বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্য। ] জামাতা বাবাজীউ ృ( R রতনমণি মনে-মনে এক নিশ্বাসে চিঠিখানি পড়িয়া ফেলিল । শ্বশুর মহাশয় লিখিয়াছেন-- শ্ৰীমান রতনমণি, নীরাপং দীর্ঘকালজিবীতেম্ব— পরম শুভাশির্বাদ বিশেষঞ্চ— বাবাজাঁউ, আগত ১৫ই ভারিখে ৮ জামাত ষষ্ঠীর দিবসে তোমাকে আনিতে পাঠাইবার লোক পাইলাম না, সেই জন্য কাহাকেও পাঠাইতে পারিলাম না এবং তৎকারণবশতঃ এই পত্র লিপি বাবা জীবন উক্ত তারিখে এখানে আসিতে কোন রকম অন্যথা করিও না । আমার রেলের চাকুরিতে কামাই করিবার ঘো নাই, নচেৎ আমি নীজে ধাইয়া তোমাকে সমবিহারে লইয়া আসিতাম । বাবা যাহা হউক, সেকারণে কিছু মনে করিও না । বাবাজী না আসিলে আমার মনস্তাপের অবধী রইবে না । বৈবাহিক মহাশয়কে ও অত্র পত্রে নিবেদন করিলাম। আলাদ। চিঠিও দিলাম। অত্রস্থ শুভ। ইতি, আ:—শ্ৰী নিকুঞ্জবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় । অত্র পত্রে বৈবাহিক মহাশয় আমার নমস্কার জানাবেন । আগত জামাই যষ্ঠতে শ্ৰীমান রতনমণি ব। বা জীবনকে অতি অবশ্য অবশ্য একবার এ-বাটী পাঠlহয়। দিতে আজ্ঞ হয়। আমি শুভবিবাহের সময় যাহা ধাই৷ অধিকার করিয়া বাবাজীকে দিতে অক্ষম হইয়াছি, এই কালিন তাহাকে এই বাট পাঠাহয় দিলেই সমস্ত চুকাইয়া দিব জানাবেন । এ-বাটীস্থ সমস্তই মঙ্গল । আপনাদের কুশল সমাচারবানে পরম মুখি কfরবেন । ইতি । 饿 ভাঙা হাতের লেখা এই নীরস চিঠিখনি পড়িয়াও রওনমণির আনন্দের অfর সীমা রহিল না । মনে হইল,পথ চলিতে-১লিতে যেন কোন্‌-একটা বন্ধ-করা চলষ্ঠ গাড়ীর ফাকে হঠাৎ কোন-এক অনিন্দ স্বন্দরীর মুখখানি একবার চুরি করিয়া দেখিয়া লইল । আপিসের বড়-সাহেব যেন খুশী হইয়া তার পিঠ চাপড়।ইয়া দিলেন । হাসিতে হাসিতে রতনমণি বলিল, আমি ত প্রিপেয়ার্ড, হ’য়েই আছি ভাই, এইবার ফাদারের মত হ’লেই হয় । তা, তুই একটি কাজ কর না ভাই খগেন, বাবার হাতে এই চিঠিখান দিগে যা ; মানে কথা হচ্ছে, আমি যেন এ লেটারূ-খানা এখনও দেখিনি, এই ভাব আর কি, বুঝলি ? পড়ে’ কি বলে, শুনে আসিস । এই বলিয়া চিঠিখানি খগেনের হাতে দিয়া রতনমণি তাহার ঘরে ঢুকিয়া আয়ন। চিরুণী লইয়া চুল আঁচড়াইতে বসিল । পাশাখেলা তখনও পুরাদমেই চলিতেছিল। খগেন ধীরে ধীরে পোষ্ট কার্ড,খানি ভবতোষের হাতে দিতেই তিনি একবার মুখ তুলিয়। বলিলেন, কে দিলে ? —লেটার বক্সে ছিল । —ও । বলিয়া তাহার বামহস্তধৃত থেলো ছ কায় একবার কটাক্ষপাত করিয়াই পায়ের নীচে চাপা দিয়া রাখিয়া পাশা গুলা তিনি কুড়াইয়া লইলেন এবং সেগুলা কিয়ৎক্ষণ হাতের মধ্যেই খটু খট্‌ করিয়া সে এক অদ্ভুক্ত কৌশলে মাছুরের উপর হাতের পাশা-তিনটা ছুড়িয়া দিয়া প্রাণপণে চীৎকার করিয়া উঠিলেন- ছ’fন্তন নয় মারো ত’ বাব। একবার ! লাগিলেন । এইবার চন্দ্ৰ কান্তর পালা । করতলের মধ্যে আবার পাশার খটখটানি মুরু হইল । দেখিভে-দেখিতে ভাহার সেই গিরগিটির মত দেহের প্রত্যেকটি শিরা-উপশিরা খিচিয়া, ভাটার মত তাহার সেই বড়-বড় চক্ষুদুইটা যথাসম্ভব বিস্তুত করিয়া, হাভের পাশা গুলা ছুড়িয়া দিয়া সে চেচাইয়া উঠিল, পড়ে যা একটা পনেরো বেশ লম্বা কবে – সত্যই পনেরো পুড়িয় গেল । আনন্দাভিশধ্যে চন্দ্রকান্ত উঠিয় দাড়াইয়। ধেই-ধেই করিয়া নাচিতে লাগিল । 'কেয়াবাং ‘কেয়া বাং’ বলিয়া আবার সকলে হো হো কবিয়া হাসিয়া উঠিল । খগেন এতক্ষণ দাড়াঙ্গয়াছিল, কিন্তু এইবার বেগতিক দেখিয়া সরিয়া পড়িল । রতনমণি আগ্রহের সহিত তাহার প্রত্যাগমন প্রতাক্ষা করিতেছিল । লড়াতাড়ি জিজ্ঞাসা করিল, কি বললে রে ? খগেন বলিল, পড়লেই না ত' আর কি বলবে ছাই ! —পড়লে না ? একবার উন্টেও দেখলে না ? —ই, দেখে’ই চেপে রাথলে । খেলায় মেতে উঠেছে, এখন কি আর পড়বার অবসর অাছে তার ?