পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

उछापटतः। কষ্টিপাথর-আধুনিক বঙ্গসাহিত্যে হাস্যরস هو وايا আধুনিক বঙ্গসাহিত্যে হাস্যরস শ্ৰীঅতুলচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় আলঙ্কারিকের বলেন বিভাব, অনুভাব, সঞ্চারিভাব প্রভৃতি কয়েকটি ভাবের সমষ্টির নাম রস। রদ কথাটার কোনও ভিন্ন অর্থ নাই । রস আবায় নয় রকমের হাস্যরস সেই নব রসের একটি ।” পাগলা-বোর। ফেয়ার, সাহার। প্রভৃতির কথাই ধরা যাক । হাসি ও কান্না যেন দুইটি যমজ বোন -তায় এক সঙ্গে চলে । ললিতকুমারের রচনার ভেতর এই জিনিষটির সন্ধান পাই । শক্তিশালী লেপক হাসি ও কান্না এক সঙ্গে গেঁথে গেথে তার কল্পনাকে এই কয়টি মালায় পরিণত করেছেন। গভীর বিষয়গুলিকেও তিনি হাস্যরসাত্মক রচনার ভেতর দিয়ে অতি নিপুণভাবে বুলিয়ে দিয়েছেন।” ললিতকুমার ছিলেন হাস্যরসের ফোয়ার, পাগল ঝোরার জলোচ্ছ সের মত্ত তার হাস্যরসের ভাণ্ডার অফুরন্ত ছিল। ললিতকুমারের হাস্যরস উদ্দাম মা হলেও বঙ্গসাহিত্যের ইতিহাসে ললিতকুমারের রচনার মূল্য আছে। কেন-না, যে-ধরণের রচনা উীর লেপনীর ভেতর দিয়ে বেরিয়েছে তা বঙ্গসাহিত্যে সম্পূর্ণ নতুন । তার হাস্যরস অফুরন্ত বট. কিন্তু ফোয়ারার জলোচ্ছ ।সের মত উচ্ছ স্থল নয়, তা গঙ্গার প্রশাস্ত বন্ধের মত ধীর স্থির ও শান্ত ' প্রথম দৃষ্টিতে হয় ত পাঠক তার রচনার কোনও রস পাবেন না । কিন্তু একাগ্রচিত্ত পাঠক তার ভেতরকার রূপটুকুর সন্ধান পাবেন। ফোয়ারার প্রথম প্রবন্ধটি যাতে গরুর গাড়ীর সঙ্গে বাষ্পীয় যানের তুলনা করা হয়েছে—ত সত্য সত্যই উপভোগা ।” ককায়ের অহংকার, ব্যাকরণ বিভীষিকা, অনুপ্রাসের অট্টহাসি, ফেয়ারা, পাগলা-ঝোর, সাহার প্রভৃতি হাস্যরসাত্মক পুস্তকগুলির ভেতর দিয়া তাহার উদার প্রাণের স্বতঃস্ফ, হাদার ঠিক্বে বেরিয়ে এসেছে । শিশুসাহিত্যও তার কাছে কম ঋণা নয় । শিশু সাহিতে্যু হাস্যরসের প্রবর্তন বলতে গেলে তিনিই করে যান। তার ‘রসকরা সাতনর্দী প্রভৃতি ছেলেদের জন্য লেখা বইগুলি পাবার জন্ম এখনও ছেলেদের সারামারি করতে দেখেছি । শিশুসাহিত্যে হাস্যরসের উন্নতির পরাকাষ্ঠ আমরা দেখতে পাই সুকুমার রায়ের লেখায় । BB BBBS SBBBB BBBS SS SBBBB BS BBBB BBBBBS প্রভৃতি পড়ে শিশুদের বাবাকেও হাসতে দেখেছি।’