ృebr প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় থ মিনিটের মধ্যেই আসিয়া পৌছিল। ডাক্তার মায়াকে তখন নীচেই ছিলেন। শিবচরণবাৰু জিজ্ঞাসা করিলেন, পরীক্ষা করিতেছিলেন বলিয়া সে আর ঘরের ভিতর ঢুকিল না, বাহিরেই ঘুরিতে লাগিল । সম্প্রতি কোনো বিপদের আশঙ্কা নাই, এর বেশী কিছু সিবিল সার্জনও বলিতে পারিলেন না । যেমন হঠাৎ অসুখ করিয়াছে, তেমনি হঠাৎ সারিয়াও যাইতে পারে, আবার অনেক দেরি হওয়াও কিছু আশ্চৰ্য্য নয়। নিরঞ্জন তাহাকে পরের দিন আবার আসিতে বলিয়া দিলেন । ডাক্তাররা চলিয়া গেলে, দেবকুমার নিরঞ্জনের কাছে আসিয়া বলিল, “আমাকে দিয়ে কিছু যদি কাজ হয় ত বলুন।” নিরঞ্জন বলিলেন, “কাজ করবার লোকের ত অভাব নেই, আগলাবার লোকেরই অভাব। ইন্দু না আসা পৰ্য্যস্ত, তামার দেখছি ঘর থেকে বার হওয়াই দায় হবে । তুমি?" কয়েক ঘণ্টা ক’রে সকালে কি বিকেলে সুল্ল স:ক, তাহ’লে সেই সময়ট। আমি আপিসের কাজগুলো সেৱে আসতে পারি। ইন্দু কলকাতাতেই আছে । ইংলিশ মেলে রওনা হ’লে তিন দিনের মধ্যেই এসে পড়বে।” দেবকুমার বলিল, “যখন আপনি থাকৃতে বলবেন তখনি থাকুব । এখন কি শহরে যাবার আপনার দরকার আছে ?” নিরঞ্জন বলিলেন, “এখন গিয়ে বিশেষ কিছু লাভ নেই, কাল সকালে যাব। তুমি ভোরেই চলে এস, আমি গাড়ী পাঠিয়ে দেব। এখানে এসেই চা-টা খেও ।” দেবকুমার বলিল, “বাবা একবার আপনার সঙ্গে দেখা কবৃতে আসবেন বলছিলেন ।” নিরঞ্জন বলিলেন, “বেশ ত। সন্ধ্যার সময় আসতে পারেন ।” দেবকুমার চলিয়া গেল। নিরঞ্জন একবার উপরে দিয়া মায়াকে দেখিয়া আসিলেন, তাহার পর বসিয়া কাঞ্চজপত্র দেখিতে লাগিলেন। শিবচরণবাবু আপিসের কাজকৰ্ম্ম কোনোমতে iা সন্ধ্যার পর আসিয়া উপস্থিত হইলেন। নিরঞ্জন "এখন আমার মা-লক্ষ্মী কেমন আছেন ?” নিরঞ্জন বিহ ভ’ঃখ বলিলেন, “সেই একই রকম।” শিবচরণবাবু বলিলেন, “এমন একটা আনন্দের সময় এমন দুৰ্দৈব । আমার কপালেই এই রকম । যখনই ভাল কিছু হয়েছে, তার সঙ্গে তখনি মন্দ একটা কিছু ঘটেছে । ছেলে হয় না, ছেলে হয় না ক’রে সে কি কম আপশেষ ছিল । তা ছেলে যদি বা হ’ল, তার মা গেলেন মারা । দেবকুমারের বিয়ে এর চেয়ে ভাল কিছু কল্পনাও করতে পারিনি। তা এই সময় কি না এমন বিপদ । ডাক্তাররা কিছু বলতে পারছে না ?” নিরঞ্জন বলিলেন, “না। ভাল করে জ্ঞান না হলে কিই বা বলবে ? কি যে ব্যাপার কিছু বোঝাই যাচ্ছে না।” শিবচরণ বলিলেন, “দেবকুমারকে অনেক রকম করে জিগগেস করলাম, সেও কিছু বলতে পারল না। যাক, ভগবানের কুপায় মা-লক্ষ্মী আমার শীগগির শীগগির ভাল হয়ে গেলে বাচি । তাকে আজ আমার আশীৰ্ব্বাদ করে যাবার কথা, কিন্তু শুভকায্য এরকম নিরানন্দের মধ্যে করা ঠিক নয় । আজ শুধু তাকে দেথে যাই ।” নিরঞ্জন তঁহাকে উপরে লইয়া গেলেন । নাস নিরঞ্জনকে দেখিয়া বলিল, “একটু আগে একবার চোখ খুলে চারিদিকে তাকাচ্ছিলেন। এখনও জেগেই আছেন ।” নিরঞ্জন জিজ্ঞাসা করিলেন, “ওকে খাওয়ানে। হয়েছে ?” নাস বলিল, “হ্যা, দুধ খাইয়েছি।” শিবচরণবাবু বলিলেন, “চেহারা তো কিছু খারাপ হয়নি। মা-লক্ষ্মী শীগগিরই ভাল হয়ে উঠবেন। যেদিন উঠে বস্বেন, সেইদিনই আশীৰ্ব্বাদ করে যাব।” নিরঞ্জন বলিলেন, “তা ত করবেনই। আপনার গ্রিহে তাড়াতাড়ি যদি সেরে ওঠে ত ভাল।” র্তাহার বাহির হইয়া গেলেন। মিনিট-পাচেক পরে মায়। আর একবার চোখ খুলিয়৷ তাকাইল । নাস তাড়াতাড়ি তাহার কাছে আসিয়া ইংরেজীতে জিজ্ঞাসা করিল, “আপনার কি কিছু চাই ?”
পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১৫
অবয়ব