পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] দিব্যি রইলী একেও আমি নিয়ে চলুম। তোমাদের মীর খেয়ে ও এখানে থাকৃতে পারবে না। যাত্রার দলে গেলে স্বথে-স্বচ্ছনে থাকৃবে । তুমি মা নও— রাক্ষসী । নৈলে, খাবার সময় ছেলেকে এতবড় কথাট। - বলতে পারলে ?” বিমলকে লইয়া শিশির চলিয়া গেল । অরুণ দেখিল মায়ের দুই চক্ষু বাহিয়া অশ্রুর ধারা বহিতেছে। নিম্পলক নয়ন মেলিয়। তিনি পুত্রের গমনপথের পানে একদৃষ্টে চাহিয়া রহিয়াছেন। সে কহিল, “ম, মেজদাকে ডাকি ৷” মা ঘাড় নাড়িয়| অসম্মতি জানাইলেন । মেনক। বলিল, “কিন্তু মা, বিমলটার মাথাও যে খাবে, হতভাগ ।” ম৷ বলিলেন, “অনেক দিনই ও নিজের মাথা নিজে তোর থেয়ে নিগে য৷ ”—বলিয়া তিনি আপন শয়নকক্ষের মধ্যে প্রবেশ করিলেন । রাত্রিতে মেনকা ডাকিল, “মা, ওম—, ওঠ । থেয়েছে, যাক । একটু জল সাও ।” ম৷ বলিলেন, “তুষ্ট পেয়ে আয় বাছ, আমি আজ আর খাব ম৷ ” মেনক মায়ের মাথায় হাত রাখিয়া বলিল, “ভবে আমি ও পাব না। ওমা ! একি, সব বলিশট। ধে ভিজে গেছে ! মা, তুমি কাদছিলে ।” মেনকার হাত দুখানি বুকের উপর চাপিয় ধরিয়া ম: বলিলেন, “নাড়ীর যে ওষুধ নেই, মা । স্নেহ অন্ধ, ভাল মন্দ সে বিচার করে না ।” বলিতে বলিতে ভু-ছ করিয়৷ কুঁ দিয়া উঠিলেন । & কলিকাতার এক অপরিসর সঙ্কীর্ণ অন্ধকারময় গলির একট জীর্ণ পুরাতন বাড়ীতে কয়েকজন সমঅবস্থাপন্ন ভদ্রলোক মিলিয়। মেস প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন। চূণ বালি থস{—থোয়-ওঠা, দোর-জানাল ভাঙা বাড়ীটিকে দেখিলে বহুদিনকার পরিত্যক্ত জনহীন পুরী বলিয়। মনে হয়। কিন্তু সন্ধ্যার অন্ধকার ভাল করিয়া ফুটিতে-না-ফুটিতে \ রাজমাত ১৭ ইহর ধূম্রমলিন কক্ষগুলিতে মৃদু দীপশিখা জলিয়ু উঠিত্ব অদূরবত্তী অন্ধকারকে মুখ ভ্যাংচায়। তাসের আড়াব গান-বাজনার চর্চাওঁ নিয়মিত বসিয়া থাকে এবং মাঝে মাঝে প্রবল অট্টহাস্যধ্বনি বায়ুপ্রবাহে পথের এক প্রাস্ত হইতে অপর প্রাস্ত পৰ্য্যস্ত ছুটিয়া চলে। যেমন ংসের মধ্যে মৃত্যুর প্রবাহ কখনও অতি ক্ষীণু, কথন' বা উদামবেগে অবিচ্ছিন্নভাবে বহিয়া যায়, তেমনি ইহারাও অৰ্দ্ধমৃত দুঃখকষ্ট জর্জরিত প্রাণে সাধ-আহলাদের শ্ৰোত বহাইয়া পৃথিবীর হাসি আলে। উপভোগ করিতে করিতে সেই মহান মৃত্যুর অভিমুখেই অগ্রসর হইতে থাকে। কমলের এ হাসি-উল্লাস—এ আনন্দ-উচ্ছ্বাস ভাল লাগে না । এ যেন জীবনকে লইয়া এক ব্যঙ্গময় কাহিনীর স্বষ্টি ! যাহারা সত্যকার হাসিতে পৃথিবীর বুকে নন্দনকাননের স্থষ্টি করিয়া, মোটরে চড়িয়া, বাগানে বেড়াইয়া, প্রমোদ-ভবনে করতালি দিয়া জীবনটাকে হাল্ক। ফাহুসের মত উড়াইয়া চলিতে থাকে, তাহদের পাশ্বে এ হাসিকে মনে হয় যেন রিক্ততার ব্যথা সৰ্ব্বাঙ্গে মাখিয়া, অস্তরের অভাব দৈন্য উৎপীড়নে জর্জরিত হইয়। ধনীর দুয়ারে কৃপাভিখারী কাঙালের মত সঙ্কুচিত কর মেলিয়া আসিয়া দাড়াইতে হইয়াছে । কমল একটি মাদুর টানিয়া লইয়া আপনার ক্ষুদ্র কক্ষের খোলা জানালার ধারে শুইয়া পড়িয় ভাবে, এ যাত্রার শেষ কোথায় ? উচ্চ আকাজক্ষ—রঙীন আশা পাঠ্যাবস্থায় কত ভাবেই ন কল্পনার পখিায় ভর করিয়৷ কোন সুদূরে উড়িয় বেড়াইত, আজ ত্রিশ টাক। মাহিনার কৰ্ম্মের চাপে সে তাসের সৌধ ভাঙিয়া পড়িয়াছে। সুচারু জীবনযাত্রার আশাই হইয়াছে আকাশ-স্বল্প-জীবনের সাধআহলাদ ত দূরের কথা। তাহার এই সামান্ত উপজিনের পানে চাহিয়৷ বাড়ীতে অতগুলি প্রাণী ভবিষ্যতের সৌভাগ্য-স্বপ্নে বিভোর হইয়া আছে । হায়ুরে আশা ! মানুষকে ভুলাইতে, ভুল ভাঙাইতে তোমার মত কুহকী বিশ্ব-সংসারে যে দ্বিতীয় নাই ! চিরদিনই কি এই সমস্যার সঙ্কটে পড়িয়া গতিহীন জীবনের বোঝা ভারাক্রান্ত করিতে থাকিবে ? যেমন ওই বৃদ্ধ স্বরেশবাবু ষাট টাকায় সকল