাণ্ডজ্ঞান মোটে নেই, ওকে দেখবার জন্তই একজন পাহারাদার দরকার। সর্দার-ভাই, ধান-টান থাকু গে, তুমি এই দুলি-মাটিকে দিয়ে দাও। ধান দিলে লাভ হবে না কিছু—হারামজাদ গরু দিয়ে খাইয়ে দেবে— লণ্ঠন নিয়ে ওরা একটু এগিয়ে পড়েছে। দুলি আর প্রবাসী ১৩৪৪ | কথন ? নন্দ সদস্তে বলল— ওরে দুলি, গম্বুল গম্বুল করতিস যে বড়–এবার যদি তোকে কেউ ডাকে গম্বুল-বউ ? দুলি মুখ ঘুরিয়ে বলল–গয়লার ব্যবসা রাখতে দেব বুঝি ! রাঙীকে দিয়ে আসছে-বছর আউশের চাষ হবে। ঘন কালে আউশধান। কোমর সমান উচু হয়েছে, রাতের বাতাসে দুলছে, ফিসফিস করছে। আ'লপথে চলেছে দুলি আর নন্দ । ধান তাদের গায়ের উপর গড়িয়ে গড়িয়ে নন্দ পিছিয়ে গেছে। অত ঝগড়া করবে, তা পা চলবে পড়ছে । উৎসবান্তে ক্রীযতীন্দ্রমোহন বাগচী অধীর উৎসব-রাত্রি এল—গেল চলে’ ; প্রজ্জলিত দীপালোক দণ্ড দুই জলে লভিল নিৰ্ব্বাণ তার ; নক্ষত্র-আলোকে ধরণীর স্নিগ্ধ দৃষ্টি ফিরে’ এল চোখে । স্তন্ধ গীত, বন্ধ বাদ্য ; ক্লান্ত কর্ণপুটে উত্তেজিত স্নায়ুঞ্জাল ধীরে ভরে উঠে মৌনতার মধুরসে ; পুপগন্ধাতুর নাসায় পশিল আসি প্রসন্ন মধুর বিমুক্ত দক্ষিণ বায়ু বন্ধুর মতন, লয়ে তার পরিচিত প্রিয় পরশন । জুড়াল জরের দাহ যেন সৰ্ব্বদেহে প্রকৃতির মন্ত্র-পড়া স্নিগ্ধ অবলেহে । ক্লাস্ত মন যন্ত্রণায় শান্তি পেল ধীরে, ঝঞ্জাহত পক্ষী যেন সত্ত্বনার নীড়ে । প্রশাস্ত ইন্দ্রিয়গ্রাম ;–অশাস্ত তুফান স্নিগ্ধ সহজিয়া-মন্ত্ৰে যেন অবসান ! তৃপ্ত প্রাণ জেগে উঠে যেন আশেপাশে নেহারে আত্মীয়জনে স্বস্থ নিজবাসে,— শাস্তিভরা দৃষ্টি যার—সুস্মিত আনন প্রসন্ন কুশল-প্রশ্নে করে সম্ভাষণ। স্বম্বর যেমনই হোক, নিঃস্বরের স্বর শ্রবণের পাত্রে সে যে শাশ্বত মধুর সঞ্জীবনী-রসধারা। কুমুমের বাস - যতই সুমিষ্ট হোক, সহজ নিঃশ্বাস - রুদ্ধ করে দণ্ড দুয়ে। রুদ্র দীপালোক । বঞ্চিয়া সহজ দৃষ্টি অন্ধ করে চোখ । চঞ্চল উৎসব-রাত্রি শুধু এই বলে’ যেমন সে এসেছিল, ফিরে’ গেল চলে।