পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হওয়াতে অভ্রান্ত শাস্ত্র বস্থিয়া পরিগণিত হইল। শাস্ত্র বাক্য কখনও ভ্রান্ত হইতে পারে না এৱং শাস্ত্রনিহিত তথ্যের আবার উন্নতি কি এই ধারণা ক্রমেই বদ্ধমূল হইয় গেল। এখনও পৰ্য্যন্ত দেখিতে পাই যে যদি কেহ কোন আধুনিক রসায়নের নূতন তথ্য—যাগ চরক, শুশ্ৰুত, বাগভট প্রভৃতি গ্রন্থে নাই কিম্বা যাহা সেই সকল গ্রন্থনিহিত তথ্যের সহিত মিলে না—কোনও আয়ুৰ্ব্বেদ ব্যবসায়ীর গোচরে আনিতে সাহস করেন, তাহা হইলে তিনি সে তথ্যের প্রতি মনোযোগ ত করিবেনই না পরস্তু তাহাকে শাস্ত্রদ্বেষী প্রভৃতি বিশেষণে বিভূষিত করিতে হয়ত ভূলিবেন না। যখন প্রাচীন বাক্য অভ্রান্ত তখন তাহ নূতন পরীক্ষা দ্বারা সপ্রমাণ করিবার চিন্তা ত আসিবেই না। এইরূপে স্বাধীন চিন্তার অভাবে মৌলিক গবেষণা আয়ুৰ্ব্বেদ হইতে বিদায় গ্রহণ করিয়াছে। যতদিন পর্যন্ত আমরা প্রাচীন বাক্যের দোহাই দিয়া নুতন পরীক্ষার দ্বারা প্রাচীন তথ্যগুলির আলোচনা না করিয়া নিশ্চিন্তমনে চৰ্ব্বিত চৰ্ব্বণের আনন্দ উপভোগ করিতে থাকিব ততদিন আয়ুৰ্ব্বেদকে আবার মৌলিক গবেষণা দ্বারা গরীয়ান করিয়া তুলিতে পারিব না। এই সম্বন্ধে স্বয়ং বাগভট তাহার অষ্টাঙ্গহৃদয়ে যাহা বলিয়া গিয়াছেন আশা করি কেহ তাহা অগ্রাহ করিবেন না। তিনি বলিয়াছেন ঋষি প্রণীতে প্রতিশ্চেন্মুক্ত চরকশুশ্রুতে । ভেলাষ্ঠা: কিং ন পঠ্যন্তে তস্মাং গ্রাহং সুভাষিতম্। অর্থাৎ “পূষি প্রণীত বলিয়াই যদি কোনও গ্রন্থ গ্রহণীয় হয়, তাহা হইলে চরক, শুশ্ৰত ভিন্ন ভেল প্রভৃতি ( ভেল, অগ্নিবেশ, জাতুকৰ্ণ, পরাশর, হারিত, ক্ষারপাণি প্রভৃতি ) ঋষিগণের গ্রন্থ পঠিত হয় না কেন ? ইহা হইতে এই প্রমাণিত হয় যে যাহা সুভাষিত (অর্থাৎ যুক্তি ও পরীক্ষা সঙ্গত ) তাহাই গ্রহণীয়।” * - এই স্বাধীন চিন্তার অভাবে দেড়শত বৎসর ইউরোপীয় জাতিদিগের নব্য বিজ্ঞানের সংস্পর্শে আসিয়াও আমরা আয়ুৰ্ব্বেদের রাসায়নিক সংস্কার করিতে পারি নাই। আমরা এখনও যব পুড়াইয়া যবক্ষার, সহস্রবার লৌহকে পোড়াইয়া তিন বৎসরে ফেরিক off:\g (ferric oxide) এবং পারদের সহিত স্বর্ণ ও ছয়গুণ গন্ধক ১৪ প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩১৭ | ১০ম ভাগ । মিশাইয়া “স্বর্ণঘটিত" মার্কিউরিক "সালফাইড" প্রস্তুত করিতেছি । - লৌহ ও পুটিত লৌহ । মাঘ মাসের প্রবাসীতে প্রকাশিত মংপ্রণীত দ্বিতীয় প্রবন্ধে দিল্লীর কুতবমিনারের সন্নিকটে "আলাউদ্দীনের দরোজা” নামক প্রবেশদ্বারের অভ্যন্তরে লৌহের অস্তিত্ব বর্ণিত হইয়াছে। তখন ঐ প্রবেশ দ্বারের নিৰ্ম্মাণকাল নির্ণয় করিতে পারি নাই । ঐ প্রবেশ দ্বার সুপ্রসিদ্ধ আলাউদ্দীন খিলিজি ১৩০৭ অথবা ১৩১৫ খৃষ্টাব্দে নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন । * এই প্রসঙ্গে বলা আবশ্যক যে অধ্যাপক রায় মহাশয় সোমনাথের প্রবেশদ্বারকে প্রাচীন লৌহ শিল্পের নিদর্শন বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। । এই প্রবেশদ্বার সুলতান মামুদ ১০২৪ খৃষ্টাব্দে তাছার দ্বাদশ ভারত আক্রমণ-কালে গুজরাটের বিখ্যাত সোমনাথ মন্দির হইতে লইয়া যান। তাহার বহুদিবস পরে আফগান যুদ্ধের পর ভারতের বড়লাট লর্ড এলেনবারার সময় বিজয়ী ইংরাজ সৈন্য বিজয়চিহ্নস্বরূপ তথা কথিত সোমনাথ মন্দিরের প্রবেশদ্বার সগৌরবে ভারতবর্ষে আনয়ন করেন । এই প্রবেশদ্বার এখন, আগ্রা ফোর্টের ভিতর রক্ষিত হইয়াছে। প্রাচীন সোমনাথের প্রবেশদ্বার চন্দনকাষ্ঠের নিৰ্ম্মিত ছিল, এবং ফারগুসন সাহেব বলেন যে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষায় স্থিরীকৃত হইয়াছে যে কাবুল হইতে আনীত প্রবেশদ্বার সোমনাথের প্রবেশদ্বার নহে কারণ উস্থা দেবদারুকাষ্ঠ নিৰ্ম্মিত। : প্রসিদ্ধ কলাশিল্পবিদ সিম্পসন সাহেব লিখিয়াছেন যে এই দেবদারুকাষ্ঠ নিৰ্ম্মিত প্রবেশ দ্বারে ছোট ছোট লৌহখণ্ড ও কাষ্ঠের দ্বারা ভগ্নস্থানগুলি Coto CTST otzo (“rude repairs are done with যখন এই প্রবেশ দ্বার সোমনাথের প্রবেশদ্বারই নাই, তখন scraps of wood and iron”)

