পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8९¢ খাইবার পাসের সন্নিকটে দুর্গমালা প্রাচীন মোঘল বাগানের মধ্যে আধুনিক হোটেল, ফুলের প্রাচুর্য্যে লালিত চিরবাসন্তী পাহাড়তলী । রওনা হয়েছি শীনগরে, ক্রমাগতই চলেছি, মনে হ’ল দীর্ঘ যাত্রার পর সশরীরে স্বৰ্গলা ভ। বেহেস্তের মৃধা রিলেটিভিটি মানে ; তীব্র তৃষা, ধুলো এবং মরুপথের অবসানে সিরাজের জল ঝরণা, উঠলো গাছের ঠাণ্ডা হাওয়া লেগেছিল অপার্থিব । এখানেও তাই । নিমলায় মোটরের টায়ার ফাটল, মেরামতের কাজটা সৌখীন নয়, তবু শ্যামলিম প্রহরটিতে শ্রাস্তি পৌছয় নি। কাবুল-পেশোয়ারের মুসাফির এইখানে রাত্রিবাস ক’রে পথে নামেন ; আমাদের উপায় ছিল না । শরীরের বেদন এবং দুরন্ত শব্দের সঙ্গতে যাত্রীর অবচেতনলোক উঠে আসে-যেমন ঝোড়ো এরোপ্লেনে-চৈতন্তে প্রলেপ বুলিয়ে অভাব্য রঙ জলে । তার মধ্যে ভাবনা ৪ ভাবনার উপাদান, অথচ সামনের টুকরো ছবি চোখ দিয়ে মেশে। কাবুল পর্যাপ্ত এই মিশ্রণে মনে ভেসেছি, খণ্ডালাপ চালিয়েছি, স্বষ্টিজোড়া পাহাড়ের ডগায় প্রশ্ন জেগেছে । তার উপরে খণ্ড চাদের আভা, হিন্দুকুশের আবির্ভাব, নি:শব দুর্গম গায়ের ধোয় । অস্পষ্ট গহবরে মোটর উণ্টোবার শঙ্ক: । ছায়াসচল উট, শৈলচারীর আনাগোনা, দশ হাজার ফুট পাহাড়ে উঠতে এঞ্জিনের আৰ্ত্তনাদ, তুষারের স্পর্শ। কোহ-ই-বাবা পৰ্ব্বতশৃঙ্গগুলি ভোরের দিগন্তে জাগছে, ঘুমস্ত আলো-জালা কাবুল শহর দূর পাদদেশে , কাবুল নদীর উপত্যকায় গাড়ি নামল । ধীরে ধীরে চললাম গাছ-ঘেরা রাস্তায় ; শুন্ধের সেপাইসান্ধীর ছাড়প এ নিয়ে গাড়ি ঢুকল লাহোরী দরজায়। উৎসবের বিদ্যুংমাল! তোরণে, রাজপথে শোভিত, সকাল আলোয় চুম্কি-বসানো। নিস্তব্ধ শহর । আধুনিক অঞ্চলে ফরাসী ছাদের দোকান, রেস্তর, বাজারের দু একট। চায়ের আড্ডায় সামোভার ঘিরে অস্পষ্ট ভিড় । শহর-ই-নো-এর দিকে চললাম ; এই দিকটা সম্প্রতি গড়ে উঠছে নূতন সম্রাটু জাহির শা-র কালে ।