পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“সত্যম্ শিবম্ সুন্দরম্” “নায়মাত্মা বলহীনেন লভ্যঃ” ৩০শ ভাগ (২য় খণ্ড) কার্ত্তিক, ১৩৩৭ ১ম সংখ্যা ।

সত্ত্ব রজঃ তমঃ শ্ৰীগিরীন্দ্রশেখর বসু কাচং মণিং কাঞ্চনমেক সুত্রে গ্ৰথস্তি মুঢ়াঃ কিমুতত্র চিত্রম্ অশেষবিৎ পাণিনিরেক সূত্রে শ্বানম্ যুবানম্ মধবানমাহ।

মূঢ় ব্যক্তি কাচ, মণি ও কাঞ্চন একই সূত্রে গাঁথে— ইহা বিচিত্র কি? অশেষবিৎ পাণিনি একসূত্রে কুকুর সুবা ও ইন্দ্রের উল্লেখ করিয়াছেন । শ্বন্ (কুকুর), যুবন্ (যুবা) ও মঘবন্ (ইন্দ্র ) শব্দকে পাণিনি যে একবর্গে ফেলিয়াছেন তাহার কারণ অবশ্য এই যে ইহাদের শব্দরূপ একই নিয়মে নিম্পন্ন হয়। কি উদ্দেশ্য লইয়া পদার্থের জাতি নির্ণীত হইয়াছে জানা না থাকিলে অনেক সময়েই শ্রেণীভুক্তি বিসদৃশ মনে হইতে পারে । শ্রেণী বিভাগ বা জাতি নির্ণয়ের কতকগুলি লক্ষণ আছে। এই সকল লক্ষণ পাওয়া না গেলে বুঝিতে হইবে যে জাতি-নির্ণয় ঠিক হয় নাই । বিভিন্ন উদ্দেশ্য লইয়া একই পদার্থ-সমষ্টির বিভিন্ন প্রকারের জাতি বিভাগ হইতে পারে। গহনা তৈয়ারি করা উদ্দেশ্য হইলে ধাতুর জাতি-বিভাগ একপ্রকার হইবে, আবার অস্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণ হিসাবে ধাতুর উপযোগিতা নির্ণয় করিতে হইলে বিভাগ অন্যরূপ হইবে। অমরকোষে যে-সমস্ত শব্দ এক পর্য্যায়ে আছে, পাণিনিতে তাহারা ভিন্ন পর্যায়ভুক্ত হইয়াছে। অতএব জাতি-নির্ণয় ঠিক হইল কি না বিচার করিতে হইলে জাতি-বিভাগের উদেহু স্মরণ রাখিতে হইবে। যে পদার্থ-সমষ্টির জাতি বিভাগ করা হইতেছে তাহার অর্ন্তভুক্ত একটি পদার্থও বাদ দেওয়া চলিবে না। অপরপক্ষে জাতির অন্তর্গত বিভিন্ন বিভাগের ব্যাপ্তির সীমা পরস্পর হইতে পৃথক রাখিতে হইবে। যেমন ধাতুর জাতি বিভাগ করিতে বসিলে লৌহ বা অন্য কোন ধাতুকে বাদ দিলেও চলিবে না অথবা ধাতুকে বহুমূল্য অল্পমূল্য ও স্বৰ্দ্দশ্য—এইরূপ তিন পর্যায়ে ফেলাও চলিবে না। কারণ যে ধাতু বহুমূল্য বা স্বল্পমূল্য তাহা সুদৃশ্যও হইতে পারে। মূল্য ও সুদৃশ্যতার ব্যাপ্তি পরস্পর হইতে সম্পূর্ণ পৃথক নহে। বিভাগে অভিব্যপ্তি দোষ ঘটিছে। বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যাপ্তি মনে না রাখিলে জাতি-বিভাগ দুষ্ট হইবে। জাতি বা শ্রেণী বিভাগের উপরি-উক্ত সূত্রগুলি মনে রাখিয়া প্রকৃতির গুণত্রয়ের বিচার করা যাইতে পারে।