পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ যুবক ও যুবতীদের মধ্যে অবিবাহিতের সংখ্যা যথাসম্ভব কমাইতে হইবে । বিবাহ বাড়াইবার নিমিত্ত বেকারের সংখ্যা ষথাসম্ভব কমাইতে হইবে এবং অসবর্ণ বিবাহের বাধা দূর করিতে হইবে। শুধু ন্যায় ও ধমের দিকে লক্ষ্য রাখিলেই বুঝা যায় যে, অস্পৃশ্বতা দূরীভূত হওয়া উচিত, এবং উচ্চ জাতি ও নীচ জাতি এইরূপ ভেদ রহিত হওয়া উচিত। তদ্ভিন্ন ইহা কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তিরই বুঝিতে বিলম্ব হইবে না যে, হিন্দুসমাজে কতকগুলি জাতির লোকের সামাজিক যথেষ্ট মর্যাদা না থাকায় ও লাঞ্ছনা হওয়ায় তাহাদের অনেকে অন্য ধম অবলম্বন করিয়াছে এবং এখনও করিতেছে । এই ধমস্তিরগ্রহণ এবং তাতার দ্বারা হিন্দুর হ্রাস নিবারণ করিতে হইলে হিন্দু-সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক সাম্য স্থাপন করা দরকার । দিল্লীতে হরিজনদিগের প্রার্থনীভবন ভারতবর্ষের নান স্থানে এবং ব্রহ্মদেশে হিন্দুর পূজা অর্চনা প্রভৃতির জন্য যে-সকল মন্দির নিমাণ করেন, সাধারণত তাহার নাম শিবালয়, কালীবাড়ী, দুর্গাবাড়ী, চণ্ডীমণ্ডপ ইত্যাদি রাখা হয় । ইহা লক্ষ্য করিবার বিষয় ষে, সম্প্রতি মহাত্মা গান্ধী দিল্লীতে হরিঞ্জনদিগের জন্য যে ভগবদারাধনার গৃহের দ্বার মোচন করিয়াছেন, তাহার এরূপ কোন নাম রাখা হয় নাই । প্রার্থনাভবন বা প্রার্থনামন্দির বলিয়া সংবাদপত্রে তাহার উল্লেখ করা হইয়াছে। বোধ হয় তাহার মধ্যে কোন বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত করা হয় নাই । হক্‌ সাহেবের কাছে হিন্দুদের অভিযোগ পেশ হক্‌ মন্ত্রিমণ্ডল ক্ষমতা পাইবার পর বাংলা দেশে এরূপ আইন হইয়াছে যদ্বারা হিন্দুদের ন্যাষ্য প্রভাব নষ্ট হইতেছে এবং তাহাদিগের আর্থিক ক্ষতি হইতেছে । প্রাথমিক শিক্ষণ হইতে আরম্ভ করিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পৰ্য্যম্ভ শিক্ষার সকল স্তরে হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধা বাড়িতেছে, তাহাদের অস্থবিধা দূরীকরণের নিমিত্ত তাহাদেরই অভিভাবকদিগের প্রদত্ত ট্যাক্স হইতে টাকা বিবিধ প্রসঙ্গ—হক সাহেবের কাছে হিন্দুদের অভিযোগ 8°6. দিতে কৃপণতা করা হইতেছে, অথচ মুসলমানদের জন্য টাকার অপব্যয় হইতেছে। প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে হিন্দু ছাত্রদিগকে মুসলমানী কেতাব পড়িতে বাধ্য করা হইতেছে, যোগ্য হিন্দু লেখকদিগের লিখিত উৎকৃষ্ট পাঠ্যপুস্তক থাকাতেও মুসলমান লেখকদের লেখা অপকৃষ্ট পুস্তক নির্বাচিত হইতেছে। নির্বাচিত পুস্তকের শতকরা ৬০খান এইরূপ। সরকারী চাকরির সকল বিভাগে যোগ্য হিন্দুর দাবী অগ্রাহ করা হইতেছে। সাধারণ ভাবে এইরূপ অবিচারের কথা দীর্ঘকাল ধরিয়া খবরের কাগজে প্রকাশিত হইতেছে । হিন্দুর মন্দির কলুষিত করা, দেবদেবীর মূৰ্ত্তি ভাঙ্গ, প্রতিমা বিসর্জনে বাধা দেওয়া, ধমানুষ্ঠান সংক্রাস্ত ও বিবাহ অকুষ্ঠান সম্বন্ধীয় শোভাযাত্রায় বাধা দেওয়া, শবদাহে বাধা দেওয়া, ইত্যাদি ঘটনার কথা বহুবার খবরের কাগজে বাহির হইয়াছে । নারীর উপর অত্যাচার এবং তদ্বিষয়ে পুলিসের অসন্তোষজনক ব্যবহার ইত্যাদি নানাবিষয়ক অভিযোগও কত যে প্রকাশিত হইয়াছে তাতা বলা যায় না । তাহা সত্ত্বেও বাংলার প্রধান মন্ত্রী হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বা তাহাদের প্রতি অবিচারের একটি মাত্র দৃষ্টাস্ত দিতে হিন্দুদিগকে ‘চ্যালেঞ্জ করেন এবং তদন্ত করিবার ও তদন্তে প্রমাণিত হইলে তা হার প্রতিকার করিবার প্রতিশ্রুতি দেন। অবিলম্বে অনেক কাগজে অনেক দৃষ্টাস্তের পুনরুল্লেখ হইয়াছে এবং শ্রযুক্ত বিজয়চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও শ্ৰীযুক্ত খামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় একটি দীর্ঘ বিবৃতি দিয়াছেন। বিবৃতির শেষভাগে নোয়াখালী জেলার হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বিস্তৃত বর্ণনা আছে। তাহার সমুদয় দফা আমরা আগেই জানিতাম এবং সে বিষয়ে প্রবাসীতে ও মডার্ণ রিভিয়ুতে আগেই লিখিয়াছি । নেতৃদ্বয় সর্বশেষে বলিতেছেন : প্রধান মন্ত্রীর অমুরোধে আমরা এই বিবৃতি দিলাম । আমাদের এই তালিকা সম্পূর্ণ নহে নমুনা মাত্র । ইহা দ্বারা তদন্তের আবশ্বকতা মুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হইয়াছে। প্রথমে নোয়াখালির অবস্থা সম্পর্কে তদন্তু আরম্ভ করা হউক। এই সঙ্গে আমরা বলিতে চাই যে, কোন সরকারী কৰ্ম্মচারী যত উচ্চ পদস্থই হউক না কেন, তদন্তের জন্য র্তাহার নিয়োগে হিন্দু সমাজ সম্মত হইবে না। প্রধান মন্ত্রী কিংবা স্বয়াষ্ট্রসচিব অথবা তাহারা উভয়ে যত দূর সম্ভৰ অবিলম্বে আমাদের কাহারও কাহারও সহিত