হকুমারবাবুর গনুসরণে কাজী নজরুল ইসলাম ঝিঙ্গেফুল’ নামে এক শিশুদের উপযোগী কবিতার বই প্রকাশিত করেছেন । কিন্তু একথা বলা বছিল যে, হকুমারবাবুর লেখার সঙ্গে তার লেখার তুলনাই হয় না। সেই বইটির রচনা অত্যন্ত কষ্ট্রকল্পিত, তা ছাড় স্থানে স্থানে ছন্দের গোলমালে রচনার মাধুর্য্য নষ্ট হয়ে গেছে। শ্ৰীযুক্ত গিরিজাকুমার বহুও এই দিকট সমৃদ্ধ করবার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ভাও যে খুব সার্থক তা নয়।” শিশুসাহিত্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছেন শ্ৰীযুক্ত গিরীন্দ্রশেখর বস্তু। তায় “লাল কালো" বইখানা বঙ্গসাহিত্যের গৌরব । বঙ্গসাহিত্যে নিৰ্ম্মল হাস্যরসের প্রবর্তন করে যান বঙ্কিমচন্দ্র । তার রচিত লোকরহস্য, কমলাকাস্তের দপ্তর প্রভূতিতে হাসতে কোথাও আটকায় না—কোথাও জোর করে হাসি আনতে হয় না । কিন্তু সে হাস্যরসাত্মক রচনা চিন্তনীয় বিষয়ে পরিপূর্ণ।” লোকরহস্তের প্রত্যেকটি প্রবন্ধে, বিশেষত মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিতে তৎকালীন বঙ্গসমাজ এবং বাঙালীর যে চিত্র পাই—ত অতুলনীয়। কমলাকাস্তুের দপ্তরে হাসি-ঠাট্টার ভিতর দিয়ে আলোচ্য প্রসঙ্গ অবতারণা কয় হ'লেও তা পাঠককে ভাববার যথেষ্ট অবসর দেয়। ইঠায় আলোচ্য প্রবন্ধগুলিও গল্পীর । বাস্তব জগতের মত সাহিত্যজগতেও পূৰ্ব্ববৰ্ত্তী যুগ হতে পরবর্তী যুগ উৎপন্ন—তাই পূৰ্ব্ববৰ্ত্তী যুগ পরবর্তী যুগের উপর প্রভাব বিস্তার করে। ইন্দ্রনাথের ভারত উদ্ধার নামক ব্যঙ্গ কাব্য এবং পঞ্চানন্দ মাসিক পত্রিকাতে প্রকাশিত হাস্যরসাত্মক প্রবন্ধাবলী, দ্বিজেন্দ্রলালের হাসির কবিতা এবং গানগুলি এবং বঙ্কিমের লোকরহস্ত প্রভৃতি প্রায় একই স্তরের। তাদের আলোচ্য বিষয়ও প্রায় একই । তারা প্রত্যেকেই তদানীন্তন সমাজের গলদগুলি নিয়ে আলোচনা এবং তাদের তীব্রভাবে আক্রমণ করেছেন । দীনবন্ধু মিত্র এবং কালীপ্রসন্ন সিংহের হাস্যরসাত্মক রচনার প্রশংসা না করে পাবা যায় না। দীনবন্ধুবাবুর নিমৰ্চাদ চরিত্র বঙ্গসাহিত্যের এক অপুৰ্ব্ব স্বষ্টি । এ পর্য্যন্ত নিমৰ্চাদের মত চরিত্র বঙ্গসাহিত্যের আর কোনও সাহিত্যয়থা স্বষ্টি করতে সক্ষম হন নি। কালীপ্রসন্নবাবুর "হুতুম পেচায় নক্সা তৎকালীন বঙ্গসমাজের এমন নিখুঁত চিত্র এবং এ রকম তীব্র সমালোচনা আর কোনও লেখক দিতে পারেন নি । বঙ্গসাহিতে নক্সার প্রবর্তন তিনিই ক’রে যান। আজকাল কেদারবাবুর রচনায় নক্সা যত সাফল্য লাভ করেছে কালীপ্রসন্নবাবুর পর আর কারও লেথায় তত সাফল্য লাভ করে নি । গিরিশচন্দ্র, দ্বিজেন্দ্রলাল, ক্ষীরোদপ্রসাদ প্রভৃতি নাট্যকারেরাও তাদের নাটকের মধ্যে হাস্তরসাত্মক দৃষ্ঠাদি যোগ করে দিয়েছেন।” বঙ্গসাহিত্যের এই দিকটি রবীন্দ্রনাথের এবং শরচ্চন্দ্রের দৃষ্টি এড়ায় নি। রবীন্দ্র সাহিত্যে হাস্যরস সম্বন্ধে কিছু বলা দরকার । রবীন্দ্রনাথ ও শরচ্চন্দ্রও নালাবিধ উপন্যাস নাটক কবিতা এবং প্রবন্ধের তেতর দিয়ে বঙ্গসাহিত্যের এই দিক্‌টা সমৃদ্ধ করেছেন এবং কয়ছেন। রবীন্দ্রনাথের বাঙ্গ কৌতুক চিরকুমার সভা, শেষরক্ষণ, শোধবোধ প্রভৃতি নাটিক এবং ক্ষণিক), মানসী প্রভৃতি কবিতা পুস্তকের সেকাল ও একাল, হিং টিং ছট, দুরন্তু আশা প্রভূতি রবীন্দ্রনাথের ষে বইখান। বেরিয়েছে তার মধ্যেও হাস্যরসের প্রাচুর্য্যের সন্ধান পাই। কিন্তু সে হাস্যরস অপর চিরকুমার সভা প্রভূতির হস্তিয়স এক প্রকৃতির নয় । এখানে রবীন্দ্রনাথের হস্তেরসের খোলটা ঠিকই আছে, কিন্তু নলচেট। একেবারে নতুন। অতি আধুনিক ফ্রেঞ্চ জাৰ্ম্মান আমেরিকান সভ্যতার এক জগা-খিচুড়ি-বাঙালী যুবক যুবতী সমাজের যে-চিত্র তিনি আমাদের দিয়েছেন তার জুড়ি মেলে মা ; শরচ্চত্রের হাস্তরসাত্মক কোনও ভিন্ন বই না থাকলেও তার হাস্তরস সমস্ত উপস্থাসের ভেতর ছড়িয়ে আছে। তার হাস্তরস কেবলমাত্র পাঠককে হাসাবার জন্ত নয় । তাদের মধ্যে একটা দুঃখ, ক্ষেণভ, দিনযাপনের গ্লানি এবং নির্যাতিতের বাধন ছেড়ার প্রয়াসের সন্ধান পাই । সুরেশ, কিয়াময়ী, রমেশ, শেখর, ইন্দ্র, শ্ৰীকান্ত প্রভৃতি চরিত্রগুলির কথোপকথনের মধ্যে হাস্তরসের ভেতর দিয়ে এই বিষয়গুলিই আমাদের সব চাইতে আকৃষ্ট করে। শরচ্চন্দ্রের হাস্যরস নিজেকে লুকিরে রাখে। তাকে খুজে বার করে নিতে হয় । রবীন্দ্রনাথের হাস্তরস দুই রকমের । এক রকম হাস্যরস নিজকে গোপন রাখে না। তা পাঠকের কাছে আপনি ধরা দেয় । ত৷ পাঠককে হালায় বটে, কিন্তু তাকে চিন্তা করবার খোরাক খুব বেশী যোগায় না। আবার আর এক রকর্যেয় হাস্যরস নিজেকে এমন ভাবে গোপন করে রাখে যে, সাধারণ পাঠকের পক্ষে তাকে খুজে বার করা সব সময় সম্ভব হয় না। প্রথম শ্রেণীর হান্তরসের প্রাচুর্ঘ্য নাটকনাটকগুলির মধ্যে এবং তার মূল্যও যে খুব বেশী তা নয়। কিন্তু শেষের শ্রেণীর হাস্তরসের দৃষ্টান্ত তার উপস্তাদ এবং পঞ্চভূত, কর্তার ইচ্ছায় কৰ্ম্ম প্রভৃতি প্রবন্ধগুলির মধ্যে চতুরঙ্গ প্রভৃতি কোনও কোনও গল্পের মধ্যে পাওয়া যায় এবং এইগুলিই সাহিত্যস্বৰ্ষ্টর পক্ষে মূল্যবান, কেন-না,