পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>b

নিযুজেব মতের আলেচু গোড়া তুলিয়া দি। নিজে একজন জন্মান—১৮৪৪ খৃষ্টযুদ্ধ স্তাঞ্জনিতে লুটজেন নামক স্থানে তাহার জন্ম হয়। বন এবং * লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করিয়া তিনি ব্যাসেলে অধ্যাপন করেন। তাহার স্বাস্থ্য ভঙ্গ श्रुेन। যাওয়ায়, তিনি কৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়া নানা স্থানে ভ্রমণ করেন, এবং মৃত্যুর এক বৎসর পূৰ্ব্বে তিনি উন্মাদ হইয়া যান। ১৯•• খৃষ্টাব্দে তাহার মৃত্যু ঘটে, তৎপূৰ্ব্ব পর্যাপ্ত তাহার ক্ষিপ্তত তাছাকে ত্যাগ করে নাই । নিঝজের শেষ গ্রন্থের নাম Anti-Christ । খৃষ্টধৰ্ম্ম শান্তিবাদী-নিঝজে শক্তিবাদী। খৃষ্টধৰ্ম্ম মৃথকে ইহলোকে পাওয়া যায় না বলিয়া স্থির করিয়াছে, তাহার জন্য এক কল্পিত স্বৰ্গলোক স্বষ্টি করিয়া মানুষকে ভুলাইবার চেষ্ট করিয়াছে। নিজে ইহজীবনের উন্নতির দিকেই সমস্ত চেষ্টাকে প্রয়োগ করিয়া, মানুষকে এমন করিয়া শক্তিমান করিয়া তুলিতে চান যাহাতে আর কোন কল্পিত লোকের জন্ত-লালায়িত হইবার কোন কারণ তাহার থাকিবে না। খৃষ্টধৰ্ম্ম কেবল বলে ত্যাগ কর—তাগের দ্বারা ধৰ্ম্মকে সত্যকে লাভ কর—পার্থিব স্বথ স্বাচ্ছন্দ্য ভোগ অারামের দিক্ হইতে দৃষ্টি করাও—নিঝজে যাহাতে মানুষ এইগুলি পায়, যাহাতে সে পুরাপুরি ভোগী হইয়া উঠিতে পারে এবং তাগের কিছু মাত্র প্রয়োজন অনুভব না করে, তাহার জন্যই মানুষকে সচেষ্ট করিবার সাধনাকে বড় বলিয়াছেন। নিঝ জে বলেন, যে এক সময়ে ধনী দরিদ্রে, উচ্চবর্ণে নিম্নবর্ণে খুব একটা ব্যবধান ছিল, তখন খৃষ্টধৰ্ম্ম এই দরিদ্র, দুৰ্ব্বল, পাপীতাপীর পক্ষ অবলম্বন করিয়াছিল। মুতরাং তাছাদের যে সকল গুণ আছে যথা, নম্রতা, ত্যাগস্বীকার, পাপবোধ, সহানুভূতি প্রভৃতি,—সেই সকল গুণের চর্চাকেই খৃষ্টধৰ্ম্ম মনুষ্যত্বের একমাত্র সাধনা বলিয়াছিল। গৰ্ব্ব, স্বাস্থা, ভোগ, আনন্দ, সৌন্দৰ্য্যবোধ প্রভৃতি মনুষ্যত্বের অন্ত প্রবলতর দিক্‌টি একেবারে বিশ্বত হইয়াছিল, তাহার কারণ এগুলি ধনী সমাজে বেশী দেখা যায়-দরিদ্রদের মধ্যে এ সকল গুণ জাগিবার কোন সম্ভাবনা নাই। নিঝজে বলেন, • বৃষ্টধর্মের এই অপরাধ যে, সে মানবজীপনের পূর্ণতাকে - নিজের ক্ষুদ্র মানদণ্ডে মাপিতে গিয়া খৰ্ব্ব করিয়া ফেলিয়াছে। প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩১৭ [ ১০ম ভাগ । কেবল পাপ, পাপ, কান্না অনুতাপ প্রায়শ্চিত্ত-কেবল জুকীলতাকে প্রশ্রয় দিয়া এমন একটা কৃত্রিম নৈতিকতাকে সে স্থান দিয়াছে, যে জীবনকে স্মৃষ্টি করিবার দিকে, তাহার বিচিত্র দিককে ফুটাইয়া তুলিয়া সামঞ্জন্তে বাধিবার দিকে কাহারও দৃষ্টি নাই। জীবনটাই কিছু নয়—নৈতিকতাই সৰ্ব্বস্ব -এইরূপ একটা ভ্রান্ত একদেশদর্শিতায় ইউরোপীয় বুদ্ধি কলুষিত হইয়া গিয়াছে। নিজে তাই এটা ভাল এবং এটা মন্দ–এই বিধি এবং এই নিষেধ-এই দ্বৈতমূলক