পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

--~~ ------- তদ্ধেতু এস্থলে প্রাচীন জাপানের রমণীগণের অবস্থার সহিত বর্তমানকালের স্ত্রী-শিক্ষার উৎপত্তি ও উন্নতির কথা এবং ভবিষ্যতে তাহদের শিক্ষার গতি কোনভাবে নিয়ন্ত্রিত হইতে পারে তাহার আলোচনা করিতেছি। পুরাকালে বিশেষতঃ বৌদ্ধ এবং কনফিউসীয়-ধৰ্ম্ম জাপানে প্রচলিত হওয়ার পূৰ্ব্বে রমণীগণের দ্বারা জাপানে নানা অলৌকিক কাৰ্য্য সাধিত হইয়াছে। সে সময় স্ত্রীপুরুষের অবস্থা সমাজে একই প্রকার ছিল। পুরুষই যে সৰ্ব্বেসৰ্ব্ব এবং রমণী কিছুই নহে-নগণ্য, এ বৰ্ব্বরোচিত ধারণ তখনো জাপানে প্রচলিত হয় নাই। রাজনৈতিকক্ষেত্রেও রমণীরা ক্ষমতাশালিনী হইয়া উঠিয়াছিলেন এবং ইতিহাস পাঠে অবগত হওয়া যায়, পুরাকালে নয়জন রমণী জাপ-সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। রমণীরা সাধারণতঃ পুরুষ অপেক্ষা শারীরিক, মানসিক বা নৈতিক কোন অংশেই নিকৃষ্ট ছিল না। সমর-ক্ষেত্রে অদ্ভূত বীরত্ব দেখাইয়া তাহাৰ গৌরবান্বিত ও প্রখ্যাত এবং অত্যুৎকৃষ্ট গ্রন্থরাজি রচনাম্বারা সাহিত্যজগতেও যশস্বিনী হইয়াছিল। কিন্তু তাহদের নৈতিক-চরিত্র সৰ্ব্বথা কলঙ্ক-শূন্ত ছিল না এবং তজ্জন্ত সাৰ্ব্বজনীন প্রশংসা বা সম্মান প্রাপ্ত হইত না। পক্ষান্তরে তাহদের স্বাভাবিক-বৃত্তি বা মেজাজ আনন্দময় ও মনোজ্ঞ ছিল এবং তদ্বারা পুরুষশ্রেণীকে সন্মোহিত করিতে সক্ষম হইত। সে কালের রমণীসমাজের এই ক্ষমতা, গুণপনা ও চরিত্রের বিষয় জানিতে পারিলে স্বভাবতই মনে উদিত হয় যে, পুরুষশ্রেণীর অনুরূপ প্রাচীন রমণীশ্রেণীও সুশিক্ষিত হইয়াছিল,—যদিও সে সময় স্ত্রীশিক্ষার উপযোগী কোনো বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত ছিল না। • ইহাই জাপানের রমণীত্বের বসন্তকাল,—যখন উহ অবাধে ও অক্লেশে প্রস্ফুটিত হইয় প্রাচীন জাপ সমাজের উপর অপ্রতিহত ও কার্যকরী শক্তির পরিচালন করিয়াছে। তার পর বৌদ্ধ ও কনফিউসীয় ধৰ্ম্মের প্রচলনে রমণীর অবস্থার প্রভূত পরিবর্তন আরম্ভ হয়। তবে ইহাও সত্য যে রমণীগণের প্রভাবেই জাপদেশে ঐ দুই ধৰ্ম্ম ক্ষিপ্রগতিতে বিস্তৃত হইয় পড়ে। জাপানে বৌদ্ধধর্মের আদিম প্রচারকই,-জাপু-রমণী, এবং এই ধৰ্ম্মের মূলতত্ত্বানুসন্ধানের ভার তিন জন রমণীর প্রতিই