পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سیاه مز প্রবাসী—ফাল্গুন, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ; ২য় খণ্ড খাতাপত্রে গল্প, কবিতা লিখিত-কাঞ্জ ফাকি দিয়া অন্য বই পড়িত। কিন্তু অপর্ণার মৃত্যুর পর হইতে সে দশগুণ খাটিতে লাগিল, সকলের কাছে কাজের-তাগাদা করিয়া বেড়ায়, সারাদিনের কাজ দু’ঘণ্টায় করিয়া ফেলে, তাহার লেখা চিঠি টাইপ করিতে করিতে নৃপেন বিরক্ত হইয় 河舟續1 ** পূর্ণিমা তিথিট.অপর্শ্ব ছাদের আলিসার ধারে লিড়াইয়া, এই তো গভঃকোজাগরী পূর্ণিমার রাত্রিত্বে... লক্ষ্মীর মত মহিমময়ী, কি স্বন্দর ডাগল্প চোখ দুটি কি স্বন্দর মুখত্র? অপুর মনে হইয়াছিল—ওর ঘড়ি ফেরাবার ভঙ্গিটা যেন রাণীর মত এক এক সময় সন্ত্রম আসে মনে । অপর্ণ হাসিয়া' বলে-আমার যে লজ্জ করে, নইলে সকালে তোমায় খাবার করে দিতে ইচ্ছে করে, আমার ছোট বোনও লুচি ভাঙ্গতে জানে না,—সেজ খুড়ীম ছেলে সামূলে সময় পান না-মা থাকেন ভাড়ারে, তোমার থাবারকষ্ট হয়—ন "অপু ডাকিয় বলে—ও নিধুবাবু, এদিকে আহ্বন একবার, রেকর্ড থেকে আর বছরের নাথের বাগান বস্তীয় ফাইলট নিয়ে আস্থন তো । -- ", , * **, *. ম্যানেজার একদিন ডাকিয়া বলেন -অপূৰ্ব্ববাবু, আপনার শরীরট বড় রোগ হয়ে পড়ছে; আপনি দিনকতক একটু হাওয়াট বলে—আমাদের পুরীর বাড়িটা এখন খালি আছে, যদি সেখানে যেতে চান্‌চিদত যলুন; মার্সথানেকের জন্ঠে ঠিক করে দি-নায়েবকে ন৷ হয় একখানা পত্র লিখে দি, কি বলেন ? : - আঃ ! কেন ওসব কথা বারবার মনে করিয়৷ দেওয়া ! সে তো এখানে বেশ কাজ করিতেছে, কাহারও তৈ৷ কোনো অনিষ্ট করিতেছে না-এক পাশে চুপ করিয়া বসিয়া আছে, প্রাণপণে খাটিয়া যাইতেছে—তৰে কেন ও সব ? - . . . . .” কিন্তু পিন্টর মায়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে অপর্ণার কথা হয়, তখন ভাল লাগে । মনে হয় অপর্ণায় কথা এ আরও বলুক, আরওঁ শুনি কোনো সাধনার কি সহায়ভূভির কথা শুনিতে ইচ্ছা করেন, শুধু অপর্ণার গুণের কথা-সে তাহার লম্বন্ধে কি ভাবিউ, সে কথা . . - কি বিরাট শূন্যতা-কিযেন এক বিরাট ক্ষতি হইয়৷ গিয়াছে, জীবনে আর কখনও তাহ পূর্ণ হইবার নহে-- কখনও না, কাহারও স্বারা না.সম্মুখে বৃক্ষ নাই, লতা নাই, ফুলফল নাই—শুধু এক কক্ষ, ধূসর বালুকাময় বহু বিস্তীর্ণ মরুভূমি ! মাসখানেক পরে পিণ্ট র.ম চোখের জলে ভাসিয়া বিদায় লইল, পিন্টর বাবা বেশ সবল হইয়া উঠিয়াছেন, দুইজনেই আত্মীয়ের মত নানা সাস্তুনার কথা বলিয়া গেল । পিণ্ট র মা বলিল -কখনও ভাই দেখিলি, ঠাকুর-পো । আপনাকে সেই ভাই-এর মত পেলুম, কিন্তু করতে পারলুম না কি? --দিদি বলে যদি মাঝে মাঝে আমাদের ওখানে যান—তবে জানব সত্যই আমি ভাই পেয়েচি । অপু সংসারের বহু দ্রব্য পিন্টদের জিনিষপত্রের সঙ্গে বাধিয়া দিল ডাল, কুলো, ধাম, বঁটি, চাকী, বেলুনা পিন্টর মা কিছুতেই সে সব লইতে রাজী নয়— অপু বলিল—কি হবে বৌদি, সংসার তো উঠে গেল, ওসব আর হবে কি, অন্য কাউকে বিলিয়ে দেওয়ার চেয়ে আপনার নিয়ে যান, আমার মনে তৃপ্তি হবে তবুও। পিন্টা চলিয়া গেলে বাসা যেন একেবারে শূন্ত হইয়া পড়িল সন্ধ্যা বেলাট এক কি করিয়া কাটানে। যায় ? অপর্ণার চিস্তায় কাটান যায় বটে, কিন্তু তাহতে এক এক সময় যেন বুকে কিসে এফোড়ে ওফোড় করিয়া তীক্ষ্ণ শলা চালাইয় দেয়-ক্ষণকালের জন্য দেহ মন অসাড়, অবশ করিয়া ফেলে ; সুতরাং নির্জনে কাটান ঐকরূপ-অসম্ভব । মায়ের মৃত্যুর পর তো এতট। হয় নাই ? মায়ের কথা তবু ভাবিতে পার। যাইত, ইহার কথা আদেী মনে আনিতে পারা যায়না কেন ? 赛 赛 蝶 সারা শীতকাল ও গ্রীষ্ম কাল ধরিয়া শ্বশুরবাড়ি হইতে কস্ত বার লোক আসিল । অপর্ণার মায়ের চক্ষু ছুটি কাদিয়া কাদিয়া অন্ধ হইবার উপক্রম হইয়াছে, সেকি একবার যাইবে না ?:অপু হঠাৎ নিষ্ঠুর হইয়। ওঠে—সে চিরকাল কোমল হৃদয়, অপরের দুঃখ কখনও সহ করিতে পারে না, কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়, অপূর্ণার মায়ের কণ্ঠ শুনিয়া সে এতটুকু বিচলিত হইল না।