পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

टंख्क्रयछे মণিপুরের cকাম ও চিরু জাতি ՖՆ-ծ দেখিলে মনে হয় না ইহাদের জীবনে কোথাও দুঃখের ছায়া পড়িয়াছে । প্রত্যেক গ্রামে এক জন করিয়া মাতববর থাকে । গ্রামের লোকেরা সকল কাজেই ইহার উপদেশ বা আদেশ মানিয়া চলে। কাহারও চুরি হইলে সে তৎক্ষণাৎ মাতব্বরের বাড়ি গিয়া সকল কথা বলিলে মাতব্বর সেই লোকের বাড়িতে আসিয়া তত্বাবধান করিয়া যান, এবং কি কি হারাইয়াছে তাহ বাড়ির লোকদের কাছ হইতে জানিয়া লন । ইহার পর মাতববর তাহার দু-এক জন বিশ্বস্ত লোককে চোর খুজিয়া বাহির করিতে আদেশ দেন । ইহার গোপনে নানা অনুসন্ধান করিয়া ষে-ব্যক্তি চুরি করিয়াছে তাহাকে মাতববরের নিকট ধরিয়া আনে। তখন মাতববর গ্রামের অন্তfঠ লোকের সমক্ষে আসামীকে শাস্তি দের । গ্রামের সকল প্রকার বিচারের ভার এই মাতববরের উপরে। গ্রামে আর এক জন সহকারী মাতববর থাকে । মাতব্বর কখনও স্থানাস্তরে গেলে বা অনুস্থ থাকিলে বিচারাদির কাজ সহকারী মাতব্বরের উপরে পড়ে । প্রত্যেক গ্রামে এক জন করিয়া সরকারী পেয়াদা থাকে। ইহার কাজ গ্রাম হইতে নানা প্রকারের খবর বহন করা । গ্রামে পূজা, বিবাহ বা অন্ত কোন প্রকার উৎসব উপলক্ষ্যে এই পেয়াদাকে অনেক পরিশ্রম করিতে হয় । বাড়ি-বাড়ি কাঠ জোগাড় করা, উৎসবের জন্ত রান্নাবাল্প করা এবং গ্রামের অন্তান্ত লোকদের পরিবেশন করা, এই সকলই সরকারী পেয়াদা ও তাহার স্ত্রীর কাজ । এই সকল কাজের পারিশ্রমিক-স্বরূপ সরকারী পেয়াদাকে ধান, চাল, অন্তান্ত খাদ্যদ্রব্য এবং কোন কোন সময় নগদ পয়সা গ্রামের লোকের চাদা করিয়া দিয়া থাকে। এই সকল আদিম জাতির সামাজিক রীতিনীতি আমাদের কাছে অদ্ভুত বলিয়া মনে হয় । ইহাদের সামাজিক প্রথা অধুনা সকল সভ্য জাতি হইতে বিভিন্ন। একটি দৃষ্টান্ত দ্বারাই ইহা স্পষ্ট বুঝা যাইবে । কোম-ছেলেরা দশ বৎসর বয়স্ক হইলেই রাজিত নিজ বাড়িত থাকিতে পায় না । কারণ ইহাদের ধারণ অনুসারে বয়স্থ ভ্রাতা ও ভগ্নী রাজিতে এক ঘরে শোয়া খুব খারাপ। তাই দশ বছর বয়ন্ত্র হইতেই ছেলেদিগকে বাড়ি হইতে অন্তত্র গিয়া শুইতে হয়। 令份一盘 চিরুদের মধ্যেও এইরূপ ব্যবস্থা। প্রত্যেক চিরু-গ্রামে একটি ভিন্ন বাড়ি থাকে, তাহাকে জাতীয় ভাষায় "জলবুক” বলে । সন্ধ্যার সময় গ্রামের দশ বৎসরের অধিক বয়স্ক অবিবাহিত ছেলেরা “জলবুকে” আসিয়া একত্র হয় এবং এইখানে রাত্রি যাপন করে । চিরুদের "জলবুক” সাধারণ বাড়ি হইতে অনেকটা স্বতন্ত্র । গ্রামের অবিবাহিত ছেলেরা এখানে একত্রে থাকে বলিয়া যে শুধু ইহাকে অদ্যান্য বাড়ি অপেক্ষা ঢের বেশী বড় করিয়া তৈরি করা হয় তাহা নহে । ইহা মাটি হইতে ফু-তিন হাত উ.দ্ধ মোট কাঠের খুঁটির উপরে তৈরি করা হয়, কিন্তু fচরুদের সাধারণ বাড়ি মাটির উপরে। এমন কি অনেক সময় কোন প্রকারের পোস্তা (plinth ) থাকে না । জলবুকের সামনে একটি প্রকাণ্ড কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত নারী মুক্তি #ton & 1 &to “cottfär" (Mother Goddess) বলে । থোংনিং চিরুদের এক জন প্রধান দেবী । কোন নুতন বস্তীতে “জলবুক” করিবার পূৰ্ব্বে থোংনিংকে প্রতিষ্ঠিত করিয়া যথেষ্ট আয়োজন সহকারে পুজা করিতে হয় । এই পুজা উপলক্ষে অৰিবাহিত ছেলেমেয়ের একত্র হইয়া আমোদ-প্রমোদ করিয়া থাকে। থোংনিং ছাড়া জলবুকের সামনে থোলা জায়গায় আর একটি বেদী বা পুজার স্থান আছে । ইহা একখানা বা কয়েকখানা বড় বড় পাথরের সমষ্টি । এইখানে নানা সময়ে—বিশেষ করিয়া গ্রামে কোন রোগের প্রাদুর্ভাব হইলে—সকল লোকে একত্র হইয়া গ্রাম্যদেবতাকে পুজা দেয়। চিরগ্রামের প্রবেশ ও বহিদ্বারের নিকটেও এইরূপ ছুইটি পূজার বেদী আছে । যাহা হউক, আমরা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে চিরুদের মধ্যেও বয়স্থা ভাই-ভগ্নী রাত্রিতে এক বাড়িতে থাকিতে পারে না । বয়স্থ ভগ্নীর পিতামাতার সঙ্গে একই ঘরে ভিন্ন বিছানার শোয় এবং দশ বৎসরের বেশী বয়স্ক অবিবাহিত ভ্রাতারা সন্ধ্যার সময় জলবুকে চলিয়া যায়। চিরুদের নিয়মানুসারে বিবাহিতা কি অবিবাহিত কোন স্ত্রীলোক কখনও কোন কারণে জলবুকে যাইতে পারে না। এমন কি জলবুকের খুটি কিংবা বেড়া পৰ্য্যস্ত মেয়েদের স্পর্শ করা নিষেধ। এই প্রকার সামাজিক নিয়মের দ্বারা জলবুকের পবিত্ৰতা রক্ষিত হয় বলিয়া চিকদের ধারণা ।