নীতিবোধকে অবজ্ঞ করিয়াছেন। জীবনের পূর্ণতার দিক হইতে দেখিলে ভালমদের চুলচেরা বিচার অসম্ভব। টুকর টুকরা করিয়া অথও কোন পদার্থকে দেখিতে পাওয়া যেমন মূৰ্খতা, জীবনের মত এত বড় জিনিসকে বিধিনিষেধের মধ্যে খণ্ডিত করাও তেমনি অপরাধ। পূর্ণতার হিসাবে বিচ্ছিন্নতা মাত্রেই পাপ এবং পাপ মানেই আংশিকতা, অসম্পূর্ণত। নিজে সেই কারণে ত্যাগ ও বৈরাগাকে নিন্দ করিয়াছেন। তিনি বলেন মানুষকে ভোগ করিতে নিষেধ করিবার কোন মানে নাই—মানুষ ভোগই করিতে জানে না । সে ধৰ্ম্মের শাসনে ক্রমাগত তাহার চিত্তের বিকাশকে সঙ্কুচিত করিতে করতে এমন অবস্থায় আসিয়া পড়িয়াছে, যে এখন তাছাকে বিচিত্রভাবে জীবনকে লাভ করিবার কথা বলিলে সে তাছার অর্থই বোঝে না। তাহার সমস্ত ইন্দ্রিয়, সমস্ত প্রবৃত্তি, সমস্ত মানসশক্তি মুন্ড্রাইয়া গেছে—সে কেবল জানে এই বিধি এবং এই নিষেধ, বাহিরের কৃত্রিম মানদণ্ড অনুসারে আপনাকে থৰ্ব্ব করিতেই তাহার সমস্ত চেষ্টাকে সে নিযুক্ত রাখিয়াছে। সুতরাং সমাজের দাবী অনুসারে একটা গড়ের উপর মর্যাল অথবা নৈতিক মানুষ হইতে সে সক্ষম হইয়াছে বটে কিন্তু তার উপর কিছুই হয় নাই । তাহার ব্যক্তিত্বের কোন চেহারা নাই। এমন করিয়া ব্যক্তিত্বকে স্বাধীন উপভোগের মধ্যে ফুটাই তোলা চলে কিনা সেও একটা বিচাৰ্য্য বিষয়। কারণ সমাজ বলিয়া একটা পদার্থ আছে। - অনেক লোকের মধ্যে একটা স্থিতি ও সামঞ্জস্ত, অন্ন বস্ত্র শিক্ষা স্বাস্থ্য ধৰ্ম্ম প্রভৃতি নানা প্রয়োজন মিটাইবার জন্ত রক্ষা করা দরকার হয়—সমাজ সেই লোকস্থিতি রক্ষার্থ স্বল্প । >、 "R"sl 、 --১৮:০৮, ২৫ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি)~---------------------------------------- অথচ অনেককে একত্র করিতে গেলেই ব্যক্তির দিকে ষোল আনা ঝোক দেওয়া সম্ভপে না । মানুষকে সংযত করিতেই হয়—নিয়মের বশবৰ্ত্তা করিতেই হয়। নিঝজে বলেন, ব্যক্তিত্বকে এমন করিয়া ধৰ্ব্ব করা চলিবে না। সমাজকে না মানিলে সমাজ তো তাহার প্রতিশোধ লইবেই, কিন্তু সেইটাতেই তো জীবনের বড় বিকাশ ঘটিবার সম্ভাবনা বিপদ, বাধা, ক্লেশ, দারিদ্র্য এ সমস্তকে অতিক্রম করিবারইহাদের রসকে পুরাপুরি গ্রহণ করিবার, হজম করিবার সাহস জীবনে থাকা চাই । ভালমন্দ, পাপপুণ্য,—এ সমস্ত লইতেই হইবে-কারণ জীবনটা যে একটা স্মৃষ্টির ব্যাপার— সেতো একটা সামাজিক প্রয়োজন সাধনের উপলক্ষীভূত ব্যাপার নয় । সেই স্বষ্টির দিক্ দিয়া কজন লোক জীবনকে দেখে ? হয়ত বেশ নৈতিক জীবন অনেকেই যাপন করে—কৰ্ত্তব্যনিষ্ঠ, ' সৎ, ধৰ্ম্মভীর জীবন অনেকেরই—কিন্তু জীবন নাই—আনন্দ নাই-ব্যাপকতা নাই-গভীরতা নাই, সকল দিকের পূর্ণ একটি বিকাশ নাই। সামাজিক কৰ্ত্তবা, অর্থোপাৰ্জ্জন, পরিবার প্রতিপালন, ধৰ্ম্মর অনুশাসন মানিয়া চলা, ও পাপ পাপ করিয়া অনুশোচন!