পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উঠলেন ; কথা বলিতে হয়, তাই যেন বলিলেন—ঙ্কেও ? জগো ? জগদ্ধাত্রী চমকিয়া উঠিয় গভীর কণ্ঠে ডাকিল—পণ্ট দা ! সেইখনেই ক্ষেত্রনাথ বসি পড়িলেন। দুইজনে চুপচাপ। চল্লিশ বছর পরে মুখোমুখি বসিয়া কিসের নেশায় মন কিমাইয়া জালিতেছে।... হলুদ রঙের ফুলেভরা জনশূন্ত নিন্তন্ধ ক্ষেতের উপরে আলতারাঙা পা ফেলিয়া ঘরের লক্ষ্মীরা এঘরে ওঘরে সন্ধ্য দেপাইয়া ফিরিতে লাগিলেন। সামনের আশশুাওড় ও ভাটের জঙ্গলের উপর দেখিতে দেখিতে গড়িয়া উঠিল, দক্ষিণী কারিগরের তৈরি প্রকাগু আটচালা ঘর একখানি । ভিতরে জোড়া তক্তপোষে ফরাসের উপর ঝকঝকে সাপের মাথায় হকালন, তার উপর রূপাবধানো ছক কলিকায় তামাক পুড়িয়া যাইতেছে, ও পাড়ার বৈকুণ্ঠ চাটুজ্জে হাত বাড়াইয়াছেন, কিন্তু হকার নাগাল পান নাই। পাশার দান পড়িতেছে, চীংকারে ঘর কাপিয়া যাইতেছে, ফিরিয়া তাকাইবার ফুরসং কাহারও নাই। বৈকুণ্ঠ আসিয়াছেন, কেদারনাথ বরদাকান্ত আসিয়াছেন, আরও কে কে যেন নজর যায় না। বাড়ির মধ্যে দমদম ঢেকির পাড় পড়িতেছে, নাড়ভাজার গন্ধ-কানে পৈতা জড়ানে ফর্শ রঙ কে খড়ম খটুপট করিতে করিতে দীঘির দিক হইতে এই দিকে আসিতেছে । কে ডাকিয় উঠিল—ও জগে, ঘুমুনি-ও, দুটাে পেয়ে নিগে আগে, তারপর— চুপ, চুপ, চুপ! নিঃশ্বাসেরও যেন শব্দ না হয়, উহার কত কি কথা কহিতেছে—ভাল করিয়া শুনিতে দাও।... অনেকক্ষণ পরে ক্ষেত্রনাথ বলিয়া উঠিলেন কেন তপন অত বড় মিথ্যে কথা বললে ? হৃদয় তোমার আপনার श्ल ? ঘর সারাবার টাকার দরকার। আমায় যদি আগে গিয়ে ভাল ভাবে বলতে জগো, দু-পাচ টাকা দেবার সঙ্গতি আমার কি নেই ? --বড়বাবু! রাখাল হাতির কণ্ঠস্বর। সে বাড়ি বাইতেছিল, রাস্ত হইতে বলিয়া গেল—আমি চললাম। ক্ষেত্রনাথ একবার কাসিয়া চারিদিক তাকাইয়া বলিলেন - এখানটা ছিল পথ, তুমি পান্ধীর মধ্যে উঠে বসলে। কপালে সোনার সিথিপাটি ছিল—ন ?

  • R :-1:ઝ : }}o.

S<28O —পথ ওদিকে। এটা বাইরের উর্মেন। তুমি সমস্ত ভুলে গেছ। বলিয়া একটু থামিয়া মান হাসিয়া জগদ্ধাত্রী আবার বলিল-কতদিন পরে বাপের বাড়ি এসেছি পন্টা, চল্লিশ পঞ্চাশ বছর পরে - ক্ষেত্রনাথ তাহারই কথার প্রতিধ্বনি করিলেন - গিয়েছিলে একরত্তি মেয়ে, ফিরে এলে কি রকম--- ♥እ --তোমারও কি সে সব আছে ? চুল পেকে গেছে, সামনের র্দাত নেই— --ত হোক, তা হোক। ক্ষেত্রনাথ ব্যাকুল হইয় সমস্ত যেন চাপা দিতে চাহেন। বলিলেন – তুই আর পর্ণ দা বলে ডাকিসনে জগে, ডাক শুনে চমকে উঠিগায়ের মধ্যে কেমন করে ওঠে যেন ; মা মরার পর থেকে ও নাম ভুলে বসে আছি । আজকাল দশ গ্রামের লোকে আমায় মানে, গণে–এর মধ্যে ছেলেবয়সের ঐ ডাকনাম-ন-ন, ও বলে আর ডাকিস নে, বুঝলি ? বলিয়া উঠিয় দাড়াইলেন । হিমে সরিষা বন ভিঞ্জিয় গিয়াছে, ঝিঝি ডাকিতেছে, চাদের আলে| তীক্ষ্ণ চুরির মত গাছপালা বিদীর্ণ করিয়৷ মাটিতে আসিয়া পড়িয়াছে । নিশুতি গ্রাম ; চারিদিক কি মায়ায় থমকিয়া আছে। উঠিয়া দাড়াষ্টয়া ক্ষেত্রনাথ ডাকিলেন. চল যাই । তারপর বলিলেন আমার টাকাটার একটা কিনার করে দে জগদ্ধাত্রী, তোর বাপের ভিটে তোরই থাকুক। ঐ আশীৰ্ট টাকা দে- স্বদ ট্রদ আর চাইনে সরষে-কলাই আঁৰকাঠালে যাই হোক কিছু ঘরে ত উঠেছে। জগদ্ধাত্রী জবাব দিল না, একটুখানি হাসিল। কয়েক পা গিয়া রাস্তায় পড়িয়া বলিল তুমি আমায় শুধু চারটে টাকা দিতে পার, দাদা? দুটাক এই আসবার গরুর গাড়ী ভাড়, আর দু-টাকা ফিরে যাবার। --টাকা ? ক্ষেত্রনাথ উচ্চবাচ্য না করিয়া খানিক ক্ষণ পথ চলিতে লাগিলেন। তারপর মুখ ফিরাইয়া বলিলেন—এক কাজ কর । তোমাদের সেই দেবীদাস রায়ের দরুণ সিন্দুকটা আছে আমাদের বাড়ি । সেবারে চিঠি লিখেছিলে, তাই এনে রেখেছি। আর সিন্দুক আছেই বা বলি কি করে— আছে ক’থান তক্তা। ঐটে আমায় দিয়ে যাও, পাচ টাকা