পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"שג צא অক্ষমতার লজ্জা ও বিরক্তিতে কৰ্ত্তার আকণ্ঠ পূর্ণ হয়ে উঠেছিল। তিনি বললেন, “হ্যা থামূবে বৈ কি ! আমার শ্বশুরবাড়ীর বড় কুটুম রেলকোম্পানী, ডাকবারই শুধু অপেক্ষ। ছোট পুটুলিটা তুলেছিলি ত রে পরী, না সেটাও দেখে শুনে ফেলে’ এসেছিস ?” পরী বললে, “এ বাবা! আমি কি সব পুটুলির হিসাব রাখি নাকি বাবু! সে পুটুলি ত ক্ষেত্তির ঠেয়ে জিন্ম করা ছিল। তাকে শুধাও না ।” ক্ষেত্তি তৎপরভাবে এগিয়ে এসে বললে, “সেই যে ইস্তক বাড়ী থেকে বেরিয়েছি, আর যে ইস্তক গাড়ী এসেছে, তার মধ্যে একটি বারও পুটলিটি ছাড়ি নাই। তার পর গাড়ীটি চাপ বার লেগে হাদুর হাতে একবারটি এক লহমার তরে পুটুলিটি দিয়েছিলাম। ইমন লবাবের গাড়ী দেখি নাই মা, দাড়িয়ে হাতটি বাডাব কি রেলটি ছেড়ে দিলেকৃ। • স্থাদু জানালাটি পেরিয়ে ভিতর দিকে পুটুলিটি ছেড়ে দিলেই নিশ্চিন্দি হতাম , তা সে মড়া দিলেক্‌ কৈ ?” অনুপস্থিত হাদু তার নামে মহিলাবৃন্দের অভিযোগের কোন উত্তরই দেবার সময় পেলে না। কর্তা বললেন, *যাক বাচিয়েছে ইছে! আমার কপাল ঝরঝরে হয়েছে ; ছোট পুট্রলিটাও গেছে, আপদ গেছে, আমার আর কোন ভাবনা রইল না।” গৃহিণী বেঞ্চির কোণায় ঠেস দিয়ে পানের ডিবা কোলে করে ঝিমাচ্ছিলেন, ছোট পুটুলির নাম উল্লেখেই অৰ্দ্ধসজাগ হয়ে উঠে বসে বললেন, “ছোট পুটলি ! ছোট পুটুলিটি নাই ! তাতে যে খোকার ভাতের ভারী রূপোর বাটিটি ছিল, রূপোর বিহুক ছিল । ওমা, সে যে বারো ভরির বাটি, সখ করে’ গড়িয়েছিলাম।” এখবরটা কৰ্ত্তার জানা ছিল না। তিনি বিস্মিত ও ক্রুদ্ধ হ’যে বললেন, “কে আনতে বলেছিল রূপোর বাটিঝিতুক বাড়ী থেকে ?” গৃহিণী নিরুপায়ভাবে বড়জায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, “বলবে আবার কে দিদি ? কুটুম-বাড়ীর কাজে নিমন্তয়ে যাচ্ছি, ভাবলাম ছেলেকে দুধ খাওয়াব, রূপোর বাটটা নিয়ে, যাই। বাক্সে তুলেছিলাম শেষকালে, তা প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড ঐটৈ খোকার মাপের বাটি তাই আবার পথের জন্তে ছোট পুটুলিতে বার করে বাধলাম।” দিদি এব্যবহারে মোটেই সায় দিলেন না। বললেন, "ভাল করনি বউ। পাচজনার ঘরে আমি কখনও রূপোর বাসন নিয়ে যাইনে। কে জানে, কণর মনে কি আছে ? কাসা পেতলই আমার ভাল।” গৃহিণী উচ্ছসিত শোক চেপে শুধু বললেন, “আমার আমন ভারী রূপোর বাটিটা ” কৰ্ত্ত বললেন, “আর নাকে র্কাদতে হবে না । এখন আর কি কি গেছে তাই দেখ।” পরী স্বতঃপ্রবৃত্ত হ’য়ে বললে, “ছোট মামীমার গয়নার বাক্সটা হাণ্ডিলু ছিড়ে পড়েছিল কি না, তাই মুটাও খুলে গেছল। আঁধারে গয়না কুড়াতে কুড়াতে গাড়ী সিটি দিয়ে দিলেক্‌ ; সেটা আসে নাই।” কর্তী কপালে করাঘাত করে বললেন, “তবে এসেছে কি সেইটে বল না এক কথায়, নবাবের বিটিরা।” পরী ও ক্ষেত্তি ধরাধরি করে দুটি বিরাট ঝুড়ি টেনে এনে দেখালে ঝুড়ি-বোঝাই লাউ-ডগ, কুম্ড়ো ও শশা উঠেছে। চিরঞ্জীব-বাবুর ভ্রাতৃজায়। খুলী হ’য়ে বললেন, “আমার ফোটনের গয়নার বাক্সও উঠেছে। আমি এই আঁচলে বেঁধে গাড়ীতে উঠেছিলাম। ভাই, আমি মানুষ ফেলে উঠলেও গয়না ফেলে’ উঠি না। মানুষের হাত-পা আছে, গয়নার ত আর তা নাই।” ভ্রাতৃজায়ার সৌভাগ্যে নিজের দুর্ভাগ্যটা চিরজীববাবুর কাছে আরও কঠোররূপে দেখা দিলে। আর কি উঠেছে তার খোজ না নিয়েই তিনি মহা আক্রোশে আস্ফালন করে বললেন, “আমি বলেছিলাম, তখনি বলেছিলাম যে ওসব ঘাড়ছাটা চুলকাটা একেলে বাবুদের বিশ্বাস নাই ; ওদের মুখেই বোল, কোন কাজ ওদের দ্বারা হবে না। মানুষ চিনে চিনে আমার হাড় পেকে গেল, ই ই আমি কি মানুষ চিনি না! নাড়ী দেখে কার কত মুরোদ বলে দিতে পারি। চুলছাটা বাবুরা এসেছিলেন আমায় বোঝাতে! গাড়ী থামিয়ে রাখবেন, মাল তুলিয়ে দেবেন। রেল-কোম্পানী ওদের কেন কালের গোলাম কি না ! ছি, ছি, ছি, মেয়ে