পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কালচার \ყი& কালস্রোতে আগন্তুক এসেছি হেথায় সত্য কিম্বা দ্বাপরে ত্রেতায় যেখানে পড়ে নি স্থায়ী লেখা রাজকীয় স্বাক্ষরের একটিও রেখা । হায় আমি, হায় রে ভূস্বামী, এখানে তুলিছ বেড়া,--উপাড়িছ হেথা যেই তৃণ এ মাটিতে সে-ই রবে লীন পুনঃ পুনঃ বৎসরে বৎসরে । তারপরে ! এই ধূলি রবে পড়ি আমি-শূন্য চিরকাল তরে । ২র আগষ্ট ১৯৩৫ শাস্তিনিকেতন “কালচার’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পত জ্যৈষ্ঠের ( ১৩৪২ ) প্রবাসীতে একস্থানে ইংরেজী “কাল্চার” শব্দের প্রতিশব্দ রূপে “কৃষ্টি” শব্দের ব্যবহার দেখে মনে খটকা লাগল। বাংলা খবরের কাগজে একদিন হঠাৎ-ব্রণের মতো ঐ শব্দটা চোখে পড়ল, তার পরে দেখলুম প্তটা বেড়েই চলেছে । সংক্রামকতা খবরের কাগজের পত্তি ছাড়িয়ে উপর মহলেও ছড়িয়ে পড়ছে দেখে ভয় হয়। ‘প্রবাসী’ পত্রে ইংরেজী অভিধানের এই “অবদানপট সংস্কৃত ভাষার মুখোস পরে প্রবেশ করেছে, এটা নিঃসন্দেহ অনবধানতাবশত। প্রসঙ্গক্রমে ব'লে রাখি বৰ্ত্তমান বাংলাসাহিত্যে “অবদান” শব্দটির যে প্রয়োগ দেখতে দেখতে ব্যাপ্ত হ’ল সংস্কৃত শব্দকোষে তা খুঁজে পাই নি । ভাষা যে সব সময়ে যোগ্যতম শব্দের বাছাই করে কিম্ব যোগ্যতম শব্দকে টিকিয়ে রাখে তার প্রমাণ পাই নে। ভাষায় চলিত একটা শব্দ মনে পড়ছে “জিজ্ঞাসা করা"। এ রকম বিশেষ্য-জোড় ওজনে ভারী ক্রিয়াপদে ভাষার অপূঢ়ত্ব জানায়। প্রশ্ন করা ব্যাপারটা আপামর সাধারণের নিত্য ব্যবহার্ঘ্য অথচ ওটা প্রকাশ করবার কোনো সহজ ধাতুপদ বাংলায় দুলভ এ কথা মানতে সঙ্কোচ লাগে । বিশেষ্য বা বিশেষণ রূপকে ক্রিয়ার রূপে বানিয়ে তোলা ংলায় নেই যে তা নয়। তার উদাহরণ স্থা, ঠ্যাঙানে, কিলোনে, ঘুষোনো, ওঁতোনে, চড়ানে, লাথানে, জুতোনে । এগুলো মারাত্মক শব্দ সন্দেহ নেই, এর থেকে দেখা যাচ্ছে যথেষ্ট উত্তেজিত হ’লে বাংলায় “আনো” প্রত্যয় সময়ে সময়ে এই পথে আপন কৰ্ত্তব্য স্মরণ করে । অপেক্ষাকৃত নিরীহ শব্দও আছে, যেমন মাগল থেকে আগলানো ; ফল থেকে ফলানো, হাত থেকে হাতানো, চমক থেকে