পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমবেত জীবন-বীমা ডাঃ স্ত্রীসুরেশচন্দ্র রায় গত ত্রিশ বৎসরে জীবন-বীম ব্যবসায় সমগ্র পৃথিবীতে অতি দ্রুত উন্নতি লাভ করিয়াছে এবং তাঙ্গার ফলে ইহার নিয়মকান্তন ইত্যাদির বহু পরিবর্তন হইয়াছে । বৃদ্ধবয়সে একটু স্বচ্ছন্দে জীবন-যাপন করা ও স্বীপুত্র-পরিবারের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করার স্বভাবিক চিস্ত হইতেই জীবনবীমার উদ্ভব । মাযের নিজের চেষ্টায় যতটুকু ভবিষ্যতের ংস্থান করা সম্ভব, জীবন-বীমা সেই পথ দেখাইয়াছে এবং বর্তমান সভ্যতা বিস্তারের সঙ্গে-সঙ্গে মানুষের এই চিন্তার ফলে নানাবিধ নৃতন নূতন উপায় আবিষ্কৃত হইতেছে । কিন্তু সমগ্ৰ 3গতের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতির ফলে জনসাধারণের মধ্যে অতি অল্পসংখ্যক লোকই এ পয্যন্ত জীবন-বীমার স্থযোগ ও সুবিধা গ্রহণ করিতে সক্ষম হইতেছে । ব্যক্তিগতভাবে জীবন-বীমা করিয়ু ভবিষ্যতের সংস্থান করিতে যাহার| সমর্থ তাহদের মধ্যেও আমাদের দেশে অনেকেই সে সুযোগ গ্রহণের আবশ্যকতা এখনও হৃদয়ঙ্গম করেন ল ৷ অভিজ্ঞ ও বুদ্ধিমান ব্যক্তিমাত্রেই বৃদ্ধবয়সের জন্য এবং পরিবারের জন্য সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন । নিজের অবর্তমানে প্রিয়পরিজনদিগের জন্ত ব্যবস্থা যদিও স্বর্থগত, তৰু শুধু স্বার্থসিদ্ধিই ইহার সব নয়। জীবনধারণের জন্য পরিজনবর্গকে যাহতে ভবিষ্যতে পরমুখাপেক্ষী না হইতে হয় তাহার বন্দোবস্ত করা প্রকৃতপক্ষে পরোক্ষভাবে সমাজসেবা । কিন্তু ইচ্ছা থাকিলেও সৰ্ব্বত্রই উপায় হয় না। আন্তরিক ইচ্ছা সত্ত্বেও বহু লোক অর্থাভাবে বীমাপত্র ক্রয় করিতে সমর্থ হয় না। পশ্চিমে “সমবেত-বীমা”র প্রচলনে এ সমস্তার কথঞ্চিৎ সমাধান হইয়াছে। অপেক্ষাকৃত অল্প ব্যয়ে বীমা করার সম্ভাবনা হইতেই “সমবেত-বীমা"র উদ্ভব । সাধারণ জীবন-বীমার সহিত সমবেত-বীমার তফাৎ এই যে, সমবেত বীময় একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীন সমগ্র কৰ্ম্মচারী একসঙ্গে এক বৎসরের জন্য বীমা করে। এস্থলে কর্তৃপক্ষের সহিত বীম কোম্পানীর চুক্তি হয়--- যাতাদের জীবন-বীমা হয় তাহদের সঙ্গে নহে। প্রত্যেককে নামমাত্র চাদ দিতে হয়। এই বীমার ধরণ পরিবর্তনের সঙ্গে সম্প্রতি এরূপ দেখা যাইতেছে যে অনেক ক্ষেত্রে এই স্বল্প চাদার হারও কর্তৃপক্ষ বহন করেন। এক বৎসরের মধ্যে কাহারও মৃত্যু অথবা স্থায়ী অক্ষমতায় দাবির উৎপত্তি হয়। সমবেত-বীমায় জীবন-বীমার সুবিধা অল্প ব্যয়ে পাওয়াই ইহার একমাত্র আকর্ষণ নহে। সমবেত-বীমায় ডাক্তারী পরীক্ষা নাই । ধে ব্যক্তি সাধারণ অবস্থায় উপযুক্ত স্বাস্থ্যের অভাবে জীবন-বীমা করিতে পারিত না, সেও এক্ষেত্রে সকলের সঙ্গে জীবন-বীমার স্থযোগ লাভ করে । সমবেত-বীম সাধারণত: এক বৎসরের জন্য হয় এবং পুরে বৎসর-বংসর চলিতে থাকে। অন্তত: পঞ্চাশ জনকে লইয়া একটি দল ( group ) হয় এবং প্রতেক্যের জন্য কমপক্ষে এক শত পাউণ্ড অথবা এক বৎসরের বেতনের জন্য কোম্পানী দায়িত্ব গ্রহণ করে । একখানা মাত্ৰ বীমাপত্র দেওয়া হয়। ক্ষেত্রবিশেষে কর্তৃপক্ষেরও প্রত্যেকের জীবন-বীমা হয়। কি কি সুবিধা দেওয়া হইবে বীমাপত্রে তাহার উল্লেখ থাকে এবং বৎসরাস্তে নূতন বীমাপত্র প্রদানকালে প্রয়োজনবোধে ব্যক্তি-বিশেষের পক্ষে সৰ্বাদির পরিবর্তন করা যাইতে পারে । প্রত্যেককে বীমাসম্পর্কে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয় । তাহাতে বীমার সর্ব ও সুবিধা আদি লিখিত থাকে। ডাক্তারী পরীক্ষ না থাকিলেও দলের সভা হইতে হইলে একাদিক্ৰমে অন্ততঃ তিন মাস কাজ করিয়াছে এরূপ কৰ্ম্মচারী প্রয়োজন। কারণ ইহাতে উক্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্য সম্বন্ধে একটা সিদ্ধান্ত করা চলে। নূতন নিযুক্ত লোকও তিন মাস পরে সরাসরি বীমার গণ্ডীর মধ্যে আসিয়া পড়ে ; শুধু বৎসরান্তে হিসাবে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করিয় লইতে হয়। কেহ যদি ইতিমধ্যে কৰ্ম্মত্যাগ করে তলে সে সঙ্গে সঙ্গে দলের বাহিরে আসিয়া পড়ে। কিন্তু ইচ্ছ,