পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] তা শুকে ঠিক করতে চেষ্টা করতে । বাগানের গাছপালা সব শুকে চিন্‌বার চেষ্টা করতো। এতে তার সত্যিই অনেকটা উপকার হয়েছিল। কিছু দিন পরে সে চোখ বুজে, হামা দিয়ে চলতো। ঘরে বাগানে নানা রকম জিনিষ রেখে দিত, আর শুকে পথ ঠিক করতে চেষ্টা করতো। কখনও কখনও সে অচেনা গন্ধ পেত এবং তার অনুসরণ করতো। একদিন তাই ক’রে সে নাকি একটা খরগোস প্রায় ধ'রে ফেলেছিল। এতে তার উৎসাহ খুব বেড়ে গেল। কিন্তু আর-একদিন সন্ধ্যেবেলায় বাগানে শুকে শুকে একটা অজানা জানোয়ারকে বের করতে গিয়েই কিছু কালের মত তার উন্নতির পথে বাধা প'ড়ে গেল। কে একটা জাতিকল বাগানে পেতে রেখেছিল । চোখ বুজে যেতে যেতে তার নাকটা তাতে আটকে গেল। ফলে ভীষণ গোলমাল ও ছুটোছুটি পড়ে গেল। নাকটা বঁাচলে৷ বটে, কিন্তু নাকের ডগায় জাতিকল ঝুলিয়ে বৈজ্ঞানিক পুত্র যখন পিতৃসন্দর্শনে উপস্থিত হলেন তখন পুত্ৰগৌরবে মুগ্ধ পিতা বলতে বাধ্য হলেন, যে, ঐ রকম পাগলামো করলে তিনি তাকে ত্যাজ্যপুত্র না ক’রে পারবেন না। অগত্য মত না বদলালেও পাচু প্রকাশ্বে স্বপ্ত শক্তিকে আর জাগাতে চেষ্টা কবৃতো না। নাকের দাগটা তার অবস্ত গেল না, কিন্তু পাচু তাতে কিছু মাত্র লজ্জা বোধ করতে না । এর থেকে বোঝা যায়, যে, পাচু সাধারণ মাহুষ নয়। সে নিজেও তাই ভাব তো । এর পর সে বৈজ্ঞানিকভাবে মহাভারত বিশ্লেষণ স্বরু করূলে । ভারতবর্ষ জগৎকে একদিন যে জ্ঞান দিয়েছিল, সেই লুপ্তজ্ঞান আবার জগতে ফিরিয়ে আনতে তার খুব একটা উৎসাহ দেখা গেল এবং ফলে আমাদের বাচা দায় হলো । তার উদ্ভাবনী-শক্তি হঠাৎ এত বেড়ে গেল, যে, এমন কি বৈজ্ঞানিক মেসে ঝি চাকর টে কা দায় হ'য়ে উঠলো। নানাপ্রকার অস্ত্রশস্ত্র, ফাঁদ-কল ইত্যাদি সে তৈরী করতে স্বরু করলে এবং মেসের সকলেরই হাত পা সেগুলির অস্তিত্ব সম্বন্ধে এমন সচেতন হ’য়ে উঠতে লাগলো, যে, কলিযুগের কুরুক্ষেত্র ঠেকিয়ে রাখা আমাদের পক্ষে এক সমস্যা হ’য়ে দাড়ালো । অবশেষে পচুগোপাল ডিটেক্‌টিভ, đbứ যখন সে নাগপাশ অথবা অটোম্যাটিক মাণ্টি-লুপ ল্যাসো ( Automatic Multi-loop Lasso) è sĩ FHM, GRa আমরা অগত্য একটা খারাপ রকম ষড়যন্ত্ৰ ক’রে গেট পুড়িয়ে তবে নিজ হস্তে রান্না বাজার ও বাসন মাজার হাত থেকে নিস্তার পেলাম। দেখে দেখে আমাদের চোখে ওসব এমন সয়ে গিয়েছিল, যে, প্রথমে যখন ছাদের উপর দড়ি দড়া কাঠ বঁাশ ইত্যাদির সাহায্যে সে আর-একটা কি তৈরী করলে তখন আমরা অতটা নজর দিই নি ! কিন্তু একদিন স্বানের সময় আমরা চারজন ছেলে, দুজন চাকর ও বি গোবিন্দর-মা উঠোনের কলতলায় গিয়েছি, এমন সময় হঠাৎ ঝুপ ক’রে অনেকগুলি দড়ির ফাস আমাদের গায়ে পড়লো এবং কোন গোলমাল করবার আগেই আমরা ফাসে বাধা অবস্থায় দশ বার হাত শূন্তে উঠে গেলাম। হতভম্ব হ’য়ে ছাদের দিকে চেয়ে দেখলাম পাচু মন দিয়ে একবারটি আমাদের দেখলো এবং ঠিক হয়েছে ব’লে একটা হাতল ঘুরিয়ে আমাদের নামিয়ে দিল। গোবিন্দরমা শুধু টাল সাম্লাতে না পেরে চৌবাচ্চায় পড়ে গেল। ভিজে কাপড়ে বিস্ফারিত নেত্রে উপরে একবার তাকিয়েই সেই যে সে বাড়ী গেল, তার পর তাকে আর দেখি নি । এই নাগপাশ পুড়িয়ে দেওয়ায় পাচুর কি রাগ ! এর পরে সে অভিমত্যুর ব্যুহ-ভেদের মূলমন্ত্রটা একদিন হঠাৎ আবিষ্কার ক’রে ফেলল। এমন নাকি একটা উপায় আছে যা জানলে অতি ভীষণ ভিড়ের মধ্যেও একজন মানুষ অবাধে ঢুকে যেতে পারে এবং তাও আবার কোন রকম অস্ত্র-শস্ত্রের সাহায্য না নিয়ে । টেবিলের উপর দেশলাই-কাটি সাজিয়ে আঁকজোখ কেটে পাচু কত রাতের পর রাত কাটিয়ে দিলে। তার পর একদিন ভোরবেলা সে চেচিয়ে বললে, যে, অভিমন্ত্যর গুপ্তজ্ঞান সে পুনরাবিষ্কার করেছে এবং বর্তমান বিজ্ঞানের ভাষায় জিনিষটা জলুগতিfossicaä ( Hydrokinetics ) Zoss org I &SR বললে, “খুব বেশী ভিড় ভেদ ক’রে যাওয়া অবশ্ব ঐ জাতীয় সমস্ত, সে সম্বন্ধে সন্দেহ নেই।" পাচু মানে না বুঝে এতে খুব খুসি হয়েছিল। আমাদের সকলের ফুটবল খেল দেখার বেশ ঝোকৃ ছিল। সে দিন মোহনবাগানের সঙ্গে ক্যালকাটার ম্যাচ ।