পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ԳՆ দিতে পারা যায়। খেলার মধ্য দিয়া বস্তুসাহায্যে শিশুকে গণিতের জ্ঞান দেওয়া যায়। তাহাকে তাহার পুতুলের বস্থাদি সেলাই করিতে দিয়া সেলাই শিক্ষা দেওয়া যায়। শিক্ষক শিশুকে পুতুল খেলার মধ্য দিয়া গুহকশ্বের ধারণা দিতে পারেন। শিশুকে তাহার খেলাঘর তৈয়ারী করিতে দিয়া তাহাকে স্বাস্থ্যতত্ত্ব-বিষয়ে জ্ঞান দেওয়া আর এইরূপে নানা উপায়ে শিক্ষক শিশুর স্বাভাবিক ক্রীড়াশীলতাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষাকাৰ্য্যে প্রয়োগ করিতে পারেন । পাঠের খেলাগুলি উদ্ভাবন করিবার সময় শিক্ষকের লক্ষ্য রাখা উচিত যেন শিশুদের বাহুসারে তাহদের করুন, স্বতি, যুক্তি, বিচার প্রভৃতি বিভিন্ন মানসিক শক্তিগুলির যথেষ্ট পরিচালন ও প্রয়োগ হয়। শিশুদের মধ্যে একটি স্বাভাবিক ছন্দবোধ আছে। তাহদের মধ্যে অনুকরণ ও অভিনয়ের যথেষ্ট পূহ দেখা যায়। এই মনোবৃত্তি বা সহজাত সংস্কারগুলিও যাহাতে উপযুক্তক্ষপে বিকাশপ্রাপ্ত হয় শিক্ষক তদনুরূপ বিধান করা উচিত। এইরূপে শিশুর স্বাভাবিক মনোবৃত্তিগুলি বাধাপ্রাপ্ত না হইয়া সহজ ভাবে ফুৰ্ত্তি লাভ করিতে পারিবে ও শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশু সাধিত হইবে। শিক্ষক যেন খেলাগুলিকে শিশুর পক্ষে অতিশয় সহজ না করিয়া দেন । কোনও বিযয় অতি সহজ হইলে তাহাতে শিশুর আগ্রহ ও আনন্দ স্বতই কমিয়া যায়। কারণ কোন বাধাকে জয় করার যে স্বাভাবিক আনন্দ আছে তাহ আর সে পায় না। কোনও খেলা শিশুর পক্ষে অত্যধিক কঠিন হটলেও সে অকৃতকাৰ্য্য হইয়া শীঘ্রই ক্লাস্ত ও বিরক্ত হইয় পড়ে। শিশুর খেলাগুলি যেন বৈচিত্র্যহীন না হয় সে বিষয়েও শিক্ষকের দৃষ্টি রাখ উচিত। বৈচিত্রের অভাবে শিশুর কৌতুহল স্বতঃই নষ্ট श्रेज यात्र। गाउ श्झेउ বার বৎসর বয়সের শিশুদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার স্পৃহা জাগে। এই সময়ে শিক্ষক খেলার মধ্য দিয়া শিশুর এই সহজ বৃত্তিটিকে যথোপযুক্তভাবে নিয়মিত করিতে পারেন। এই প্রতিদ্বিতার স্পৃহা শিশুকে জ্ঞানার্জনেও যথেষ্ট সহায়তা করে। এই বৃত্তিটিকে সম্পূর্ণ বিনষ্ট করা নীতির দিক দিয়াও সঙ্গত নয়। কখনও কখনও ইহার কুফল দেখিতে পাওয়া গেলেও এই প্রতিদ্বস্থিতার শ্বহাই শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনের প্রায় সমস্ত কর্ণের প্রেরণা জোগায়। দশ বৎসর বয়স হইতে শিক্ষক শিশুকে খেলার ఏO8O সাহায্যে সহযোগিতা শিক্ষা দিতে পারেন। খেলার মধ্য দিয়া এই প্রকারে শিশুকে নৈতিক শিক্ষাও দেওয়া যায়। ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি নিয়মবদ্ধ খেলায় শিশু কাৰ্য্যতৎপরতা, পরার্থপরতা, একত, বাধ্যতা, নিয়মনিষ্ঠ, সময় ও কৰ্ম্মনিষ্ঠা ইত্যাদি সদগুণ অর্জন করিবার সুযোগ পায়। খেলার মধ্য দিয়া শিশুর দৈহিক শক্তিগুলিও পূর্ণবিকাশ প্রাপ্ত হয়। শিক্ষা শব্দটিকে যদি ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করি তাহ হইলে শিশুর দৈহিক শক্তিগুলির উৎকর্ষ সাধনের জন্ত খেলার প্রয়োজনীয়তা যে কত অধিক সে-সম্বন্ধে আলোচনাই বাহুল্য মাত্র। শরীরকে বাদ দিয়া যে শিক্ষা তাহ একবারেই অসম্পূর্ণ। ffaf xfartsA-A man is fully human when he plays, অর্থাৎ আমরা খেলা করিয়াই পুর্ণমানবত্ব প্রাপ্ত হই। কিন্তু আমাদের জীবনের পরিণতির জন্য খেলার এত প্রয়োজন থাকিলেও আমরা ছেলেথেলা করিয়াই সমস্ত জীবনকে কাটাইয়া দিতে পারি না। আমাদের অনেকেরই জীবনে নিরবচ্ছিন্ন মুখ ও আনন্দ ঘটে না । তাই বিরুদ্ধমতাবলম্বীরা শিশুর জীবন-প্রভাতে এই থেলার আনন্দের মধ্য দিয়া শিক্ষা দিবার বিধানকে সমীচীন মনে করেন না। র্তাহাদের মতে বিদ্যালয়ের কঠোরতার মধ্য দিয়াই শিশুকে জীবন-সংগ্রামের জন্ত প্রস্তুত করা দরকার। শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ না হইয়া কণ্টকাকীর্ণ হইবারও সম্ভাবনা আছে। সে যদি খেলাকেই জীবনের চরম লক্ষ্য বলিয়া জানে তবে সে দুঃখ বহনের অনুপযোগী হইয়া যাইতে পারে এবং তাহার জীবনের গাম্ভীৰ্য্যও নষ্ট হইয়া যাইবার আশঙ্কা আছে। তাই ইহাও বাঞ্ছনীয় যে, শিশু বিদ্যালয়ে অপ্রিয় কাৰ্য্যও করিতে শিখিবে এবং তাহা করিতে সৰ্ব্বদা প্রস্তুতও থাকিবে। শিক্ষক যখন শিশুকে ক্রীড়াচ্ছলে শিক্ষা দিবেন তখন তিনি যেন তাহাকে বলিয়া ন-দেন যে, তিনি খেলার মধ্য দিয়াই তাহাকে শিক্ষা দিতেছেন। তাহা হইলে শিশু জীবনের কঠোরতাকে বরণ করিতে শিখিবে না। শিক্ষক পাঠগুলিকেই এত আনন্দদায়ক করিবেন যে, শিশু স্বতঃই তাহাতে জহুরক্ত হইবে। কাজের মধ্যে শিশু নে খেলার আনন্দ পায় ইহাই শিক্ষকের লক্ষ্য হওয়া উচিত। - * * *