পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ն প্রবাসী SNー8ミ. ক্রমে কলকব্জার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে তাতি, জোলা, কামার, মাকীরা নিজ নিজ জাতি-ব্যবসায় ছাড়িয়া ভূমির উপর প্তর করিতে বাধ্য হইল। একমাত্র বিলাতী কাপড়ের কল্যাণেই কত তাতির তাত বন্ধ হইয়া গিয়াছে তাহার ইয়ত্ত নাই ।* আর এক সৰ্ব্বনাশ হইল পাটের চাষে ; ইহা দাবানলের মত দেশে ছড়াইয়া পড়িতে লাগিল । ফলে জমির উপর উপযুপিরি এত চাপ পড়িতে লাগিল যে এই সমস্ত গোচারণের প্রতি হৃদয়হীন জমিদার ও প্রতিপত্তিশালী গ্রামবাসীদের লুব্ধ দৃষ্টি পড়িতে লাগিল। সেই শনির দৃষ্টি হইতে দেয়াড়ার মাঠও নিষ্কৃতি পায় নাই। নিঃসম্বল গোয়ালার। আর কত লড়িবে, আইনের কুটজালে হয়রাণ হইয় তাহার অবশেষে রণে ভঙ্গ দিল । সেই বিস্তীর্ণ গোচারণের মাঠ এথম ভাগবিলি হঠয়া গিয়াছে। সেখানে এখন পাটের রাজপাট বসিয়াছে। ঘাস অভাবে গাভীকুল রুশ হইয়া গিয়াছে । তাহাদের লাটে দুধের ধারা শুকাইয়৷ গিয়াছে। যেখানে টাকায় বরিশ সের করিয়া দুধের বিকিকিনি হইত, সেখানে আজ টাকায় চার সের হইতে ছয় সেরের বেশী দুধ মিলে না । ইংলণ্ড ও ইউরোপে গোপালন ও দুধের কারবার কৃষিকার্য্যের একটি প্রয়োজনীয় অঙ্গবিশেষ কৃষিব্যাপারে আমি শুধু এই দিকটাই বেশী করিয়া আলোচনা করি, কারণ বাঙালীর দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় দুধের অপ্রাচুর্য্য বা মম্বন্তরের ফলেই বাংলার ধরে ঘরে শিশুরা অপুষ্টি ও রিকেট্‌স প্রভৃতি রোগে ভূগিতেছে । ইউরোপ-ভ্ৰমণকালে ফ্রান্স, ইংলণ্ড, আয়ালগু ও স্কটলণ্ডে দেখিয়াছি -বিস্তীর্ণ গোচারণের মাঠ ও চাষের জমি পাশ-পাশি রহিয়াছে ।

  • অতি দুঃখেই কবি গাহিয়াছিলেন –

“র্তাতি কৰ্ম্মকার করে হাহাকার খেটে খেটে তাদের অন্ন মেলা ভার , sk 率 豪 কলের বসন বিনে কিসে প্লবে লাজ, ধরবে কি তবে দিগম্বরের সাজ ?--” ইত্যাদি + ১৯২৬ সালের রয়েল কৃষি-কমিশনে সাক্ষাদানপ্রসঙ্গে আমার উক্তি দ্রষ্টবা। শুধু মরকত-বীপ ( Emerald Isle ) আয়ালণ্ডেই নহে, ইউরোপের অপর দেশেও মাঠের শু্যামল শোভা দেখিয়া চোখ জুড়াইয়া গিয়াছে। বিশাল বলীবর্দ ও গাভীগণ মাঠে দাড়াইয়া জাবর কাটিতেছে, চতুৰ্দ্দিকে লম্বা লম্বা ঘাসের আটি কম্ভিত হইয়া শুকাইতেছে। ইহাই ও-দেশের ‘হে? hay ) । শুনিলাম অনেক মাঠে গ্রীষ্মকালের কয়েক মাসের মধ্যে এই ঘাস দুই-তিন বার করিয়া কাটা হয় ও শীতকালের জন্য সঞ্চিত হয়। সেই জন্তই বোধ হয় ইংরেজী প্রবাদের উৎপত্তি—“Make ১৮৮২ হইতে ১৮৮৮ খ্ৰীষ্টাব্দ পর্য্যস্ত ছয় বৎসর কাল যখন এডিনবরায় প্রবাস যাপন করিতেছিলাম তখন শহরতলীর মাঠে গিয়া দেখিতাম যে পশুদের থোরাক জোগাইবার জন্য গাজর, শালগম, ম্যাঙ্গেল-ভূর্জেল ( Mangel-wuzel ) প্রভৃতি কত রকম ফসল ফলিয়াছে। কিন্তু ইহারই প্রায় দুই শত বৎসর পূৰ্ব্বে খ্ৰীষ্টীয় ১৬৮৫ অব্দে এ বিষয়ে ইংলণ্ড কত দূর পশ্চাৎপদ ছিল তাহা মেকলের উক্তি পাঠ করিলে বুঝিতে পারা যাইবে । তিনি তাহার ইংলণ্ডের ইতিহাসের এক স্থানে বলিতেছেন, “তৎকালে চাষের ক্রম বা পালা সম্বন্ধে অজ্ঞতার অন্ত ছিল না । দেশে তপন সবেমাত্র কয়েক প্রকার সব জী-বিশেষ করিয়া শালগমের প্রচলন হইয়াছে ; শীতকালে এই সকল সব জী পশুদের পক্ষে উংকৃষ্ট ৪ পুষ্টিকর খাদ্যহিসাবে অনায়াসে ব্যবহার করা যাইতে পারিত, কিন্তু লোকে তখনও উহাদের ব্যবহারে অভ্যস্ত হইয়া উঠিতে পারে নাই । সুতরাং মাঠে যখন ঘাস থাকিত না বা শুকাইয়া যাইত তখন গো-মহিষাদি গৃহপালিত পশুদিগকে বঁাচাইয়া রাখাই দুঃসাধ্য হইত। উপায়ান্তর না দেখিয়া লোকে ঐ সকল পশুকে শীতের প্রারম্ভেই মারিয়া ফেলিত এবং hay while the sun shines.” লবণাক্ত করিয়া রাখিয়া দিত।”* স্থানান্তরে মেকলে বলিতেছেন, “ইদানীং যে-সকল গো-মেঘাদি আমাদের হাটবাজারে বিক্রয়ের জন্ত আনীত হয় তাহাদের তুলনায় তৎকালীন পশুগুলি নিতাস্ত শীর্ণ ও খৰ্ব্বকায় ছিল।" ১৬৮৫ সালের ইংলণ্ডের যে চিত্র মেকলে দিয়াছেন, ১৮৮৮ সালে তাহার প্রভূত পরিবর্তন স্বচক্ষে দেখিয়া আসিয়াছি। চেষ্ট

  • আমাদের দেশের নোন। ইলিশের সহিত ইহার তুলনা করা যাইতে পারে ।