পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२३ e তোসল যে প্রসিদ্ধ স্থান ছিল তাহা নানাদিক্ হইতে জানা যায় । পুরাণাদিতে তোসল জনপদ ও তাহার অধিবাসিগণের উল্লেখ আছে। মৎস্যপুরাণের ভুবনকোষে তোসল বিন্ধ্যপৃষ্ঠস্থিত জনপদসমূহের মধ্যে উক্ত इहेब्राप्झ– তোসলাঃ কোসলাশ্চৈব ত্রৈপুরা বৈদিশা স্তধা ৷ এতে জনপদাঃ খ্যাত বিন্ধ্যপৃষ্ঠনিবাসিনঃ ” ভারতীয় নাট্যশাস্ত্রে ডোসলকে কলিঙ্গের একটি বিভাগ বলিয়া উল্লেখ করা হইয়াছে— "কোসলাঃ তোসলাশ্চৈৰ কলিঙ্গ যাচ মোসলাঃ ।” পরবর্তীকালেও ডোসলের কথা জানা যায়। গুপ্তান্ধে শিবরাজের একখানি তাম্রশাসনে দক্ষিণ-তোসলির কোন গ্রাম দানের কথা আছে ৷ রাখালদাস ইহাকে অশোকের মৃত্যুর ৮৬৬ বৎসর পরে বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। কিন্তু বৰ্ত্তমান সময়ে গুপ্তাক বিক্রমসংবতের সহিত ঐক্য করার চেষ্ট হইতেছে ; তাহ হইলে উহা আরও পূর্বের বলিয়া মনে করিতে হয় । তোসলির দ্বিতীয়বার উল্লেখের কথা রাখালদাস বলেন যে, শুভাকরের তাম্রশাসনে উত্তর-তোসলির দুইখানি গ্রাম দান উপলক্ষে জানা যায়। ইহার সময় তাহার মতে অশোকের মৃত্যুর ১০৫০ বৎসর পরে। বেণীমাধব বড়ুয়া বলেন যে, গৌড়ৰ্বাহ নামক কাব্যে একজন বৌদ্ধ তত্ত্বাম্বেষীর দক্ষিণ দেশ পরিভ্রমণের বিবরণে তোসলের সর্বগ্রাম নামক স্থানের উল্লেখ আছে। বড়ুয়া মহাশয় এই তোসলকে অশোকের তোসলিনগরী বলিয়৷ :অমিত তোসলের অন্তর্গত বলেন।ণ অশোকের পূৰ্ব্বেণ্ড তোসলির প্রসিদ্ধি থাকায় তিনি এইখানেই তাহার অনুশাসন উৎকীর্ণ করিয়াছিলেন, এইখানে তাহার কোন কুমারও অবস্থিতি করিতেন । কাজেই তখন এই তোসলিই কলিঙ্গের রাজধানী ছিল ՀԵ Շ

  • History of Orissa, Vol. I t Udayagiri-Khandagiri Cave Inscriptions.

ఏకp5ళిు বলিয়াই মনে হয়। এ কথা আমরা পূৰ্ব্বে বলিয়াছি। অশোকের সময়ে ধৌলি বা তোসলির পর সমাপ নামে কলিজের আর একটি প্রধান নগর ছিল। জৌগড়-লিপি এই সমাপার মহামাত্রদিগকে উদ্দেশ কারয়া লিখিত । কিন্তু তোসলিতে কুমার অবস্থান করায় সমাপাপেক্ষ তাহার গুরুত্ব যে অধিক ছিল তাহাতে সন্দেহ নাই । কাজেই তাহাকেই তৎকালীন কলিঙ্গের রাজধানী বলিয়াই মনে করিতে হয়। আর এই তোসলির নিকটস্থ অশ্বখাম পৰ্ব্বতে অশোক তাহার অঙ্কুশাসন উৎকীর্ণ করিয়াছিলেন । ধৌলির অনুশাসনে পৰ্ব্বতের নামটি নষ্ট হইয়া গিয়াছে, কেবল তাহার সপ্তমী বিভক্তি ‘সি’ মাত্র আছে। জৌগড়ে উহা খপিংগলসি বলিয়া লিখিত থাকায় কেহ কেহ ধৌলির পর্বতকেও থপিঙ্গল বলিয়া পাঠ করিতে চাহেন। শ্ৰীযুক্ত বেণীমাধব বড়ুয়া মহাশয় ঐ নষ্ট স্থানটিতে চারিটি শব্দাংশ ( syllable ) ছিল বলিয়া উহাকেও খপিংগলই মনে করেন। র্তাহার মতে জৌগড় হইতে এই খপিংগল পৰ্ব্বতশ্রেণী ধৌলি পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত। ইহা ষে তাহার কষ্টকল্পনা তাহাতে সন্দেহ নাই। ধৌলি পাহাড়ের নাম যখন অশ্বখাম বলিয়া জানা যাইতেছে, তখন তাহার প্রাকৃত আকার চারি শব্দাংশে হওয়া অসম্ভব হইবে কেন ? স্বতরাং ধৌলির অশ্বখাম নাম স্বীকার না করিয়া তাহাকে খপিংগল বলিয়া অভিহিত করা যুক্তিযুক্ত নহে। ভাণ্ডারকর এই অশ্বখামাকে অশ্বষ্টমা ( Aswastama ) বলিতেছেন, কিন্তু কিট্রো ইহাকে অশ্বতামা ( Aswatama ) বলিয়াই উল্লেখ করিয়াছেন। ধৌলি পৰ্ব্বতের প্রকৃত নাম যে অশ্বখাম ইহাই স্বীকার করিয়া লওয়া উচিত। আর ধৌলি নামের উৎপত্তি কোথা হইতে হইল তাহাও বিবেচনার বিষয়। সাধারণত: ধবলগিরি হইতে ধৌলি কথার উৎপত্তি বলিয়া মনে হয়। কিন্তু ধৰলগিরি হইতে ধৌলি, কি ধৌলি হইতে ধবলগিরি ইহাও ভাবিয়া দেখিবার কথা। তোসলি হইতে ধৌলি হইতে পারে কি না ভাষাতত্ত্ববিদগণ তাহা বিবেচনা করিয়া দেখিবেন।