পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ) SAAAAAA AAAAMAeA AMSMAAAS করলেন, রতন তাড়াতাড়ি হরিহরকে একটা প্রণাম করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল । হরিহরের কাধের উপরে হুমুড়ি খেয়ে পড়ে স্থমিত্রা বললে, “দেখ দাদামশাই, গল্পের বইয়ে আমি অনেক দাদামশাইয়ের কথা পড়েচি, তুমি তো তাদের কারুর মতই নও ! কতকাল পরে নাতনীদের কাছে এলে, কোথায় তাদের নিয়ে আমোদ-আহলাদ করবে, ভালোমাহুষটির মতন বসে মাথার পাকা চুল তোলাবে, না খালি খালি রাগারাগি আর বকীবকি কবুচ ! না, তোমার মতন দাদামশাই নিয়ে আমার চলবে না দেখচি!” সুমিত্রার কথা কইবার ধরণ দেখে হরিহয় না হেসে থাকৃতে পারলেন না । হাস্তে হাস্তে বললেন, “আমাকে নিয়ে না চলে ভাই, বাজায়ে গিয়ে একটা ভালো দেখে দাদামশাই বাছাই ক’রে কিনে এন !” স্বমিত্র বললে, “আঃ, বাচলুম ! আমি ভেবেছিলুম দাদামশাই, তুমি বুঝি হাসতে জানোন! এতক্ষণে তবু যে একটু হেসেচ, তাইতেই আমার মনটা ঠাণ্ড হ’য়ে গেছে ?” হরিহর বললেন, “তোদের এখানে এসে আমার অবস্থা কি-রকম হয়েচে জানিস্ ? ঠিক যেন জলের মাছ ডাঙায় এসে পড়েচি ! সায়েব-মেম নিয়ে কখনো তো কারবার করিনি ভাই, ধাতে কি ক’রে সইবে বল্‌ ! আচ্ছা, তোর বামুনের হাতের রান্নাটাও অন্তত খাস তো ? না, বাবুচ্চ রেখেচিস্ ?” স্বনীতি হেসে ফেলে বললে, “না দাদামশাই, আমরা অতটা এখনো অগ্রসর হতে পারিনি । বিশ্বাস না হয়, আপনি না-হয় আমাদের হাতের রান্নাই খাবেন ।” পাচ রতন উপর থেকে নেমে, বৈঠকখানার পাশ দিয়ে যাচ্ছে, এমন সময়ে ঘরের ভিতর থেকে বিনয়-বাবু ডাকূলেন, “রতন, একবার ভেতরে এস তো !” রতন ভিতরে ঢুকে দেখলে, সেখানে চারিদিকে টেবিল, চেয়ার, কোঁচ, সোফার যেমন ভিড়, মামুযের ভিড়ও তেমনি । সকলেবই পরনে বিলাতী পোষাক, বেনে-জল రిసి, অধিকাংশেরই মুখে পাইপ, সিগার বা সিগারেট, কেউ কেউ চায়ের পেয়ালায় চুমুক মারচেন। সে আসরে যুবক, প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ কারুরই অভাব নেই এবং সকলেই সমানভাবে সকলের সঙ্গে কথা কইছেন এবং এইটিই হচ্ছে বিনয়-বাবুর সান্ধ্য বৈঠকের প্রধান বিশেষত্ব। ঘরের মধ্যে র্যারা আছেন, তাদের কারুর কারুর পরিচয় দরকার । - ঘরের এককোণে ঐ যিনি আরাম-চেয়ারে কাং হয়ে টেবিলের উপরে দুইখানি সবুট চরণ তুলে দিয়ে অৰ্দ্ধমুদ্রিত নেত্রে ধূমপান করছেন, উনি হচ্ছেন মিঃ ঘোষ, — বিনয়-বাবুর সমব্যবসায়ী, সমবয়সী বন্ধু এবং বিলাতফেরং । গল্প শুনতে ভালোবাসেন, কিন্তু গল্প বলতে নারাজ ৷ এককোণে ব’সে থাকেন, সকলের কথা মন দিয়ে শোনেন, কিন্তু নিজে কথা কন কম । বিনয়-বাবুর কাছে এর মত বড় মূল্যবান। বিনয়বাবুর ঠিক সামনেই যে লোকটি বসে আছেন, তিনি মিঃ বাস্থ নামেই বিখ্যাত—কলিকতা হাইকোটের বার-লাইব্রেরীর একটি উজ্জল অলঙ্কার। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি, বিবাহ করবার ইচ্ছা মোটেই নেই— কারণ জিজ্ঞাসা করলে প্রায়ই এই মতটি প্রকাশ zoosa–"Woman is like a shadow. Pursue her, she runs. Run from her, she pu.sues ;অতএব এমন যুক্তিহীন জীবের সঙ্গে কোন সম্পর্ক না রাখাই বুদ্ধিমানের কার্য্য !" | মিঃ বাস্থর পাশে যিনি ঐ হাসি-হাসি মুখে বসে গোফে মোচড়ের পর মোচড় লাগাচ্ছেন, ওঁর নাম মিঃ চ্যাটো ( চট্টোপাধ্যায়ের ফেরঙ্গ রূপান্তর ) । কিন্তু আড়ালে ওঁকে সকলে মিঃ বাস্থর প্রতিধ্বনি’ ব’লে ডাকেন । উনিও চির-কুমার—তবে লোকে বলে, অনিচ্ছায় । বয়স.ত্রিশবত্রিশ হবে । বিলাতে যাননি, কিন্তু বিলাতী হাব-ভাব র্তার চোখে-মুখে, সৰ্ব্বাঙ্গে । মাঝখানকার গোল মাৰ্ব্বেলের টেবিলের উপরে দুই কছুই রেখে যে যুবকটি ব'সে আছেন, তার নাম কুমার নরেন্দ্র চৌধুরী-পূর্ববঙ্গের কোন সম্ৰান্ত বংশের সস্তান। বয়স সালাশ-আটাশ, গড়নটি পাত ল। ছিপছিপে, রং,