  • Sy A. D., 1315, but another account says that the emperor (Allauddin Khilji) erected them sor himself in A. D. 1307"—Lieutenant Henry Hardy Cole's "Architecture of ancient Delhi.”

t Ray: History of Hindu Chemistry, Vol. 1, p. 84

  1. Appendix D–H. G. Keene's "Agra and its Neighbourhood".

Ahmed says that they were erected in s o ১ম সংখ্যা । ] উহাকে জোড়া দিবার জন্য ব্যবহৃত লৌহখণ্ডকে ভারতের প্রাচীন লৌহশিল্পের নিদর্শন বলা যাইতে পারে না। " পূৰ্ব্ব প্রবন্ধে হীরাকস হইতে পুটত লৌহ (ferre প্রস্তুতবিধি বর্ণিত হইয়াছে। এখানে বলা আবগুক যে বিশুদ্ধ পুটত লৌহ বায়ু হইতে জল আকর্ষণ সেই জন্য উহাকে প্রস্তুত করিয়া বোতলের মধ্যে ছিপি দিয়া বন্ধ করিয়া রাপিতে হইবে । oxide)

  • ČR ( hygroscopic ) !

হরিতাল ভস্ম । পূৰ্ব্ব প্রবন্ধে বলা হইয়াছে যে শ্ৰীযুত বীরেন্দ্রভূষণ অধিকারী ও আমি হরিতাল ভষ্ম লইয়া পরীক্ষা করিতেছি । তাহার ফল এক্ষণে প্রকাশিত হইল। আয়ুৰ্ব্বেদে দুষ্ট প্রকার হরিতাল ভষ্মের উল্লেখ আছে—বংশপত্র ও পিণ্ড । আর্সেনিক সালফাইড, হরিতালের বৈজ্ঞানিক নাম (arse কবিরাজ মহাশয়েরা অার এক প্রকার হরিতাল ও তাছার ভষ্ম ব্যবহার করিয়া থাকেন তাহার nic sulphide) | নাম গোদন্ত হরিতাল। গোদস্ত দেখিতে শ্বেত বর্ণ, বংশ পত্র ও পিণ্ড হরিতাল হরিদ্রাভ। পূৰ্ব্বেই বলা হইয়াছে এই গোদস্ত হরিতাল আদৌ ইরিতাল নহে, ইহা জিপসাম্ কেলসিয়াম **E*Fù, (gypsum calcium sulphate) নামক দৃণমূলক পদার্থ। প্রেসিডেন্সি কলেজের জিওলজির অধ্যাপকও আমাদের পরীক্ষার সমর্থন করিয়াছেন। এই গোদন্ত কি প্রকারে ও কখন হরিতাল বলিয়া প্রসিদ্ধি লাভ করিল তাহ নির্ণয় করিয়া উঠিতে পারি নাই। জর্জ প্লেফেয়ারের দ্বারা অনুবাদিত “তালিফ সরিফে” গোদস্তের উল্লেখ আছে । ঐ গ্রন্থে গোদস্তকে সম্বুল ক্ষার অর্থাৎ আর্সেনিক *Rolfo (white oxide of arsenic) রূপান্তর বলা হইয়াছে। বংশপত্র হরিতালভস্ম কবিরাজ মহাশয়ের প্রস্তুত করেন না কারণ র্তাহাদের ভয় বংশলোপ হইয়া যাইবে। সাধু সন্ন্যাসীর নিকট হইতে আসল হরিতাল ভষ্ম পাওয়া যায় এইরূপ প্রবাদ। আশা করি গোদস্তকে কেহ হরিতাল বলিয়া ব্যবহার করিবেন না,

