পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাতিক এক দেখেন তিনিই যথার্থ দেখেন। এই দুই শ্লোকে সাংখ্য শৰে সাধারণ ভাবে জ্ঞানমার্গই বুঝাইতেছে। সাংখ্যাস্তরগত সংস্কাস নিষ্ঠার কথা বিশেষ করিয়া পরের শ্লোকে বলা হইয়াছে । ৫৬—“কিন্তু হে মহাবাহো, কৰ্ম্মযোগ বিনা সংন্যাসলাভ কষ্টকর। কৰ্ম্মযোগপরায়ণ সাধক অচিরে ব্ৰহ্মলাভ করেন।” কৰ্ম্মভ্যাগে ধাতু অগ্রসর থাকে বলিয়া বুদ্ধিস্থির হয় না ও ব্ৰহ্মলাভ কঠিন হয়। এই শ্লোকেও বুঝা যায় সংন্যাসমার্গ বলিলে সাধারণে যাহা মনে করে অর্থাৎ ংসারত্যাগ শ্ৰীকৃষ্ণ তাহা অনুমোদন করেন না। গৃহত্যাগ কখনই আচরণীয় নহে এমন কথা শ্ৰীকৃষ্ণ বলেন নাই । কারণ প্রবৃত্তিভেদে কাহারও কাহারও সংসারত্যাগ বাঞ্ছনীয় হইতে পারে। ৫৭–সংসারে থাকিলেই বন্ধন হইবে এমন কথা ভাবিও না। "যোগযুক্ত, বিশুদ্ধাত্মা, বিজিতচিত্ত, জিতেন্দ্রিয় ও সৰ্ব্বভূত যাহার আত্মাতে উপলব্ধ হইয়াছে এমন ব্যক্তি কৰ্ম্ম করিয়াও লিপ্ত হন না ।” কেবল যে ংস্কাস-মার্গেই সংসার বন্ধন কাটান যায় তাহা নহে, যোগযুক্ত সংসারীরও বন্ধন হয় না ইহাই বলা উদ্দেশ্য। ৫৮-৯—“তত্ত্ববিৎ যোগযুক্ত হইয়া বুঝিবেন যে, তিনি অর্থাৎ তাহার আত্মা কিছুই করিতেছেন না । স্বভাববশে ইক্রিয়গণ নিজ নিজ বিষয়ে প্রবদ্ভিত হইতেছে ও তাহার বশেই তিনি দেখিতেছেন, শুনিতেছেন, স্পর্শ করিতেছেন, স্বাণ করিতেছেন, আহার করিতেছেন, গমন করিতেছেন, ঘুমাইতেছেন, শ্বাস ফেলিতেছেন, কথা বলিতেছেন, মলমূত্রাদি ত্যাগ করিতেছেন, গ্রহণ করিতেছেন, চক্ষু উন্নীলিত নিমীলিত করিতেছেন এবং এই সকল করিয়াও :তনি নিষ্ক্রিয় আছেন।” এখানে তাবৎ জ্ঞানেন্দ্রিয়ের সাংখ্যযোগে পৃথংলা: প্ৰবদস্তি ন পণ্ডিতা: | একমপ্যাস্থিতঃ সম্যগুগুয়োবিন্দতে কলম্ ॥ ৪ যৎ সাংখৈ প্রাপ্যতেস্থানং তদযোগৈরপি গমাতে। একং সাখোঞ্চ ৰোগঞ্চ য: গগুতি স পঙ্গতি ॥ ৫ সংষ্ঠাসন্তু মহাবাছো দুঃখমাপ্তমযোগত: | যোগযুক্তে মুনিব্রহ্ম ন চিরেণাধিগচ্ছতি ॥ ৬ যোগযুক্তে বিশুদ্ধান্স ৰিজিতার জিতেজিয়ঃ। সৰ্ব্বভূতাতৃতায় কুৰ্ব্বয়পি ন লিপ্যতে ॥ ৭ গীত ৬৯ ও কৰ্ম্মেজিয়ের কাজের কথা বলা হইয়াছে ; উদ্বেগু এই যে, সংস্থাসী হইয়া ইচ্ছাপূৰ্ব্বক সকল কৰ্ত্তব্যকৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিলেও এই সকল কৰ্ম্ম ত্যাগ হয় না। অতএব সংসারত্যাগী সংস্কাণী নিজেকে নিক্রিয় বলিলেও তিনি নিক্রিয় নহেন। যে ব্যক্তি তত্ত্ববিং ও যোগযুক্ত কেবল তিনিই নিক্রিয়। কারণ তিনি বুঝিতে পারেন সকল কার্ধ্যে র্তাহার আত্মা নিলিপ্তই রহিয়াছে ; কৰ্ম্মবন্ধন এড়াইবার জন্য সংসারত্যাগ বৃথা। তত্ত্ববিদের সংসারভাগের কোনই প্রয়োজন নাই। নিজ স্বভাবজাত প্রবৃত্তি যদি তাহাকে সংসারী করে জাহাতে তিনি ক্ষুণ্ণ হন না। ৫।১০—“যিনি আসক্তি ত্যাগ করিয়া ও ব্রহ্মে অৰ্পণ করিয়া কৰ্ম্মসকল করেন, পদ্মপত্র জলদ্বারা যেরূপ লিপ্ত হয় না তিনি সেইরূপ পাপদ্বারা লিপ্ত হন না।” ব্রহ্মে কৰ্ম্ম- , সমর্পণ কাহাকে বলে তাহা বিচাৰ্য্য। তৃতীয় অধ্যায়ে ১৫ শ্লোকে আছে কর্ণের উদ্ভব ব্রহ্ম হইতে এবং ব্রহ্ম অক্ষরপুরুষ হইতে সমুদ্ভূত হইয়াছেন অতএব ব্রহ্ম সৰ্ব্ববিষয়ে পরিব্যাপ্ত। যাহার আত্মোপলব্ধি হইয়াছে, তিনি প্রকৃতিই কাজ করিতেছেন, এই জ্ঞানে প্রকৃত্তিতেই কৰ্ম্মসমর্পণ করেন ও কর্তৃত্বাভিমান রাখেন না। প্রকৃতি ব্রহ্মেরই মায়া শক্তি অতএব প্রকৃতি কৰ্ম্ম করিতেছে বুঝিলে বন্ধে কৰ্ম্মসমর্পণ করা হইল। পরের শ্লোকে এই কথাই বলা হইয়াছে। ৫I১১—“যোগীরা অর্থাং যাহার কৰ্ম্মযোগ অবলম্বন করিয়াছেন আত্মশুদ্ধির নিমিত্ত কেবল শরীর, মন, বুদ্ধি ও ইঞ্জিয়সমূহের দ্বারাই আসক্তিশূন্য হইয়া কৰ্ম্ম করেন" অর্থাৎ তাহদের আত্ম নির্লিপ্ত থাকে। ৫ । ২—“যোগযুক্ত ব্যক্তি কৰ্ম্মফল ত্যাগ করিয়া নৈঠিক শাস্তি অর্থাৎ সংক্সাস-নিষ্ঠ-লভ্য শান্তি প্রাপ্ত নৈব কিঞ্চিৎ করোমাতি যুক্তে মন্তেত তত্ত্ববিৎ । পঙ্গন শুখন পৃশন জিঘ্ৰন্নশ্বনগচ্ছন স্বমন স্বসন ॥ ৮ প্ৰলপন বিশ্বজন গৃঙ্গর স্মিমন্নিমিষনপি। ইক্রিয়াশক্রিয়ার্থে বর্জন্তু ইতি ধারয়ন ॥৯ ব্ৰক্ষণাধার কৰ্ম্মাণি সঙ্গং তত্ত্ব করোতি যঃ। লিপাতে ন স পাপেন পদ্মপত্রমিলাভস। ১৪ কায়েন মনসা বুদ্ধা। কেবলৈরিত্রিরৈপি । যোগিন: কৰ্ম্ম কুৰ্ব্বস্তি সঙ্গং ত্যক্তাক্ষ্মশুদ্ধয়ে ॥১১