পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

°●曼 "বিউটিফুল"। ছেলেগুলোর কোনদিকে নজর নেই, খালি সেই পেনি দাও পেনি দাও বুলি। এক জনকে দিলে সবকটাই হাত পাতে। রেহাই পাবার জন্ত অবনীবাৰু মাঝে মাঝে তার লাঠি উচু করতেই তারা একটু তফাতে সরে, আবার কিন্তু যে-কে-সেই । ছোটদের মত বড়দেরও কৌতুহল কিছু কম নয়, তবে একটু সংঘত ভাব। রাস্তার ছ-পাশের বাড়িগুলির সব জানালা খুলে যেতে লাগল আমাদের দেখবার জন্ত যেন রাস্তা দিয়ে ভালুক-নাচওয়ালা ভালুক নিয়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত বাসে উঠে তবে বাচি। এক দিন লওনের হিপ্পোড়ম থিয়েটারে গিয়েছিলুম। সেদিনকার অভিনয় আমাদের আরব্য-উপন্যাসের "কলসী ও দৈত্যের গল্প"। একটি ছোট সবুজ কুঁজার ভেতর থেকে গাঢ় সবুজবর্ণের ধোয়ার সঙ্গে এক সবুজ দাড়িওয়ালা দৈত্য বা জিন বেরল। তার পর দেখি সে ষ্টেজের উপর থেকে শূন্তে উড়তে উড়তে একেবারে সব দর্শকদের মাথার উপরে উড়ে বেড়াচ্ছে। আমার মাথার উপর যখন এল, বেশ লক্ষ্য করে দেখলুম সে বোধ হয় বিশ হাত তফাতে ঝুলছে। কিন্তু কিসের উপর নির্ভর করে এমনভাবে উড়ে বেড়াচ্ছে, তা মোটেই বুঝতে পারি নি। লগুনে আর এক রকম নৃত্য, গীত ও অভিনয় হয়ে থাকে, এর নাম নন্‌ষ্টপ, ভ্যারাইটি। কোন-একটি নিদিষ্ট সময়ে স্বরু হয়ে রাত বারোটা পৰ্য্যস্ত চলে। এতে নাচগান, থিয়েটার, ট্যাবলো সবই হয়ে থাকে। যখন হোক একবার টিকিট করে ঢুকলে সেই রাত বারোটা পৰ্য্যন্ত দেখতে পারি। কিন্তু একবার বেরিয়ে এসে আবার ঢুকতে চাইলে নূতন ক’রে টিকিট করতে হয়। এতে এক রকম অভিনয় দেখেছিলুম, অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা শুধু অঙ্গভঙ্গী ও ভাবপ্রকাশের দ্বারা অভিনয় ক’রে যেতে লাগল ও অপর এক ব্যক্তি ষ্টেজের একধারে দাড়িয়ে সমস্ত গল্পটি দর্শকদের বই পড়ে শোনাতে লাগল। আর এক দিন একটি থিয়েটারে ক্যাসানোভা নামক অভিনয় দেখেছিলুম। সমস্ত ষ্টেজটি ঘুরতে লাগলো। টেজের উপরে ঘরবাড়ি, নদীতে নৌকাচলাচল সব এই ঘূর্ণায়মান অবস্থাতেই দেখিয়ে দিলে। এই সময় প্রায় শতাধিক অভিনেতা ও অভিনেত্রীকে একসঙ্গে ষ্টেজের উপর অভিনয় করতে দেখেছি। প্রক্ষণসী é°8母 এক দিন ম্যাডাম টুলোর একজিবিশন দেখতে গিয়েছিলুম। ম্যাডাম টুসে নামে এক জন ফরাসী মহিলা অনেকগুলি স্বন্দর মোমের প্রতিমূৰ্ত্তি তৈয়ারী করেন, সেগুলি সাজিয়ে এই একজিবিশন করা হয়েছে। এই একজিবিশন দেখতে হ’লে টিকিট করে ঢুকতে হয়। এর মোমের প্রতিমূৰ্ত্তিগুলি এত স্বাভাবিক যে, সত্যই সজীব বলে ভ্রম হয়। আমি উপরে যাবার সময় সিড়ির কাছে যে পুলিস প্রহরী দাড়িয়েছিল তাকে জিজ্ঞাস করলুম, “একজিবিশন হলে যাবার রাস্তাটা কোন দিকে ?” সে কোন উত্তর দিলে না, তখন নজর করে দেখলুম তার চোখে পল্লব পড়ছে না। হলের ভেতর রাজপরিবারের সকলের মূৰ্ত্তি আছে, মহাত্মা গান্ধীও আছেন, ইউরোপের বড় বড় সাহিত্যিক, কবি, খেলোয়াড় লেখক সকলেই আছেন! এগুলি বেশ দেখবার জিনিষ, এর নীচের তলা বা বেসমেন্টের হলে যাবার জন্য আলাদা টিকিট করতে হয়। এর নাম চেম্বার অফ হরার। টিকিট কেটে নামলুম। এবার ভাল ক’রে পুলিসের মুখের দিকে তাকালুম। দরজার দু-পাশে দু-জন পুলিস বসে আছে। এক রকম দেখতে, পোষাকপরিচ্ছদ সমস্ত এক । কে সজীব বোঝবার জো নেই ; কয়েক মুহূৰ্ত্ত তাকিয়ে ভাল ক'রে বোঝবার আগেই সজীব পুলিস হেসে রাস্তা দেখিয়ে দিলে। আমাদের মত সকলেরই সেখানে গেলে এই অবস্থা হয়। নীচেকার দৃপ্ত দেখে মন বড় দমে গেল। যত ঠগ, জুয়াচোর, খুনী, ডাকাত, এদের সব মূৰ্ত্তি। তা ছাড়া সেকালে এই সব দোষী ব্যক্তিকে কি ভাবে কঠোর দওভোগ করতে হয়েছিল তাও মডেল ক’রে দেখান আছে। কাউকে ফাসিতে ঝুলানো হচ্ছে, কারুর কুঠারে শিরচ্ছেদ হবে, তাদের আতঙ্কে মুখের ভাব যা দেখেছি তা অবর্ণনীয়। কবে কে লণ্ডন শহরের একটি শিশুকে হত্যা করে। পেরাম্বুলেটরের মধ্যেই দেহটি পাওয়া গিয়াছিল। সেই ছোট ছেলেটির মাথার খুলি ও তার জীর্ণ জামাকাপড় এখনও সেই পেরাস্কুলেটরখানির সঙ্গে সাজিয়ে রেখেছে। এসৰ দৃগু দেখলে কার না মন খারাপ হবে। কতকগুলি এই ধরণের দৃশ্বে পর্দার গায়ে লেখা থাকে, “একমাত্র বড়রাই এ জিনিষ দেখবার অধিকারী " কৌতুহল দমন করতে না পেরে এবকম একটি পরদা তুলে