-আণশ্বিন কর; হইয়াছে। প্রাচীন ভারতের স্থাপত্য হইতে উপাদান সংগ্রহ করা এই ক্ষেত্রে বোধ হয় প্রথম হয় । কিন্তু ইহ দেশে বিস্তীর্ণভাবে সঞ্চারিত গুছতে অনেক সময় লাগিল। আচাৰ্য্য জগদীশচন্দ্রের বস্তুবিজ্ঞানমন্দির রচনার সময়ে স্থপতিদের এ-বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি ছিল বোঝা যায়। বিজ্ঞান-মন্দিরটিতে ইউরোপীয় অলঙ্কার সম্পূর্ণ পরিহার করিয়৷ উত্তর-ভারত হইতে সাজসজ্জা গমদানী করা হইয়াছে । তাহার পরে কিছুদিন কাটিয় স্বাক্টবার পর বিগত দশ বৎসরের মপ্যে স্বদেশী ভাবটি বাংলার স্থাপত্যে বেশ জমিয়া উঠিয়াছে। ইঙ্গর জন্য সুপরিচিত স্থপতি শ্ৰীযুক্ত শ্ৰীশ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গ য় অনেকাংশে দায়ী। তিনি কাগজপত্রে প্রচার রিয়া স্থাপত্যে স্বদেশী ভাবকে খানিক পুষ্ট রিয়াছেন । কিন্তু নবপ্রবর্তিত স্বদেশী স্থাপত্যের মধ্যে এখনও কিছু খাদ মিশ্রিত আছে বলিয় মনে হয়। বাঙালী বাড়ির চেহারায় বৌদ্ধ প্রভাব আধুনিক কালের অলঙ্কারবহুল ভারতীয় স্থাপত্য যেমন অনুকরণপ্রিয়তার বশে কোঠাবাড়িকে ইউরোপীয় পোষাক পরাইয়াছিল, এখন মনে হইতেছে সেই ভাবেই সে যেন ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থান হইতে স্থাপত্যের নাম উপাদান আমদানী করিয়া কোঠাবাড়িকে দেশী পোষাক পরাইবার চেষ্টা করিতেছে। বাড়িগুলির গড়নে বিশেষ কিছু নূতনত্ব দেখা যায় না। নবপ্রবর্তিত স্বদেশী স্থাপতো সংযমের অভাব প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়। বৌদ্ধ স্তুপ, উত্তর-ভারতের প্রাসাদ, উড়িষ্যার তোরণ অথবা দুয়ার, এই সমস্ত বস্থর এক-একটি অঙ্গ একই বাড়িতে একটির পর একটি চাপাইয় আড়ম্বরবহুল করা হয়। এই সকল ঘরবাড়ি যেন উচ্চকণ্ঠে বলিতে থাকে, “আমরা ইউরোপীয় নহি, ইউরোপীয় নহি ।” কিন্তু উগ্রভাবে বলার মধ্যেই যে তাহার অন্তনিহিত দুৰ্ব্বলতা প্রকট হইয় পড়ে তা আমর অনেক সময়ে ভুলিয়া যাই । ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ হইতে, অথবা বিভিন্ন কালের স্থাপত্যের উপাদান একত্র করায় কোনও দোস নাই ; কিন্তু যদি তাহার মূল বস্তুটিকে অলঙ্কারের আতিশয্যে ঢাকিয় ফেলে তাহা হইলে স্থাপত্য দুৰ্ব্বল হইয় পড়ে। ধরা যাউক, একটি গুহ এমনভাবে গঠন করা হষ্টল যে তাহাতৃে শাস্তি ও বিশ্রামের ভাব প্রতিফলিত হয়। ভাল স্থপতি হইলে এরূপ গুহের সজ্জায় শুধু সেই অলঙ্কারই ব্যবহার করিবেন যাহার দ্বারা গৃহগঠনের মূল কথাটি আরও স্পষ্ট, জারও সমৃদ্ধ হইয়া উঠে। কিন্তু শাস্তির
পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৮১
অবয়ব