পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইংরেজীর বাংলা শ্ৰীযোগেশচন্দ্র রায় মৌখিক ভাষায় লিখিত। দুষ্ট অক্ষরের মাঙ্গে ও মাথার দিকে কম চিহ্ন থাকিলে ঈষৎ ষ্টকার উচ্চারণ করিতে হইবে। ্য অক্ষরের উচ্চারণ য় মনে রাপিতে হুইবে । ‘বলিয়া, সংক্ষেপে, বল্য’ পড়িতে ছইৰে ; বোল্লে নয় । ] বখন কলেজে পড়ি, তখন একদিন রেভ রেও লালবিহারী দে বলেছিলেন, “দেখ, যখন তোমরা ইংরেজীতে ভাবতে পারবে, স্বপ্নে ইংরেজীতে কথা কইবে, তখন জানবে ইংরেজী শিখেছ।” দে-সাহিব আমাদের ইংরেজী সাহিত্যের এক প্রোফেশর ( অধ্যাপক নয়, অধ্যাপক টোলের ) ছিলেন, তার ইংরেজী ভাষাজ্ঞান অসাধারণ ছিল । তিনি স্বপ্নে ইংরেজীতে “লেকচার” দিবেন, আশ্চর্য কি ! কিন্তু, আমরা বাংলা তর্জমা কর্যে ইংরেজী ব’লতাম। আমাদের কাছে কথাটা অসম্ভব ঠেকেছিল । পরে বুঝলাম ইংরেজীভাষার অল্প বিদ্যাতেও ঐ ভাষায় ভাষা, এমন কি স্বপ্নে ইংরেজী বল, অসম্ভব নয় । তা না হ’লে ইংরেজের ছেলেরা, যারা ইংরেজী শেখে নাই, দু-লাইন লিখতে গেলে দুগণ্ডা ভূল করে, তারা করে কি ? অশুদ্ধ ইংরেজীই তাদের মাতৃভাষা। শৈশব হ’তে আমরাও ইংরেজী প’ড়তে প’ড়তে লিখতে লিখতে ব’লতে ব’লত, ইংরেজীতে ভাবি, স্বপ্নে ও ইংরেজী আওড়াই । এই অভাসে আমরা বিজাতীয় হয়ে পড়েছি। কারণ দেহের দাসত্ব ঝেড়ে ফেলতে পারা যায়, মনের দাসত্ব মনে গাঁথা থাকে । এখানে shall কি will ব’সবে, এখানে idiom ঠিক হ’ল, না ভুল হ’ল, দেখি ইংরেজের কি বলে,—এই চিন্তা বাল্যকাল হ’তে অষ্টপ্রহর করতে ক’বৃতে, ইং রঙ্গকেই শাস্ত্রকার মানতে মানতে, যা কিছু করি, যা কিছু ভাবি, শাস্ত্রকারের মূপের পানে চাই। ইংরেজ বলেন, আমরা কম প্রস্তাব initiative) করতে পারি না। এই অক্ষমতার মূল এখানে। আমাদের যে বুক দুর্দুর করে, কি জানি বিলাতী শাস্ত্রে কি বলে। আমরা গবেষণা ক'বৃতে ব’লে আগে দেখি, কোন বিদেশী কি বলেছেন। আমরাও যে মানুষ, আমরাও যে পারি, এই আত্ম-প্রত্যয় গেলে মেযত্ব ঘটে। কে কি বলে, কে কি করে, জানতে দোষ নাই । বরং যত জানা যায়, তওই ভাল। জাপানী ভাষা শিখলে, জাপানী আচার-ব্যবহার জানলে, হিত হতে পারে। অনেক শিক্ষিত ইংরেজ জমানভাষী, সাহিত্য, বিদ্যা জানেন, কিন্তু মনে খাটি আছেন । ইস্কুলে ও কলেজে ছেলেদিকে বাংলায় পাঠ দিলে তারা সহজে বোঝে, ভাল বোঝে, একথা কলেজে ঢুকবার নয় দশ বছরেই বুঝেছিলাম। কিন্তু, নিরুপায়। কলেজে ধুতি চলবে না, বাংলা চলবে না। ছাত্রের নির্বোধ নয়। এ দুটা তুচ্ছ কথা নয় অবরতা-বুদ্ধির (inferiority complex ) তুচ্ছ উপাদান নয়। ছাত্রের বাংলা, সংস্কৃত, ফাসী, আবী পরীক্ষা হ'বে, প্রশ্ন কর ইংরেজীতে, উত্তর লেখ ইংরেজীতে। কলিকাতা-বিশ্ব-বিদ্যালয় ইংরেজীতে সংস্কৃত ব্যাকরণ লেখালেন, পড় সে ব্যাকরণ, উপক্রমণিকা চলবে না। (এখন শূন্‌ছি সে ইংরেজীর বাংলা অনুবাদ হয়েছে । ) বাংলাকে ইংরেজী কতদিকে আক্রমণ ও গ্রাস করছে, চক্ষুষ্মানকে বলতে হবে না। বদ্ধমানে সাহিত্য-সম্মেলন আমাকে দিয়ে ইস্কুলে কলেজে বাংলায় পাঠ দিবার প্রস্তাব করিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ণগোচর করা হয়েছিল । সে বোধ হয় পূনর ষোল বছর হবে। এখনও কিন্তু বিচারণার বিরাম নাই। মজার কথা এই, যারা এই ব্যবস্থা সমর্থন ক'বৃছেন, তারা ব’লছেন, বাংলাকে শিক্ষার “दाक्ष्म' সিনাবাদের দৈত্য ঘাড়ে চেপে জাকড়ে বসেছে, "ন" বললেই বাহনত্ব ঘুবে না। medium শব্দের বাংলা ধে চাই, “বাহন’ ৰে বলতেই কর ।