পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ বিক্রমখোল-লিপি 68S সমাধার চেষ্টা হইয়াছিল, বন্ধুর শৈলগাত্র সমতল করিয়া লইবারও অবকাশ হয় নাই। তদুপরি লিপিগুলি হাতের টানা লেখার মত অতি দ্রুত লিখিত হইয়াছিল। যে-যে অংশ খোদাই করিবার স্থবিধা হয় নাই, সেই সেই অংশ রংদ্ধার লিখিত হইয়াছে, সুতরাং লিপিকৰ্ম্ম অতি অল্প সময়ের মধ্যেই সমাধা হইয়াছিল। এ-প্রকার জটিল লিপি ভারতে এ পয্যন্ত কোথাও আবিষ্কৃত হয় নাই । শাসনলিপির ভাষা প্রাচীন নাগপুরী ( রাঢ়ীয় ভাষা ), লিপিগুলি মিশ্রলিপি, খরোষ্ট্রী এবং প্রাচীন পালি অক্ষর। লেখা ভাঙা ও দ্রুত লিখন হেতু কতকটা ফাসী লেখার মত দেখিতে হইয়াছে। সৈন্ধবী লিপির মুদ্রালিপিতে যেমন গুচ্ছলিপি' দুজ্ঞের্ম হইয়াছে, সেই ধরণের গুচ্ছলিপি’ শালিবাহন বিক্রমখোল লেখমালায় বিদ্যমান রহিয়াছে । সম্ভবতঃ স্থানসন্ধুলানের জন্য গুচ্ছলিপির ব্যবহার করিতে হইয়াছে । বিক্রমখোল-লিপির ভাষা সম্ভবতঃ খ্ৰীষ্ট প্রখম বা পূৰ্ব্বাব্দের দেশপ্রচলিত- ‘নাগ প্রাক্লত ভাষা’, নাগ, কোল এবং সমেতাল কথিত ভাষার মতও নয়, পালি প্রাকতও নয়। মনে হয় সাধারণ প্রাচীন নাগ প্রাকৃত ভাষার সহিত ভদ্র নাগরিক পালি ভাষার মিশ্রণে এই ভাষা। ইহাতে যে-সকল শব্দ বিদ্যমান রহিয়াছে, সেগুলি সমুদয়ই উত্তর প্রাকৃত ভাষার শব্দ । সামান্য দক্ষিণী প্রাকৃত শব্দও বিদ্যমান রহিয়াছে । আশ্চর্য্যের বিষয়, লিপির প্রাকৃত শব্দগুলি সংস্কৃত ধাতুশব্দমধ্যে ধৃত হইয়াছে। ঠিক এই ব্যাপার সৈন্ধবী মুদ্র-লিপিতেও দেখা যাইতেছে। অতএব বলা যাইতে পারে প্রাচীন ভারতের, প্রাচীন প্রাকৃত ভাষার অধিকাংশ শব্দই, সংস্কৃতের ধাতু বলিয়া গণ্য হইয়াছে। একাক্ষরকোষ এবং ধাতুমালায় একাক্ষর ও ধাতুশব্দগুলির যে অর্থ লিখিত রহিয়াছে উহার সাহায্যেই আলোচ্য শালিবাহন রাজার শাসনলিপির পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হইয়াছে। অথচ বিক্রমখোললিপির ভাষা সংস্কৃত নয়। প্রকৃত প্রাচীন নাগ-প্রাকৃত ভাষা । কোল হে প্রভৃতির কথিত ভাষার কিঞ্চিৎ ধ্বনি প্রকাশ করে মাত্র । রাজা অশোকের সময়ের ভাষার সহিত ( মাগধী পালি ভাষা) শালিবাহন রাজার লিপির ভাষার কোনই সাদৃপ্ত নাই। অতএব মনে হয়, প্রাচীন নাগপুর রাজ্যে তথাকথিত কালে ঐ প্রকার ভাষাই প্রচলিত ছিল। সাধারণের বোধসৌকর্ষার্থ দেশীয় ভাষাই ব্যবহৃত হইয়াছে। এই ভাষা প্রাচীন পশ্চিম-দক্ষিণ-রাঢ়ের ভাষা ছিল বলিয়াই অল্পমান করা চলে । বঙ্গের ( পশ্চিম ) আদি ভাষা কতকটা বিক্রমপোল ভাষার বিক্রমথোল লিপিঃ অশ মতই ছিল । এই ভাষার বিষয় এ পয্যন্ত অবগত হওয়া যায় নাই। পালি ভাষায় ব্যবহৃত -চারিটি শব্দ ইহাতে পাওয়া যায়, ঘথ। লজ ( রাজা ), ঈস, পতি । শল শালি, সল শব্দে একশত বুঝায় প্রাচীন আদি জাতির । সল ও সত একই । সত, শত এক কথ। । পাঠোদ্ধারের বিস্তুও বিবরণ প্রদ ও হঠল না । প্রত্যেক চিত্রটি ভারতীয় কোন ভাষার অক্ষর, প্রথমে ইহারই বিচার করিয়া অক্ষরগুলির পরিচয় গ্রহণ করা হইয়াছে, তৎপরে শব্দনির্ণয়ার্থ ধাতু আদর্শে, শব্দ সাজানো হইয়াছে এই উপায়ে বর্ণগুলি সাজাষ্টয়া ভাষাসু পরিবর্তিত করিয়া--- সাহিত্যমুখী করিতে, যথেষ্ট পরিশ্রম এবং সময় অতিবাহিত হইয়াছে। যদিও প্রথমে পালি ভাষা বিবেচিত হইয়াছিল, কিন্তু পরে দেখা গেল, পালিভাষার সামান্ত টান থাকিলেও ইহা পালি ভাষায় লিখিত মহে ; সংস্কৃত ত নয়ষ্ট । সমেতাল বা কোল-হে। ভাষাও নহে, অথচ যেন সামান্ত আভাস আছে । ইহা কোন প্রচলিত ভাষা নহে, সম্ভবতঃ প্রাচীন নাগপুরীয় সাধারণ লোকের গ্রাম্য ভাষায় এই লেখমাল উৎকীর্ণ হইয়াছে। বর্তমানকালে উৎকীর্ণ লিপির ভাষার প্রচলন নাই, দীর্ঘ কালে এই ভায। পরিবর্তিত হইয়া গিয়াছে। কোল, হড়, হে, মুণ্ড প্রভৃতি ভহ।