পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন অধিকাংশ লাইব্রেরীতেই হাতে-লেখা তালিকা রাখা হয়। চাপান তালিকা থাকিলেও হাতে লিখিয়া নূতন পুস্তকের নাম যোগ করিতে হয়, কারণ ঘন ঘন তালিকা ছাপান চলে না এবং পুস্তকের সংখ্যা ক্রমশঃ বাড়িয়াই চলে। হাতে-লেখা তালিকাতে পুস্তক-ক্রয়-অনুসারে পুস্তকের নাম তালিকাবদ্ধ করিতে হয়। তাহাতে পুস্তকের নাম সহজে খুজিয়া বাহির করা যায় না। আবার বই হারাইয়া গেলে তালিকা হইতে নাম কাটিয়া দিতে হয় । এই সব অসুবিধা দূরীকরণের জন্য আজকাল কার্ডে লিথিয় পুস্তকের তালিকা প্রস্তুত করা হইয় থাকে। ইহাকে ‘কার্ড-ক্যাটালগ বলা হইয়া থাকে। এই ব্যবস্থানুসারে ছোট ছোট কার্ডে পুস্তকের নাম লেখা হইয়া থাকে। এক-একথানা কার্ডে একখানার বেশী বইয়ের নাম লেখা হয় না । কার্ডগুলির আকার সাধারণতঃ ৫ × ৩ ইঞ্চি হইয়া থাকে। প্রত্যেক কার্ডে বইয়ের নাম, নম্বর, গ্রন্থকারের নাম, গ্রন্থপ্রকাশের বৎসর, সংস্করণ, খণ্ড প্রভৃতি লিখিত থাকে, প্রত্যেক বইয়ের জন্য সাধারণতঃ তিনখান কার্ড লিখিত হইয় থাকে। একথান কার্ডে গ্রন্থকারের নাম সকলের উপরে লিখিত থাকে ; নীচে বইয়ের নাম থাকে। ইহাকে “অথৰ্বকর্ড বলে। দ্বিতীয় কার্ডে বইয়ের নাম সকলের উপরে লিখিত থাকে। ইহাকে ‘ফাইল-কার্ড বলে। তৃতীয় কার্ডে যে বিষয়ের বই সেই বিষয়ের নামে সকলের উপর লিখিত থাকে। ইহাকে সবজেক্ট-কার্ড বলা হয় । সমস্ত কার্ড বর্ণানুসারে কাঠের ছোট ছোট কুঠরীতে ( cabinet ) রাখা হয়। কার্ডগুলির নীচে ছিদ্র থাকে ; সেই ছিদ্রের ভিতর দিয়া একটি পিত্তলের দণ্ড ঢুকাইয়া দিয়া কার্ডগুলি একত্র করিয়া রাখা হয়। ইহাতে ‘ কার্ডগুলি বিশৃঙ্খল বা স্থানান্তরিত হইতে পারে না। কোন নূতন বই আসিলে দগুটি খুলিয়া সেই বইয়ের কার্ডগুলি যথাস্থানে সাজাইয়। আবার আটকাইয়া রাখা হয়। কোন বষ্ট গরাইয়া গেলে বা ব্যবহারের অযোগ্য হইয়া পড়িলে, সেই বইয়ের কার্ডগুলি অনায়াসে ধুলিয়া ফেলিয়া দেওয়া যাইতে পারে। পাঠকদিগের নানা দিক হইতে পুস্তক-নিৰ্ব্বাচনের হবিধার জন্য এতগুলি করিয়া কার্ড লিখিত হইয়া থাকে। কোন পাঠক হয়ত বইয়ের নাম জানেন, গ্রন্থকারের নাম জানেন না। তিনি ফাইল-কার্ডের সাহায্যে বইয়ের নাম ও নম্বর খুজিয়৷ গ্রস্থাগার-পরিচালনায় নৰ পস্থা D6zى\سوt বাহির করিতে পারেন। আবার কেহ হয়ত গ্রন্থকারের নাম জানেন ; কিন্তু গ্রন্থের নাম জানেন না। তিনি "অথর-কার্ড’এর সাহায্যে পুস্তক বাছাই করিতে পারেন। যিনি বইয়ের নাম কিংবা গ্রন্থকারের নাম উভয় বিষয়েই অজ্ঞ, তিনি ‘সবজেক্টক্যাটালগে’র সাহায্যে পুস্তক নিৰ্ব্বাচন করিতে পারেন । র্যাহার ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরীতে গিয়াছেন তাহার। ‘কার্ডক্যাটালগে’র সহিত কথঞ্চিৎ পরিচিত আছেন। এইবার পুস্তক লেন-দেনের কথা। আমাদের দেশে এ-বিষয়ে “লেজার প্রথায় কাজ হইয়া থাকে। বই লেনদেনের সময় ইস্ক-রেজিষ্টারে' বইয়ের নম্বর, নাম, গ্রাহকের নাম, বই লওয়ার তারিখ, বই ফেরৎ দেওয়ার তারিখ, গ্রাহকের স্বাক্ষর, লাইব্রেরীয়ানের স্বাক্ষর প্রভৃতি লিপিবদ্ধ করিতে হয়। ইহাতে এক-একথান বই দিতে অনেক সময় লাগে। কোথাও কোথাও প্রত্যেক গ্রাহকের জন্য আলাদা পৃষ্ঠা থাকে ; সেই পৃষ্ঠা খুজিয়া বাহির করিতেও কিছু সময় লাগে । আবার কোন কোন স্থলে তারিখ অনুসারে সকল গ্রাহকের নাম পর-পর লিখিত হয়। ইহাতে বই ফেরত আসিলে গ্রাহকের নাম খুজিয়া বাহির করিতে কিছু সময় নষ্ট হয় । আজকাল ইউরোপ ও আমেরিকায় কার্ডের সাহায্যে অল্প সময়ের মধ্যে পুস্তক লেন-দেনের স্ববিধ হইয়াছে। লাইব্রেরীর প্রত্যেক বইয়ের পিছনের মলাটের সঙ্গে একটি কাগজের পকেট আঁট থাকে। ইহাকে ‘বুক-পকেট কহে। এই পকেটে একথান কার্ড থাকে ; তাহাকে ‘বুক-কার্ড বলা হয়। এই কার্ডে বইয়ের নাম ও নম্বর লিখিত থাকে। ইহা ছাড়া গ্রাহকের নম্বরের একটি ঘর এবং বই লওয়ার তারিখের একটি ঘর থাকে। ইহা ছাড়া বইয়ের পিছনে মলাটের সম্মুখস্থ সাদা পাতায় আর একখানা সাদা কাগজ আঁট থাকে । তাহাকে ‘ডেটু-স্লিপ বলে। এই স্লিপের উপরিভাগে বইয়ের নম্বর এবং বই কতদিন রাখা চলিবে তাহা লিখিত থাকে এবং বই দিবার তারিখের অনেকগুলি ছোট ছোট ঘর থাকে। প্রত্যেক গ্রাহককেও একখানা করিয়া কার্ড দেওয়া হয়। তাহাকে বিরোয়াস কার্ড বলে। এই কার্ডে গ্রাহকের নম্বর, নাম ও ঠিকানা লিখিত থাকে ; ইহা ব্যতীত বই বিলির এবং ফেরতের তারিখের একটি করিয়rবর থাকে। গ্রাহক নিজের ইচ্ছামত পুস্তক বাছাই করিয়া নিজের কার্ড