পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ১ম সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ—স্বাধীনতা লাভের উপায় ১৩৭ aব বিদেশী জাতিকে কোন সাহায্য করিতে পারে নাই, যাহা হউক, হিন্দুধৰ্ম্ম সকল অবস্থায় অহিংসার সম্পূর্ণ কিম্ব সেরূপ সাহায্য সত্বেও তাহাদের স্বাধীনতালিঙ্গ, স্বদেশবাসীরা জয়ী হইয়াছিল। ভারতবর্ষ পরাধীন দেশ । ইহাকে কেমন করিয়া 'স্বাধীন করা যায়, এই চিন্তা অনেকের মনেই উদিত হয়। অধিকাংশ বা প্রায় সমস্ত স্বাধীনতাপ্রার্থ ভারতীয় যুদ্ধ করিয়া দেশকে স্বাধীন করিবার চিন্তা ছাড়িয়া দিয়াছেন । গত মহাযুদ্ধের সময় বিদেশ হইতে জাহাজে অস্ত্র পাঠাইয় এদেশে বিদ্রোহ ও রাষ্ট্রবিপ্লবের সহায়তা করিবার চেষ্ট৷ হইয়াছিল ; কিন্তু তাহ ব্যর্থ হইয়াছিল । তাহার পর রাজনৈতিক হত্য হুইয়াছে বটে, কিন্তু দস্তুরমত যুদ্ধ করিবার ইচ্ছা ও আশা কেহ রাখেন কি না, জানি না । এরূপ কোন দল থাকিলে, সম্ভবতঃ তাহ। ক্ষুদ্র । যুদ্ধ স্বার স্বাধীন হইবার ইচ্ছ। ছাড়িয়া দিবার কারণ দুটি । প্রথম কারণ এই, যে, বৰ্ত্তমান কালে যুদ্ধ করিতে হইলে যে-সকল বৈজ্ঞানিক অস্ত্ৰ শস্ত্র রণতরী বায়ুধান প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজন হয়, ভারতীয়দের তাহ প্রস্তুত বা সংগ্ৰহ করিবার উপায় বৰ্ত্তমানে নাই ; এবং দক্ষতার সহিত এই-সকল ব্যবহার করিবার মত শিক্ষণও ভারতীয়দের এখন নাই, তাহ লাভ করিবার উপায়ও আপাততঃ নাই । দ্বিতীয় কারণ, অহিংসা-নীতির অল্পসরণ। সাত্ত্বিক প্রকৃতির অনেক মানুষের মত এই, যে, কোম কারণেই অন্য মানুষের প্রাণ বধ করা উচিত নয়, স্বাধীনতার নিমিত্ত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইয়াও কাহারও প্রাণ বধ করা উচিত নয়। কেহ কেহ বলিয়। থাকেন, হিন্দুধৰ্ম্ম কেবল অহিংসাই শিক্ষা দেয় । আমাদের বিবেচনায় তাহা ভুল ; কারণ, সম্পূর্ণ অহিংসাবাদী হিন্দু আছেন ও থাকিতে পারেন বটে, কিন্তু এমন কোন একখানি হিন্দু শাস্ত্র বোধ হয় কেহ দেখাইতে পারিবেন না, যাহা আগাগোড়। অহিংসার সমর্থক । বিষ্ণু-উপাসকদেরই অন্য সকল হিন্দু অপেক্ষ অহিংসাবাদী হইবার কথা । কিন্তু হিন্দুমতে বিষ্ণুর অবতার শ্ৰীকৃষ্ণ ভগবদগীতায় যুদ্ধের সমর্থন কুরিয়াছেন । তিনি নিজেও যুদ্ধ করিয়াছিলেন এবং অন্যতম অবতার ঐরামচন্দ্রও যুদ্ধ করিয়াছিলেন । ֆbր সমর্থক হউন বা না হউন, ইহা নিশ্চিত, যে, ভারতবর্ষের কতক লোক যুদ্ধ করা বৰ্ত্তমান অবস্থায় অসাধ্য বা দুঃসাধ্য বলিয়া উহার বিরোধী, এবং কেহ কেহ অহিংসা-নীতির অমুসরণ করেন বলিয়া উহার বিরোধী। কতজন বাস্তবিক কোন কারণে উহার বিরোধী, তাহ স্থির করিবার উপায় নাই । যে কারণেই হউক, স্বাধীনতা-লাভের ইতিহাস-প্রথিত উপায় যুদ্ধ ভারতীয়ের অবলম্বন করিতে পারে না। অথচ স্বাধীনতার মত অমূল্য ধনের আশাও ত ছাড়া যায় না । উহ। চাইই চাই । ভারতীয় রাজনৈতিকদের মধ্যে এক দল আপনাদের. নাম দিয়াছেন উদার-নৈতিক বা লিবারেল। র্তাহার এখনও আশা করেন, যে, বকৃত করা, প্রস্তাব ধার্ঘ্য কর, খবরের কাগজে লেখা, এদেশে ও ইংলণ্ডে আবেদন নিবেদন আন্দোলন করা, ইত্যাদি উপায়ে তাহার কতকগুলি অধিকার পাইবেন । কিন্তু তাহার নিজেও বিশ্বাস করেন না, যে, এই উপায়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা পাওয়া যাইতে পারে , তাহারা সম্পূর্ণ স্বাধীনতা চান, মনের শাস্ত অবস্থায় তাহাদের কেহ এ-কথা বোধ হয় প্রকাশ করিয়া বলেনও নাই । অবশ্য, কেনিয়ায় ভারতীয়দের দাবী গ্রাহ করাইতে ন। পারিয়া শ্ৰীযুক্ত শ্ৰীনিবাস শাস্ত্রী বলিয়াছিলেন বটে, যে, ভারতীয়দিগকে তাহ হইলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বাহিরে যাইতে হইবে । কিন্তু এটা হইতেছে অভিমানের কথা । সম্পূর্ণ স্বাধীনতালাভ উদারনৈতিক দলের প্রকাশ লক্ষ্য নহে । অসহযোগীদিগের মধ্যেও এবিযয়ে দুই দল আছে । মহাত্মা গান্ধী, ভারতবর্ষ আভ্যন্তরীণ বিষয়ে আত্মকর্তৃত্ব পাইলে এবং ব্রিটিশ সাম্রাজের সর্বত্র ভারতীয়ের দ্যাধ্য অধিকার পাইলে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সহিত ভারতের সম্বন্ধ ছিন্ন করিতে চান না । তিনি যাহা চীন, তাহা না পাইলেও ভারতবর্ষকে ব্রিটিশসাম্রাজ্যভুক্ত রাখিতেই তিনি চেষ্টা করিবেন, এমন কথা ও তিনি বলেন নাই । অন্ত একদল অসহযোগী আছেন যাহারা প্রকাগু ভাবে বলিয়াছেন, যে, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা লাভই তাহদের লক্ষ্য ; যেমন পণ্ডিত জওয়াহের’ লাল নেচ রু, মৌলান। হস্রং