পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७२ প্রবাসী Sego. বিমল হাসিয়া বলিল—ভালই হবে। কত দূর তোর বাড়ী এখান থেকে-- —ওপারে,—যাস এক দিন—কালই আয় না। ফেরিঘাটে পেরিয়ে মথুরবাবুর বাড়ী কোন দিকে বললেই দেখিয়ে দেবে সবাই। কোন সময় আস্বি ? —কাল বিকেলের দিকে চেষ্টা করব । চল এখন ওঠা যাক। তুই সকালে হাসপাতালে আসিস না ? —আচ্ছা । সেদিন রাত্রে বিমল মণিমালাকে দীর্ঘ একটি পত্র লিখিল । মনের আবেগে ভবিষ্যৎ জীবনের মনোরম একটি চিত্র আকিয়া দিল । হাসপাতালের বর্ণনা, তাহার প্রথম রোগী সেই বুড়ীটার বর্ণনা, পরেশ-দার অতিথিপরায়ণতা, অমর ও অমরের স্ত্রীর কথা, নন্দী মহাশয়, জগদীশ বাবু, বদিবাবু, গুপি কম্পাউণ্ডার, হাসপাতালের অ্যাপ্রেটিস ড্রেসার দুলু, ভৈরব চাকর, শিবু ঠাকুর, জানকী মেথর, এমন কি রুকমি মেথরাণীর কথা পৰ্য্যন্ত সবিস্তারে বর্ণনা করিয়া অবশেযে বিমল লিখিল—আমার জীবনের পথে তুমিই সঙ্গিনী, তুমি না এলে কিছুই ভাল লাগছে না ! পরেশ-দা আসিয়া বলিলেন—আর এক তা কাগজ দেব ? উঃ একটা ফুলস্ক্যাপ কাগজের চার পিঠ ভরিয়ে ফেললে যে হে তুমি! বিমল হাসিয়া বলিল—ক্যাশ মিলল আপনার ? —মিলেছে, যোগে ভুল হচ্ছিল । —চলুন আমার হয়ে গেছে ! উভয়ে গিয়া থাইতে বসিল । পিওন হরেনই রাধিয়াছে অাজ । 8 তাহার পরদিন সকাল হইতে-না-হইতেই বিমল হাসপাতালে গিয়া হাজির হইল। সাড়ে ছয়টা বাজিয়াছে, সাতটা হইতে হাসপাতালের কাজকৰ্ম্ম আরম্ভ হওয়ার কথা । বিমল গিয়া দেখিল কেহ কোথাও নাই, কেবল জানকী ঘর ঝাড় দিতেছে। বিমল প্রথমেই গিয়া বুড়ীটাকে দেখিল, বুড়ী ভাল আছে। তাহার পর কালাজর রোগীটাকে সে ভাল করিয়া পরীক্ষণ করিল। পরীক্ষা করিয়া বুঝিল, ইহার রক্ত, মলমূত্র সমস্তই পরীক্ষা করা দরকার, তাহার তো নিজেরই মাইক্রসকোপ আছে, সহজেই করিতে পারিবে । জানকীকে ইহার মলমূত্র রাখিতে আদেশ করিল। —তোমার কষ্ট কি হয় ? —আমার পেটটা বড় ব্যথা করে বাবু, পিলেট কামড়ায় বডড । —সেই জন্তে বুঝি সন্ধ্যের সময় চেচাচ্ছিলে সেদিন। —না, চেচাই না তো কোন দিন আমি, জানকীকে জিজ্ঞেস করুন আপনি । পিলেট বড় কামড়ায় থেকে থেকে, তাই একটু উ আঁ করি। —আচ্ছা, সব ব্যবস্থা ক’রে দিচ্ছি তোমার, ভাল হয়ে যাবে । —আমার পেটের ব্যথার একটুকুন ভাল ওষুধ দিন বাবু ==আচ্ছা । দ্বারপ্রান্তে দুলু—এ্যাপ্রেন্টিস ড্রেসার—আসিয়া দর্শন দিল এবং বিমলকে দেখিয়া নমস্কার করিয়া নিকটে আসিয়া দাড়াইল । দুলু আঠার-উনিশ বছরের ছোকরা, শু্যামবর্ণ, চোখে মুখে বেশ একটা বিনীত অথচ সপ্রতিভ ভাব। প্রথম দিন দেখিয়াই বিমলের ইহাকে ভাল লাগিয়াছিল। বিমল প্রশ্ন করিল—কম্পাউণ্ডার বাবু কোথা ? —গঙ্গা নাইতে গেছেন । —তাকে খবর পাঠাও, সাতটা তো বাজে ! ঠিক সময় কাজ আরম্ভ করতে হবে ! দুলু বলিল—আচ্ছ । সে বাহিরে চলিয়া গেল এবং সম্ভবত: কম্পাউণ্ডার বাবুর বাসাতেই গেল । বিমল হাসপাতালটা আর একবার ভাল করিয়া ঘুরিয়া ঘুরিয়া দেখিতে লাগিল । ছোটখাট হাসপাতালটি বেশ সুন্দর । সাতটার সময় কাজ আরম্ভ হইল না। গুপিবাৰু ঠিক