পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

; কিশোর বলিল—“আমি মেসে খেয়েই কলেজে যাব, বৈকালে নিশ্চয়ই আসব।” শঙ্কর বলিল—“ওষুধ নিয়ে তোর আর আসতে হবে না, আমি তোর সঙ্গে যাচ্ছি, আমিই ওষুধ নিয়ে আসব। স্বকুমার, তুমি বাড়ি থাক।” আমি বলিলাম, “দাদা, তোমার আজ কলেজে যাওয়া হবে না।” এই বলিয়া আমি কিশোর ও শঙ্করের সহিত বাহিরে আসিলাম, দাদা ও প্রমীলা মা'র কাছে রহিল। আমি সভয়ে কিশোরকে জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘ডাক্তারের কি বলে গেলেন, কিশোরবাৰু? অনেক সময়ে অপারেশন করার পরও বিপদ ঘটে। মা'র শরীর কিন্তু খুব দুৰ্ব্বল ।” কিশোর বলিল,-“সেই জন্যেই ত এই ওষুধ দিয়েছেন, এখন খুব ভালরূপে ওজাচ করা দরকার। আমি আবার চারটার সময়ই আসব, আর রাত্রে ওআচ করবে। জর বোধ হয় ক্রমে বাড়বে। নড়াচড় করতে দেবেন না, খুব সাবধান ।” এই বলিয়া কিশোর শঙ্করের সহিত বাহির হইয়া গেল । আমি আবার মা'র কাছে গিয়া বসিলাম। মা’র জর আবার বাড়িতে লাগিল। শঙ্কর ওষুধ লইয়া আসিল। আমি সেই ওষুধ তিন ঘণ্টা অন্তর খাওয়াইতে লাগিলাম। দাদা ও শঙ্কর জাহার করিয়৷ মা’র কাছে আসিয়া বসিল, প্রমীলা আর আমি খাইতে গেলাম। আমি থাইয় আসিয়া দাদাকে বলিলাম— “আমি এখন বসি, তোমরা বিশ্রাম করগে, আবার রাত জাগতে হবে।” শঙ্কর বলিল, “আপনারও ত বিশ্রামের দরকার।” আমি বললাম, “প্রমীলা আক্ষক, আমি এখানেই একটু গড়িয়ে নেবখন, ঘুম আর এখন আসবে না।” এই ভাবে দিন কাটিল । কিশোর চারিটার সময় আসিয়া মা'র নাড়ী পরীক্ষা করিয়া বলিল-“নাড়ী আরও দুর্বল দেখছি, কিন্তু টেম্পারেচার ত তেমন বাড়ে নাই।” * - জুমি স্বলিলাম, “টেম্পারেচার ত ১০১, অন্যদিন এরূপ জরে ত কথা বলতেন, আজ যেন কেমন আচ্ছন্ন ভাব দেখছি।” . কিশোর বলিল, “আমি এখনই স্বরধবাবুর কাছে ঘাচ্ছি, ় প্রবাসী ; Sපණ්ථ আমি বলিলাম, “বেশ ত ।” দাদা তখন আসিয়া বলিল, “অবস্থা কেমন দেখছেন, কিশোরবাৰু ?” কিশোর বলিল, “আমি তেমন বুঝতে পারছি না। নাড়ীর অবস্থা ভাল বোধ হচ্ছে না। আমি ডাক্তারকে এখ খুনি নিয়ে আসছি ।” *ằ এই বলিয়া কিশোর চলিয়া গেল এবং এক ঘণ্টা পরেই স্বরধবাবুকে সঙ্গে করিয়া আসিল। স্নরর্থবাৰু নাড়ী পরীক্ষা করিয়া মুখ গভীর করিলেন এবং তাড়াতাড়ি একটা প্রেস্ক্রিপগুন লিথিয় ওষুধ আনিতে পাঠাইলেন। শঙ্কর ওষুধ আনিতে ছুটিল। আমি ডাক্তারের ভাব দেখিয়া নিতান্ত ভীত হইলাম এবং দাদাকে বলিলাম-- “তুমি একবার ডাক্তারবাবুকে ভাল করে জিজ্ঞেস কর, অবস্থা কেমন।” দাদা ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করিল, ডাক্তার বাহিরে আসিলেন এবং লাইব্রেরী-ঘরে বসিলেন । কিশোর ও দাদা র্তাহার নিকটে গেল। আমি দরজার কাছে দাড়াইয়৷ র্তাহাদের কথা শুনিতে লাগিলাম। র্তাহাদের আলোচনার ভাবে বুঝিলাম, অবস্থা খুব সঙ্কটাপন্ন। আমি দাদাকে ইঙ্গিত করিয়া ডাকিয়া আনিয়া বলিলাম, "ডাক্তারবাবুকে জিজ্ঞাসা কর, তার সঙ্গে কনসান্ট (পরামর্শ) করবার জন্য আর এক জন ডাক্তার আনালে কেমন হয় ?” এই সময় কিশোরও আমার কাছে আসিল । আমার কথা শুনিয়া ডাক্তারবাবুর কাছে গেল। স্বরথবাবু বলিলেন--- “সে ভালই, ডাঃ পাকড়াশীকেই আনতে পারেন।” এই কথা শুনিয়া কিশোর তখনই ডাঃ পাকড়াশীকে আনিবার জন্য ছুটিল । আমি স্বরথবাবুকে যাইতে দিলাম না। তিনি বসিয় রছিলেন । আমি আবার মা'র কাছে গিয়া বসিলাম। আমার বড় কাল্প পাইতে লাগিল । দাদাও সেখানে আসিয় বসিল। এই সময়ে শঙ্কর ওষুধ আনিল, ডাক্তারবাবু আসিয়া আবার নাড়ী দেখিয়া সেই ওষুধ খাওয়াইয়া দিলেন। কিশোর প্রায় ৮টার সময় ডাঃ পাকড়াশীকে সঙ্গে করিমু আসিল । তিনিও রোগীর অবস্থা দেখিয়া মুখ ভার করিলেন এবং দুই ডাক্তারে পরামর্শ করিয়া আর একটা ওষুধ লিথিয় দিলেন। কিশোর সেই ওষুধ আনিতে ছুটিল, ডাঃ পাকড়াশী অপেক্ষা করিতে লাগিলেন। ওষুধ আসিলে তিনি সেই ওষুধ