পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مهند শিরাজ। হাফেজের কবর। কবির বামপাশ্বে গভর্ণর, দক্ষিণে খ্ৰীযুক্ত ইরানি । লেখক মহিলাদিগের পিছনে। ফলের বাগান, গমের ক্ষেত (গমকে এরা বলে গন্ধুম’— সংস্কৃত গোধুম), দু-চারটে বুনো জলপাইয়ের এবং পদুমের গাছ দেখা যেতে লাগল। পাহাড়েরও রং লালচে, দু-একটা ঝরণাও দেখা গেল। এতক্ষণে মনে হ’ল নতুন দেশে এসেছি এবং এটা পারস্ত দেশ হতেও পারে । এই দেশের এ অঞ্চল এক সময় দুৰ্দ্ধৰ্ষ কাশগাই নামক পাৰ্ব্বত্য জাতির এলাকাভুক্ত ছিল । গত যুদ্ধে এদেশ অধিকার করার সময় এরা ইরেজ-সৈন্যদেরও বিশেষ বেগ দিয়েছিল । বৰ্ত্তমান শাহের প্রতাপে এর; এখন বশীভূত হয়েছে। এদের একজন প্রধান, শুক্রুল্লা খা, পথের মাঝে ঘোড়া ছুটিয়ে এসে চা এবং ভেট দিয়ে কবিকে স্বাগত করলেন । পাহাড়ের এক শ্রেণী পার হয়ে চশ মে সালমিনের উপত্যকায় আমরা পৌঁছলাম। চারধারে বন্য চেরী এবং জলপাইয়ের গাছ, অন্য ফলের গাছও আছে, তারই মাঝে প্রকাগু একটা পাথরের নীচে থেকে ঝির ঝির ক’রে নিৰ্ম্মল জলের স্রোত বেরিয়ে চলে যাচ্ছে । তার পথটা সবুজ গাছগাছড়ার নিশানায় অনেক দূর পর্য্যস্ত দেখা যাচ্ছে। উপত্যকাটি প্রকাণ্ড বড়, কিন্তু নির্জন । দুধারের পাহাড়ে স্থদুর পুরাকালের সমুদ্রের ঢেউয়ের আঘাত-চিহ্ন রয়েছে। পাহাড়ের গায়ে গুহা-গহবরের ফাটাল আছে বলে মনে হ’ল। খুজলে প্রাগৈতিহাসিক মানুষের চিহ্ন নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। চশ মে সালমিন ছাড়িয়ে আবার পাহাড়ের চড়াই। পথে একটি অতি প্রাচীন গ্রাম ছাড়িয়ে এলাম, সেখানে পাহাড়ের গায়ে খোদাই-করা প্রাচীন যুগের লিপির অবশেষ রয়েছে, তার নীচে নলীরুদ্দীন শাহের দরবারের ছবি পাহাড়ের গায়ে উৎকীর্ণ। এই গ্রামের লোকের। যদিও প্রায় ১৩০০ বৎসর মুসলমান হয়েছে, তবু এখনও এদের সর্দারদের মৃত্যুর পর কবরের উপর আগুন জালান এবং সিংহমূৰ্ত্তি স্থাপন করা হয়। বোধ হয় ইহা প্রাচীন অগ্নি-উপাসক জরথুষ্ট্র সম্প্রদায়ের.প্রথা।