অৰ্পিত হয়। তদনুসারে জেনসিন্নি, ○>& - প্রবাসী। [ ৮ম ভাগ। জেনজোনি এবং কেইজেন্নি নাম্নী তিন জন বিদূষী ভারতবরে আগমন করেন। কেবল ধৰ্ম্মক্ষেত্রে নহে, বৌদ্ধ এবং কনফিউসীয় ধর্মের প্রবর্তন হইলেও—বহুদিন পর্যন্ত রাজনৈতিক এবং সাহিত্যক্ষেত্রেও রমণীপ্রাধান্ত অকৃঃ ছিল। এই সময়ের রমণীদের লেখনীপ্রস্থত বহুতর প্রাচীন জাপানী-সাহিত্য-গ্রন্থ সঞ্জাত হইয়াছে। পূৰ্ব্বোক্ত নান্ত ধৰ্ম্মমতদ্বয়ের আবির্ভাবের বহু বৎসর পর পর্যান্তও যেমন T রমণীগণের সর্বতোমুখ প্রভাব জাপ-সমাজে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, তেমনি পক্ষান্তরে ঐ দুই ধৰ্ম্মমতের অণুপ্রাণনাতেই রমণীগণের অবস্থা ক্রমশ অবনমিত হইতে আরম্ভ হইয়াছিল । পূৰ্ব্বোক্ত অবস্থা ফিউডেল (Feudal)বা সামন্ত তন্ত্রের সময় প্রত্যক্ষ প্রতীয়মান হইতে থাকে। তৎকালীন সামাজিক কুরীতি এবং বৌদ্ধ ও কনফিউসীয় ধৰ্ম্মমত একত্রে অঙ্গাঙ্গিভাবে রমণীগণের স্বাধীনতা হাসের সহায়তা করিতে লাগিল। টোকুগাওয়া শাসনকালেও এইরূপ অবস্থাই চলিতে থাকে। এই সময় আবার সমাজে শ্রেণীবিভাগের কঠোরতা আরব্ধ হয় ;–রমণী-সমাজ সম্পূর্ণরূপে গৃহকোণ বন্দী হয় এবং গৃহের বাহিরে তাহাদের কোন প্রভাবই ফুটিবার অবসর পায় না। স্ত্রী-শিক্ষা বলিয়া যদি কিছু সে সময়ের থাকে,—তবে তাহা কেবল রমণীদের অবস্থা কৰ্ত্তব্য বিষয়ে উপদেশ। যথা,-সেলাই, বয়ন, রন্ধন, । চা ও ফুল সরবরাহের কৌশল এবং লেখাপড়া বিষয়ে কিঞ্চিং প্রাথমিক পাঠ শিক্ষা-ইহাই সে কালের স্ত্রী শিক্ষা নামে । পরিচিত ছিল। তাহদের মানসিক উন্নতিকল্পে কোন চেষ্টাই হইত না এবং নৈতিক-শিক্ষা বিষয়ে সেই প্রাচীন তিনটী স্বত্র আবৃত্তি করা হইত,—বাল্যকালে পিতামাতার অধীনে থাকিবে, বিবাহ-অন্তে স্বামীর অধীন এবং বিধবা বস্থায় পুত্রের অধীন থাকিবে। এই মন্ত্রই প্রত্যহ রমণীদের কর্ণকুহরে প্রবেশ লাভ করিত। এবপ্রকারে রমণী জাতি এমনি শোচনীয় দশায় নীত হয়, যে তাহা হইতে উদ্ধারের আর কোনই উপায় পরিলক্ষিত হয় নাই। জাপানী । রমণীত্বের ইহাই শীতকাল,-যখন তাহ কষ্টপ্রদ সামাজি । কুরীতিরূপ তুষারাচ্ছন্ন ভূমি-চাপে বিশুদ্ধপ্রায় হইয় উঠে। তারপর পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রবর্তনে রমণীত্বের পুন: -: さ 2. i