—কিম্বা বড়জোর বই পড়িয়া দিবাস্বপ্ন দেখা ও গোটাকতক বুলি আওড়ানো —অধিকাংশ জীবন এইরূপ কৃত্রিমতায় ও আংশিকতায় অতিবাহিত। টুক্র টুকরা জীবন--এইটে না এবং ওটা না। সমস্ত ই বলিবার যে বৃকভর আনন্দ ও আশা তাহা কুত্রাপি দেখা যায় না। আমার জীবন একটী কাব্য, একটি রচনা, একটি ব্রহ্মাও, তাহাতে সমস্ত বাসনা, বেদনা, আনন্দ, ধৰ্ম্ম, সৌন্দর্য ও মঙ্গল—সমস্তই গ্রথিত হইয়া গেছে কোন অঙ্গই বাদ পড়ে নাই—নিজের জীবনের ইহাই আদর্শ। নিজে এইরূপ মানুষকে অতিমানুষ আখ্যা দিয়াছেন, এবং এই অতিমানবকে অভিব্যক্ত করিয়া তোলা আধুনিক কালের একটিমাত্র কৰ্ত্তব্য বলিয়া স্থির করিয়াছেন। কিন্তু কি উপায়ে এ অভিব্যক্তিটি অগ্রসর হইবে, তাহা তিনি কোন জায়গায় নির্দেশ করেন নাই। তাহার শিষ্যবর্গের মধ্যে কেহ কেহ একটা পন্থার কথা উল্লেখ করিয়াছেন। একটি হইতেছে বিবাহ সম্বন্ধে। তাহার সংকলন ও সমালোচন—শক্তির আদর্শ এবং শান্তির আদর্শ। - ునా বলেন, বিবাঙ্গ এমন হওয়া উচিত, যাহাতে সস্তানসস্ততি কোন মতে দুর্বল ও দুষ্ট না হইতে পারে। অভিব্যক্তিতে যে প্রকার প্রাকৃতিক নিৰ্ব্বাচনে ক্রমেই সুন্দর সুন্দর বৈচিত্র উৎপাদিত হইতে থাকে, সন্তান উৎপাদন সম্বন্ধেও' সেই প্রণালী অবলম্বন করা উচিত, ওঁহি হইলেই মানুষ সব দিক দিয়া খুব একটা বলিষ্ঠ, শক্তিশালী ও সম্পূর্ণ मान्नुश श्ठेग्ना डेटिङ •ाग्रिएद । নিঝজের কথা শেষ করলাম। এবার বইমের কথা উপস্থিত করা যাক। নিজের কথাৰ ঠিক উত্তরটি বইমের মধ্যে পাওয়া যায়। দুজনে দুটি ভিন্ন দিক ধরিয়াছেন। नहेcम द८णन cय छानिzड क्रिॉब्राझे भाशय ६८-६ञ्च भ८षा পড়িয়া গিয়াছে, সমস্ত জানাই দ্বন্দ্বমূলক। ঈশ্বরকে অসীম বলি, অথচ আমরা সসীম, ঈশ্বর স্থানকালের দ্বারা আবদ্ধ নছেন বলি, অথচ আমরা তাহার বাহিরে চিন্তা করিতেই পারি না। অথচ মানবভাষায় যখন ঈশ্বরকে আমরা ধ্যান করি, ধারণা করি, তখন সসীমভাবেই করি, যদিচ চিন্তায় তাহার উল্টা কথা ভাবি—মুতরাং এই বৈপরিত্য মানুষের সমস্ত বিষয়ে লাগিয়াই আছে। অতএব অদ্বৈততত্ত্ব স্বীকার করিলেও, আমাদের সঙ্গে ঈশ্বরের দ্বন্দ্ব যে ঘুচে না তাহ স্বম্পষ্ট। সত্তা এক, অথচ স্বষ্টি মানেই সত্তা এবং প্রকাশ হই। “আমি আছি” মানেই অথও সত্তা আছেন এবং তার মধ্যে আমার একটা বিশেষ প্রকাশ আছে। এই দুই বস্তুত স্বতন্ত্র নয়, ঈশ্বরের কাছে এ দুই নাই—কিন্তু আমাদের কাছে আছে--মুতরাং এ দ্বন্দুকে উড়াইয়া দিয়া অদ্বৈতের কোন প্রতিষ্ঠা সম্ভবে না। মুতরাং স্পষ্টই বুঝা যাইতেছে যে আমার ইচ্ছা এবং ঈশ্বরের ইচ্ছ। এ দুই ইচ্ছায় মিলিয়া এই স্বষ্টি—এই দ্বৈতবোধ । নহিলে জ্ঞানে এ দ্বন্দ্ব হইবার কোন কারণ ছিল না—জ্ঞানের ফুরণ একটি অখও ভাব হইতে জন্মিতেছে যাহা মূলধারণারূপে আমার ভিতরে ভিতরে রছিয়াছেই । কিন্তু যেখানে ইচ্ছা আছে, সেইখানেই জ্ঞানের অদ্বৈতের মধ্যেও দ্বৈতবুদ্ধি প্রবেশ করিয়া জ্ঞানকে মৃদ্ধ বিভ্রাত্ত করিয়া দিতেছে। ঐ ইচ্ছাটাকেই পাপ বলা যায় । ওটা অভাবাত্মক অথবা ঋণাত্মক—ধনাত্মক নয়। ঐ পপটাই দুই করিয়া রাখিয়াছে—জোড় মিলিতে দিতেছে না। ’