পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ግ8● সীজার বলেনঃ—“স্বস্থিহির ছিল জাৰ্ম্মানদের ভিতর সব সে সেরা লড়াইপ্রিয় ও মজবুদ জাতি, (ভারতীয় যৌধেয় জাতির মতন ‘ক্ষয়িদের ক্ষত্রিয় বিশেষ’ ) । ইহার ভিন্ন ভিন্ন একশ গ্রাম হইতে একশ জনকে লড়াইয়ে পাঠাইত। যাহারা গ্রামে থাকিত তাহারা এই যোদ্ধাদিগকে ভরণপোষণ করিত | পর বৎসর যোদ্ধারা দেশে ফিরিয়া চাষে লাগিত অার চাষীরা যাইত লড়িতে । এইরূপে লড়াইয়ের সঙ্গে চাষের অদল-বদল ঘটিত এবং দুই-ই চলিত এক সঙ্গে ।” স্ক্যাশুিনাহিবয়ানদের সমাজেও এইরূপ যৌথ লড়াই এবং যৌথ চাষের ব্যবস্থা ছিল । লড়াইয়ের মাঠ হইতে ফিরিয়াই ইহার স্ত্রীদিগকে ফসল কাটার কাজে সাহায্য করিত । যৌথচাযের রীতি জগতে অনেক দিন পৰ্য্যন্ত চলিয়াছে। এমন কি আদিম যুগের যৌথ ধনদৌলতের প্রথা লোপ পাইবার পরও কৃষিকৰ্ম্মে সমবেত প্রথা রহিয়া গিয়াছিল। রুশিয়ার পল্লীতে পল্লীতে খানিকটা জমি মিরের জমি নামে পরিচিত । এই জমি চষে পল্লীবাসীর সমবেত-ভাবে । ফসল পল্লীবাসীদের ভিতর ভাগা ভাগি করিয়া দেওয়া হয় । অন্যান্য জনপদে জমিগুলা চষা হয় সমবেত-ভাবে । কিন্তু ফসল কাটিবার পূর্বেই চাষ-করা জমি ভিন্ন ভিন্ন পরিঝুরের মধ্যে বাটিয়া দেওয়া হয় । রশিয়ার ‘ডন’ জনপদের কোথf ৪ কোথাও ঘাসের ভূমিগুলা প্রথমেই ভাগাভাগি করিয়া দেওয়া হয় না। গোটা মাঠ একত্রে তদবির করা হয় । ঘাস কাটাও হয় একত্রে । ভাগবাটোয়ার অনুষ্ঠিত হয় সৰ্ব্বশেষে । বন-জঙ্গল পরিষ্কার করাও হয় সমবেত-লবে । চাষআবাদের ভূমিতেও যৌথ চ্য। এবং খোড়া প্রচলিত। ফিজি দ্বীপপুঞ্জে একসঙ্গে দল বাধিয়া অনেকগুলা লোক জমিন তৈয়ার করে । এক-এক দলে চার পাঁচজন করিয়া কাজ করিতে মোতায়েন থাকে । প্রত্যেকের হাতে একটা করিয়া মাটি খুড়িবার শিক । ইহারা সকলে মিলিয়া দুই ফুট ব্যাসওয়াল পরিধির মাটি খুঁড়িতে সচেষ্ট হয়। যখন প্রত্যেক দলের প্রায় প্রবাসী—চৈত্র, ১৩৩• [ ২৩শ ভাগ, ২য় খণ্ড ১৮ ইঞ্চি গভীর মাটি নরম হইয়া আসে তখন শিকগুলার জোরে গভীরতম জমিনের মাটি উপরে তুলিয়া দিতে চেষ্টা করা হয়। এইরূপে সুবিস্তৃত ভূমিখণ্ডের ভিন্ন ভিন্ন অংশে কমলে-কম আঠার ইঞ্চি খুড়িয়া সৰ্ব্বত্র গভীর চাষের ব্যবস্থা করা হইয়া থাকে । স্বট্‌ল্যাণ্ডের হাইল্যাণ্ডার সমাজেও এইধরণের মাটি খেড়ি প্রচলিত আছে । উর-বিবৃত রীতি-অনুসারে নৃতত্ত্ববিৎ গম্ এই কথা বলেন । গীজারের বর্ণনায় জানা গিয়াছে জাৰ্ম্মানরা বৎসর বৎসর লুটপাটের অভিযানে বাহির হইত। লুটের ধন সম্ভবত সকলের ভিতরই বাটিয়া দেওয়া হইত । যাহার: চাষের জন্য ঘরে বসিয়া থাকিত তাহারাও এই ধনে বঞ্চিত হইত না । প্রাগৈতিহাসিক যুগের গ্রীকেরাও এইরূপ ডাকাইতি করিত। ইহার ছিল জলদস্থ্য। ভূমধ্য সাগরকে ইহার উস্তমথুস্তম করিয়া ছাড়িয়াছিল । লুটপাট করিয়া ইহার পাহাড়ের ডগায় অবস্থিত দুর্গে পলাইয়া আসিত । স্কাণ্ডিনাহিবয়ানদের জল-দুর্গের মতন এই গ্রীক দুর্গাবাসগুলাও এক প্রকার দুর্ভেদ্য ছিল । একট। গ্ৰীক গানের এক টুকুর আজও সেই প্রাচীন জীবনের সাক্ষ্য দিতেছে। গানের বীর বলতেছেন – “এক বিপুল বল্প । আমার সম্পদ। তলোয়ারেও আমার জেরি । তাহার উপর শরীরের দুর্গস্বরূপ আছে এক ঢাল। এই দিয়াই আমি জমি চষি আর ফসল তুলি আর আঙ্গুরের রস শুষি । এইগুলার প্রতাপেই লোকে আমায় মোয়াদের ( গোলামদের ) প্রভু বলিয়৷ মানে । যার যার এই বল্লম আর ঢাল নাই তারা আমুক আমায় কুর্ণিশ করিতে। আমি তাদের মহারাজ ।” ডাকাইতি আর জলদস্থগিরি মান্ধাতার আমলে এক বড় পেশা । হোমারের “অডিলি” গ্রন্থে নেক্টর তাহার অতিথি তেলেমাকুসকে জিজ্ঞাসা করিতেছেন ঃ“আপনি কি জলদস্থ ?” ইহা একটা গৌরবের কথাই ছিল, নিনার নয় । এথেন্সের রাষ্ট্রনায়ক সোলন জলদস্থ্যগিরি বিদ্যায় যুবাদিগকে পোক্ত করিয়া তুলিবার জন্য একটা বিস্তা