পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] এইসব কারণে জাপানীর ভারতীয়দের চেয়ে বেশী পরিশ্রম ও ধনোৎপাদন করিতে পারে। জাপানে শিক্ষার বিস্তৃতি ও উৎকর্ষ ভারতের চেয়ে বেশী হইবার নানা কারণ আছে। প্রথম কারণ, স্বাধীনতা। জাপানীরা নিজেই নিজেদের শিক্ষার ব্যবস্থা এমন ভাবে করিয়াছে, যাহাতে সমুদয় জাপানী শিক্ষিত ও স্বদেশানুরাগী হয়। এই জন্য জাপানে নিম্নশিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক। তাহার ফলে জাপানের স্ত্রীলোকের প্রায় শতকরা নব্বইজন লিখিতে পড়িতে পারে, পুরুষের পারে শতকরা নব্বইয়েরও উপর। ভারতবর্ষে স্ত্রীলোকদের মধ্যে শতকরা ১-০৫ অর্থাং হাজারে সাড়ে দশ জন, দশহী জারে ১০৫ জন লিখিতে পড়িতে পারে ; পুরুষদের মধ্যে শতকরা ১০৫৬, হাজারে ১০৫-৬ এবং অযুতে ১৯৫৬ জন লিখিতে পড়িতে পূরে । কোম্পানীর আমলে ইংরেজ গবৰ্ণমেণ্ট প্রথমতঃ এদেশে সরকারী ব্যয়ে শিক্ষার কোন ব্যবস্থাই স্করেন নাই ; তাহার পর সামান্য ভাবে করেন—প্রথমতঃ তিনটি উদ্দেশ্রে; (১) কৰ্ম্মচারী পাইবার জন্য, (২) বিলাতী রুচি জন্মাইয়৷ বিলাতী জিনিষেব কাটুতি বাড়াইবার জন্য, (৩) খ্ৰীষ্টিয়ানের সংগ্য বাড়াইয়। রাজত্বের ও বাণিজ্যের ভিত্তি বিস্তৃত ও দৃঢ় করিবার নিমিত্ত। এই সব কথার ঐতিহাসিক প্রমাণসহ বিবরণ সার্জন-মেজর বামনদাস বস্থর একখানি বহিতে * আছে। তাহা ইষ্টতে অনেক তথ্য ও প্রমাণের উল্লেখ শ্ৰীযুক্ত চিত্তরঞ্জন দাশ তাহার লাহোরের জাতীয় বিদ্যাপীঠের বক্তৃতায় সম্প্রতি করেন। কোম্পানীর আমল হইতে এখন পর্য্যন্ত ইংরেজদের বরাবরই ভয় আছে, যে, ভাল ও বেশী শিক্ষা পাইলে ভারতীয়দের চোখ খুলিতে পারে এবং তাহারা পরাধীনতায় অসন্তুষ্ট হইয়া স্বাধীন শুইবার চেষ্টা করিতে পারে। শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ে কেজে। ও বৈজ্ঞানিক শিক্ষা দিলে ইংলণ্ডের শিল্পবাণিজ্যের ক্ষতি হইতে পারে, এই ভয়ও আছে । এই সব কারণে ভারতবর্ষে শিক্ষার সুবিস্তৃত ও উৎকৃষ্ট বন্দোবস্ত এপর্য্যস্ত

  • History of Education in India under the

IRule of the East India ('ompany. By Major B. D. Basu, I.M.R. (Retired ). Rs. 2-8-0. Modern Review Office, Calcutta. বিবিধ প্রসঙ্গ-দেশ বিদেশের জায়ব্যয়ের তুলনা KYసి হয় নাই। জাপানীর স্বাধীন বলিয়া এইসব রকমের কোন ভয় না থাকায় সেখানে শিক্ষার স্থব্যবস্থা হইয়াছে। জাপানে শিক্ষার সম্যক্ বিস্তৃতি ও উৎকর্ষের আর একটি কারণ, জাপান শিক্ষার জন্য খুব খরচ করে। জাপানের শিক্ষার ব্যয়ের সঙ্গে ভারতবর্ষের শিক্ষার ব্যয়ের তুলনা করিবার পূৰ্ব্বে বিলাতের খরচের সঙ্গে বঙ্গের খরচের তুলনা করা যাক। বঙ্গের সহিত তুলনা করিবার কারণ এই, যে, বাংলার লোকসংখ্যা ৪৫৪৮৩০৭৭ এবং গ্রেটুব্রিটেন ও আয়াল র্যাণ্ডের লোকসংখ্যা ৪৬১০ ০০ ০০–প্লায় সমান । বাংল। দেশে ১৯২৩-২৪ সালে দেশীলোকদের শিক্ষার জন্য গবর্ণমেণ্ট, এক কোটি টাকার কিছু বেশী খরচ করিবেন। বিলাতে গবৰ্ণমেণ্ট, ১৯২২-২৩ সালে লোক শিক্ষার জন্য ৫৫ ৪৮৭০ ০০ পাউণ্ড অর্থাং ৮৩,২৩,০৫,০০০ (তিরাশি কোটির উপর ) টাকা বরাদ্ধ করেন। এই তুলনায় কথা উঠিবে, যে, বিলাত পাশ্চাত্য ধনী দেশ, তাহার সঙ্গে বাংলার তুলনা কর। অন্যায়। কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, বিলাত ধনী হুইল কেমন করিয়া ? পলাশীর যুদ্ধের পর ক্লাইব, বলিয়াছিলেন, যে, মুর্শিদাবাদ লগুনের চেয়ে ধনশালী শহর । কেমন করিয়| বাংলার দশাবিপৰ্য্যয় ঘটিল, সকলে ভাবিয়া দেখুন ও প্রতিকারের চেষ্টা করুন। যাহা হউক, পাশ্চাত্য ও ধনী বিলাতের কথা ছাড়িয়া দিয়া এখন প্রাচ্য জাপানের সঙ্গে ভারতবর্ষের সরকারী শিক্ষাব্যয়ের তুলনা করা যাক। জাপান ম্যাগাজিনে দেখিতেছি ১৯২৩-২৪ সালের জন্য জাপানের গবর্ণমেণ্ট b'9ం, ది రి, • 5 రి ইয়েন অর্থাৎ ১২,৯০,০০,০০০ টাকা ( প্রায় তের কোটি টাকা ) বরাদ্দ করিয়াছেন । ইহা বাংলা গবর্ণমেণ্টের শিক্ষা ব্যয়ের মোটামুটি বার গুণ। সমগ্র ভারতবর্ষে শিক্ষার জন্য গবর্ণমেণ্ট, ১৯১ -—২১ সালে ৭,৭২,৭৭,৬১২ টাকা পরচ করিয়াছিলেন । জাপানের লোকসংখ্য ভারতের সিকিরও কম, অথচ উহার গবর্ণমেণ্ট শিক্ষার জন্য ভারত গবৰ্ণমেণ্টের প্রায় দ্বিগুণ ধরচ করেন। জাপানী গবর্ণমেণ্ট, শিক্ষার জন্ত ব্যয় করেন বেশী ; এবং সেই ব্যয়ে কাজ পান এখানকার চেয়ে ভাল ও বেশী ; কারণ জাপানে ভারতবর্ষের মত বেশী বেশী টাকা বেতন দিতে হয় না। তাহার একটি দুষ্টাশ্ন দিতেছি। জাপানে