¢ ९ এই যে, ঐ উপায়গুলি অধিকাংশ স্থলেই দুষ্প্রাপ্য। ইংরেজীভাষী ইংরেজের আবাল্য সাহচৰ্যলাভ বাঙালীর ছেলের পক্ষে শুধু ছন্দ্রাপ্য নয়, অপ্রাপাই ; কাজেই ইংরেজী উচ্চারণ স্বভাবনির্দিষ্ট উপায়ে আয়ত্ত করা অসম্ভব, এবং অন্ত উপায়ের অনুসন্ধান আবশুক। এ-কথা শুধু বাঙালী ছেলেমেয়ের ইংরেজী শিখিবার সম্বন্ধে নয়, যে-কোনও জাতির অন্য দেশের ভাষা শিক্ষা সম্পর্কেই খাটে। তবে এক্ষেত্রে একটু বিশেষত্ব আছে। ইংরেজের ছেলে যখন ফরাসী বা জাৰ্মাণ ভাষা শেখে তখন তাহার পক্ষে ঐ ঐ ভাষার উচ্চারণ-রীতি আয়ত্ত করা যত কঠিন, বাঙালীর ছেলের পক্ষে ইংরেজী উচ্চারণরীতি আয়ত্ত করা তদপেক্ষ অনেক বেশী কঠিন। তাহার কারণ সকল বালক-বালিকাই অতি বাল্যকাল হইতে মাতৃভাষার কতকগুলি উচ্চারণ-রীতি অর্জন করে। এইগুলি অন্য ভাষা শিখিতে গেলে জ্ঞানে বা অজ্ঞানে ঐ ভাষায় প্রযুক্ত হয়। এই জন্য মাতৃভাষার সঙ্গে উচ্চারণ-ভঙ্গীতে গোঁসাদৃশুসম্পন্ন বিদেশী ভাষা আয়ত্ত করা অপেক্ষাকৃত সহজ। বাংলা ভাষা এবং ভারতীয় যে-কোন ভাষাই ইংরেজী হইতে উচ্চারণ-রীতি ও অন্যান্য বিষয়ে এত অসদৃশ যে, বাংলা ভাষায় গঠিত-জিহা বালক-বালিকার পক্ষে এই নৃতন কৌশল সম্পূর্ণরূপে আয়ত্ত করা একরূপ অসম্ভব। তবে ভাষা যখন শিখিতে হইবে তখন সৰ্ব্বাঙ্গমুন্দর করিয়া বলিতে না পারিলেও অন্যের বোধগম্য করিয়া বলা আবশ্যক। নচেৎ ভাষা শিক্ষার প্রয়োজন ও উদ্দেশু ব্যর্থ হয়। কাজেই অন্ততঃ এমনভাবে ইংরেজী উচ্চারণ করিতে হুইবে যাহাতে ইংরেজী ভাষা-ভাষী আর পাচ জন সহজে কোনও বিষয় বুঝিতে পারে । পূর্বেই বলা হইয়াছে যে, উচ্চারণ-শিক্ষা সম্পাদ্য ব্যাপার ও এখানে অভ্যাস বোধাদপি গরীয়ান। অতএব এ বিষয়ে প্রথম কৰ্ত্তব্য হুইবে শিক্ষার প্রারম্ভেই ঠিক উচ্চারণ আমৃত্ত করিবার কোনও বিশেষ উপায় নির্ধারণ, ও সেই উচ্চারণের পুনঃ পুনঃ প্রয়োগের ব্যবস্থা করা। তাহা হইলে সঠিক উচ্চারণের অভ্যাস পাকা হইবে । ডাইরেক্ট মেথড’ নামে বিদেশীয় ভাষা শিখাইবার যে ব্যবস্থা আছে তাহাতে ভাষা-শিক্ষার যে স্বাভাবিক উপায়ের কথা এইমাত্র বলা হইয়াছে সেই শোনা ও বলার ঘাত-প্রতিঘাতের ভিতর দিয়া শিখাইবার প্রয়াস আছে কিন্তু জহা ইংরেজ শিক্ষকের অভাবে এ-দেশে SOBO ফলপ্রদ হয় নাই। কাজেই অন্তঃ পন্থা অন্বেষণ করিতে হইবে। এ-সম্বন্ধে আমি কিছু চিন্তা করিয়াছি ও যৎসামান্ত কাজও করিয়াছি। তাহার ফলে আমার বিশ্বাস যে, বাংলা হরফের সাহায্যে ইংরেজী উচ্চারণ শিখান মুকঠিন নহে। বাংলা হরফের সাহায্যে ইংরেজী উচ্চারণ শিথাইতে পারিলে তাহার ফলে অনেক স্ববিধাও হইবে। প্রথমতঃ ইংরেজী ‘ফোনিক মেথড এর বানান-বিভ্ৰাট রূপ প্রকাও অসুবিধা ইহাতে নাই। দ্বিতীয় স্ববিধ, বাংলার বর্ণধ্বনি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্থির, কাজেই লিখিয়া দিলেই বোধগম্য হইবে। আরও অনেক বিষয়ে স্ববিধ হইবে। তবে অস্তুবিধাও আছে, কিন্তু সেগুলি বোধ হয় অনতিক্রমণীয় নহে। অসুবিধার কথাই এখন বলিব । ১। প্রথম ও প্রধান অসুবিধা এই যে, ইংরেজীতে এমন কয়েকটি ধ্বনি আছে যাহা বাংলায় নাই এবং সেই সেই ধ্বনিসূচক হরফও বাংলায় নাই। সেই সকল ক্ষেত্রে কি কৰ্ত্তব্য ? ২ । দ্বিতীয়, যে-সমস্ত হরফ বাংলায় আছে ও যাহা তত্তংসদৃশ ইংরেজী হরফের অমুকল্পে ব্যবহৃত হইতে পারে, তাহাদের আকৃতিগত সমতা সত্ত্বেও ধ্বনিগত বৈষম্য বিদ্যমান রহিয়াছে। কাজেই হয় তাহদের আকারে ধ্বনি-বৈষম্যস্থচক কিছু পরিবর্তন করিতে হইবে, নয় শিক্ষক মহাশয়ের উপর এই গুরুভার অর্পণ করিতে হুইবে । ৩ । শব্দাংশগত stress ইংরেজী শব্দোচ্চারণের প্রাণস্বরূপ। এই ব্যাপার বাংলায় নাই। ইহা বুঝাইবার জন্ত কি করা যাইবে ? 8 o-so (Intonation 8 Rhythm)— ইংরেজী বলার একটি বিশেষ ভঙ্গী আছে। তাহা বাঙালীর পক্ষে আয়ত্ত করা অত্যন্ত কঠিন অথচ উচ্চারণ ভুল বলার চেয়েও এখানে ভুল অনেক সময়ে বেশী মারাত্মক হয়। তাঁহারই বা কি করা যায় ? এই সকল অন্ধবিধা ছাড়াও কাৰ্য্যক্ষেত্রে আরও দু-একটি অন্ধবিধা হয়ত হইবে। সেগুলি উপস্থিত বাদ দিয়াও উপযুক্ত চারটি অন্ধবিধার জন্ত আমি কি করিতে চাই তাহার একটু আভাস দিতেছি :– ১ । প্রথম অন্ধবিধা সম্বন্ধে আমি দেখিয়াছি কেবল
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৯৮
অবয়ব