পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ ঘটনাবলীর স্থানটির নাম দিয়াছেন বিষ্ণুগ্রাম। বাকুড়া জেলার প্রাচীন শহর বিষ্ণুপুরের নাম একটু বদলাইয়৷ বিষ্ণুগ্রাম নামে বাকুড়া জেলার দৃত, বিষ্ণুপুরের কেল্লা ইত্যাদির বর্ণনা ইহাতে আছে। এই বহির পূর্বভাষে go afogo, “No living person is sketched in this story, and if anyone in India finds his name in it he must please accept my assurance that it is because I never heard of him.” যে-সব উপন্যাস ঐতিহাসিক উপন্যাস বলিয়। বিদিত তাহাতেও ঐতিহাসিক নরনারীর হুবহু ছবি থাকে না, ঔপন্যাসিকের কল্পন। বাস্তব চিত্রে কিছু ধোগবিয়োগ করে । সুতরাং ইহা সত্য, যে, মি: টম্সন কোন জীবিত ব্যক্তির বাস্তব ঠিক্‌ চিত্র এই বহিতে অঁাকেন নাই। কিন্তু আমরা বাকুড়ার মাত্য । সেখানকার ও বদ্ধমান ডিবিজনের কয়েক বৎসর আগেকার কোন কোন উচ্চপদস্থ বাঙালী রাজকৰ্ম্মচারীকে চিনি, উক্ত কোনও রাজকৰ্ম্মচারীর আত্মীয়ের ব্যবস্থাপক সভার সভ্য নিৰ্ব্বাচিত হওয়ার বিষয় জানি, বাকুড়ার মিশনরী কলেজের এক গ্রিন্সিপ্যাল ফুর্ভিক্ষ-নিবারণের জন্য খুব থাটিয়াছিলেন জামি, ঐ কলেজের হাতার পুকুর লইয়া মোকদম হইয়াছিল জানি, এবং আরও অনেক কথা জানি। মিঃ টমসন কি বলিতে চান, ঐ প্রকারের ব্যক্তিসকল ও ঘটনাবলী সম্বন্ধে তাহার বহিতে যাহা কিছু লিখিত হইয়াছে তাহা সম্পূর্ণ র্তাহার কল্পনাপ্রস্থত এবং বাস্তবের সহিত তাহার যতটুকু সাদৃত বা মিল আছে তাহ আকস্মিক ? তিনি কি বলিতে চান, তিনি ঐ সকল ব্যক্তির নাম কখনও শুনেন নাই ? মি: টম্সনের একটা ভুল ধারণা আছে, যে, তিনি এতই চালাক, যে, সবাইকে র্তাহার কথা বিশ্বাস করাইতে পারিবেন। মহাত্মা গান্ধীর বর্ণাশ্রম মহাত্মা গান্ধী অনেকবার বলিয়াছেন, তিনি বর্ণাশ্রমে বিশ্বাস করেন। কি অর্থে উহাতে বিশ্বাস করেন, সে-বিষয়ে তাহার সহিত কখনও আলোচনা হয় নাই, বিবিধপ্রসঙ্গ—আলবেয়ার টোম৷ శ్రీశ్రీ তাহার কোন লেখাতেও উহার বিশদ ব্যাখ্যা পড়িয়াছি বলিয়া মনে পড়িতেছে না । যাহা হউক, সাধারণতঃ লোকে বর্ণাশ্রম বলিতে যাহা বুঝে, তাহার বর্ণাশ্রম ঠিক তাহা নহে। কারণ, তিনি বৈশ্ব হইয়াও এবং সন্ন্যাস গ্রহণ ন করিয়াও ধৰ্ম্মোপদেশ দিয়া থাকেন ( অবশ্য অন্যায় কিছুই করেন না ), মেথরজাতীয়া একটি বালিকাকে পোস্থ্যকন্তু লইয়া তাহার সঙ্গে ভোজন করেন, আব্বাস তৈয়বঞ্জীর সহিত পুনঃপুনঃ ভোজন করিয়াছেন, নিজের এক পুত্রের সহিত ব্রাহ্মণ বা জগোপালচার্য মহাশয়ের কন্যার বিবাহসম্বন্ধ স্থির করিয়া রাখিয়াছেন, ইত্যাদি। তিনি তাহার নিজের ব্যাখ্যা অনুযায়ী বর্ণাশ্রমে যেমন বিশ্বাস করেন, আমরাও সাধারণ মতযু হইলেও আমাদের ব্যাখ্যা অনুসারে বর্ণাশ্রম মানি । তাহার আলোচনা পরে কোন সময়ে করিব । আলবেয়ার টোমা ফরাসী সোশ্যালিষ্ট আলবেয়ার টোম মহাশয় সম্প্রতি পরলোকগমন করিয়াছেম । তিনি জেনিভায় ইণ্টারন্যাশুন্যাল লেবার আপিস ১৯১৯ সালে স্থাপিত হইবার পর হইতে এ পর্য্যন্ত উহার ডিরেক্টর বা প্রধান পরিচালক ছিলেন। তিনি সব দেশের শ্রমিকদের অকপট বন্ধু বলিয়া বিদিত। কলকারখানার শ্রমিকদের কল্যাণার্থ যে-সব আন্তর্জাতিক চুক্তি হইত, তাহা যাহাতে সকল জাতি গ্রহণ করে, তাহার জন্য তিনি সৰ্ব্বদা চেষ্টিত থাকিতেন। মৃত্যুকালে তাহার বয়স ৫৪ বৎসর হইয়াছিল। ১৯২৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেনিভায় র্তাহার আপিসে তাহার সহিত যখন আমার কথাবাৰ্ত্তার সুযোগ হয়, তখন তাহাকে সুস্থ সবল দেখিয়াছিলাম । তিমি অকালবৃদ্ধ এরূপ মনে হয় মাই। অবশ্য তাহাকে খুব পরিশ্রম করিতে হইত। তাহার জায়গায় কে ডিরেক্টর নিযুক্ত হন, দেখা যাক। লীগ অব নেশ্যন্সের প্রধান পদগুলি প্রায় ইংরেজ ও ফরাসীরা দখল করিয়া থাকে ।