  • "Soombool Khar the white oxide of arsenic." There are six kinds of this, one named Sunkia, the third Godanta, the fourth Darma, the fifth Huldea"– Talect Sharoes translated by George Playfair, p. 99.
  • Too (pot. carbonate) offs

আয়ুৰ্ব্বেদ ও আধুনিক রসায়ন। > ứ ইহাতে আর্সেনিক বিন্দুমাত্রঞ্চ নাই। একজন প্রসিদ্ধ কবিরাজ আমল্প বলিয়াছেন যে তিনিও গোদস্তকে “মাটি” বলিয়া মনে করেন এবং তিনি উছা কদাচ হরিতাল বলিয়া ব্যবহার করেন না। আমরা হরিতাল ভয়ের যে সমস্ত নমুনা সংগ্ৰহ করিতে পারিয়াছি ঠাঁহার রাসায়নিক বিশ্লেষণের ফল নিম্নে দিতেছি। ১ম নমুনা । একজন কবিরাজ মহাশয়ের নিকট প্রাপ্ত। তাহাতে কেলসিয়াম সালফেট ও পটাশিয়াম সালফেট ভিন্ন আর কিছুই পাওয়া যায় নাই। শেষোক্ত দ্রব্যের পরিমাণ অতি সামান্ত । ২য় নমুনা । ইহা একটা ভদ্রলোক কোনও সাধুর নিকট পাইয়াছিলেন। ইহাও কেলসিয়াম সালফেট মাত্র। ৩ নমুনা। যে কবিরাজ মহাশয় গোদস্তকে “মাটি” বলিয়া জানেন তিনি এই নমুনাট আমাদিগকে দেন। ইহার রাসায়নিক বিশ্লেষণের ফল নিম্নে দেওয়া গেল। ইহাতে বালুকাময় পদার্থ ৫-৭ ভাগ, সম্বুলক্ষার (অক্সাইড অফ আর্সেনিক, white oxide of arsenic) so sto, offs cofrats সলফে এবং অল্প পরিমাণ পোটাসিয়াম সলফেট ਾਂ ইহা হইতে বুঝা যাইতেছে যে তিনি জিপসামকে পোড়াইয় তাহার সহিত সম্বুল ক্ষার মিশাইরা লইয়াছেন। তিনি বলেন যে তিনি ইহা ব্যবহার করিয়া শাস্ত্রোল্লিখিত ফল পাইয়াছেন। এইটি আমরা কবিরাজ মহাশয়দিগকে পরীক্ষা করিতে অনুরোধ করি। মাত্রা অত্যন্ত অল্প হওয়া" প্রয়োজন। ৪র্থ নমুনা । তারিণীকান্ত চক্রবর্তী স্বরস্বতীর প্রদত্ত। তিনি বহুকাল কাশী প্রভৃতি স্থানে বেড়াইয়া - অনেক সাধু সন্ন্যাসীর সেবা করিয়া হরিতালভষ্ম প্রস্তুত করিতে শিক্ষা করিয়াছিলেন। তিনি ভস্ম প্রস্তুত করিয়া আমাদিগকে একটু প্রেরণ করেন। আমরা পরীক্ষা করিয়া দেখিলাম, তাহা অবিকৃত হরিতাল । তিনি সম্প্রতি আরও একটা নমুনা পঠাইয়াছেন তাহার রাসায়নিক বিশ্লেষণের ফল পরে প্রকাগু। ৫ম নমুনা। আমরা রসেন্দ্রসারসংগ্রহের প্রণালী কিঞ্চিৎ পরিবর্তন করিয়া নিজের ভ= প্রস্তুত করি । বংশপত্র হরিতাল গুড়া করিয়া দ্বিগুণ মিশাইয়া পরে ' '

  • রসেলসার সংগ্রহ, তৎ পূং।