পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] “তুমি যখন আদেশ করছ মা, তখন তাই হবে । এ তবে রহস্য नग्न ?” “না চন্দ্র। যৌবনে ক্ষণিক উত্তেজনার বশবৰ্ত্তী হয়ে মহারাজ জয়স্বামিনীর কাছে সত্যবদ্ধ হয়ে যে অঙ্গীকার-পত্র লিখে দিয়েছিলেন, সে কথা তার একেবারে মনে ছিল না। কাল মন্ত্রণাগারে মহানায়কেরা যখন তোমাকে যৌবরাজ্যে অভিষেক করবার প্রস্তাব করছিলেন, তখন জয়শ্বামিনী সেই অঙ্গীকার-পত্ৰ দেখিয়ে মহারাজকে সত্যাচুরোধে বাধ্য করে রামগুপ্তকে যুবরাজ নিৰ্ব্বাচন করতে স্বীকার করিয়েছে । শোন চন্দ্র, স্বামীর মনের অবস্থা বুঝে, তার মনের ভাব অনুভব করে, মনের বলে অশ্রুর উৎস শুষ্ক করে হাসিমুখে সম্রাটের আদেশ শিরোধাৰ্য্য করে নিয়েছি । তুষ্ট মামাব পুত্র, আমি জানি তোর মনের বল অপরিসীম, হাসিমুখে তোর পিত্তার কাছে যা । অবনতমস্তকে তার শেব আশীৰ্ব্বাদ নিয়ে আয়, রাজ্যসম্পদ ধন মান, সমস্তই তুচ্ছ, কেবল ধৰ্ম্মই সত্য । পুত্র. পিতার কাছে যাও।” “তোমার আদেশ চিরদিন মাথা পেতে নিয়েছি মা, আজও নিলাম । আমি যাচ্ছি । পিতা আমার মুখে বিবাদের চিহ্নও দেপতে পাবেন না ।” চন্দ্র গুপ্ত প্রণাম করিয়া চলিয় গেলেন । সমস্ত শুনিয়া রামগুপ্ত স্তম্ভিত হইয়া ধীরপদে চোরের নায় পলায়ন করিল । দত্তদেবী তাহ দেখিয়াও দেখিলেন না । অজ্ঞাতসারে মুহূৰ্বের মধ্যে র্তাহার জীবনে কি ঘোরতর বিপ্লব আসির উপস্থিত হইল, তিনি সেই কথাই চিন্তা করিতেছিলেন। দীর্ঘকাল ভাবিয়া বৃদ্ধ সম্রাঙ্গী স্থির করিলেন যে, প্রথমে স্বামী, তাহার পরে সমস্ত জগৎ, এই তাহার কৰ্ত্তব্য । দত্তদেবী বিবেক-নিদিষ্ট পথই অবলম্বন করিবেন স্থির করিলেন । পুত্রের ক্ষতি হুইল, সিংহাসন তাহার হস্তচু্যত হইল, হয়ত সমুদ্রগুপ্তের সাম্রাজ্যের সর্বনাশ হইল তাহা হউক। তাহার মন তাহাকে সত্যের পথ দেখাইয়া দিল, ভবিষ্যতের উপায় ভগবান । o একজন দণ্ডধর আসিয়া বলিতে আরম্ভ করিল, “পরমেশ্বরী, পরম—- २t -* ধ্রুবা - - - - - - = --سیبهای باس------------ R3లి দত্তদেবী বিরক্ত হইয়া, বাধা দিয়া বলিলেন, “উপাধিতে প্রয়োজন নেই, কি চাও ? মহারাজ পীড়িত ৷” দওধর অবনতমস্তকে বলিল, “মহাদেবি । রধিগুপ্ত প্রভৃতি মহানায়কগণ দ্বয়ারে দাড়াইয়া আছেন।” দত্তদেবী বলিলেন, “নিয়ে এস।” বলিয়াই দত্তদেবী আবায় চিস্তাসমূদ্রে নিমগ্ন হইলেন । সমস্ত জগৎ একত্র হইয়া, মুমু বৃদ্ধের মৃত্যুকাল ঘনতমসায় আচ্ছন্ন করিয়া দিতে চায় কেন ? রাজা অপরাধ করিয়াছেন, প্রথম জীবনের অপরাধের জন্য স্বদীর্ঘ জীবনের প্রতিদিন প্রায়শ্চিত্ত করিয়াছেন, আর কেন ? অপরাধীর শাস্তি কি অনস্ত ? প্রধানেরা আসিতেছেন পদত্যাগ করিতে, মুমুধুর মৃত্যু যাতনা শতগুণ বৰ্দ্ধন করিতে, তাহারা রামগুপ্তের অধীনে রাজসেবা করিবেন না । দত্তদেবী কি করিবেন, তিনি আর কতক্ষণ ? যে-সিংহাসনে স্বামীর পাশ্বে উপবেশন করিয়াছেন, হয়ত কালই সেই সিংহাসনের পাদপীঠে তাহার ছিন্নমুণ্ড লুষ্ঠিত হইবে। সপত্নীপুত্ৰ যদি বড় অধিক দয়া করে তাহা হইলে তীর্থবাসে যাইতে পারিবেন। এই সময় দেবগুপ্ত, রবিগুপ্ত, বিশ্বরূপশৰ্ম্মা ও হরিবেন ধীরে ধীরে আসিয়া দত্তদেবীর পশ্চাতে দাড়াইলেন । মহাদেবী তখনও ভাবিতেছিলেন, প্রধানfদগকে গিয়া বলিবেন যে র্তাহার কৰ্ত্তব্য শেষ হইয়াছে, তাহার স্থান এখন বৃদ্ধ স্বামীর শয্যাপাখে । সহসা একটা নূতন স্রোত আসিয়া দত্তদেবীর চিন্তাসমূত্রে নূতন তুফান উঠাষ্টয়া দিল, তাহার মন বলিল “ন না, তোমার আর একটা মহাকৰ্ত্তব্য আছে, তোমার বুদ্ধ স্বামীর মৃত্যুশয্যায় জগতের ক্ষুদ্র কোলাহল তাহার কৰ্ণে যাইতে নিও না । শেষ মুহূৰ্ত্ত পৰ্য্যন্ত পট্টমহাদেবীর কৰ্ত্তব্য পালন করিয়া যাও।” এই সময় রবিগুপ্ত ডাকিলেন, “পরমেশ্বরী, পরম,— চমকিত হুইয়া তীব্রবেগে ফিরিয়া দাড়াইয়া দত্তদেবী বলিলেন, “অরি না, ক্ষমা কর, মহানায়ক । মহারাজের যে অস্তিমকাল উপস্থিত। যে কৰ্ণ পটুমহাদেবীর উপাধিচ্ছটা শোনবার জন্ত অধীর হয়ে থাকত, সে কর্ণ ষে বধির হয়ে আসছে, রৰিগুপ্ত ।”