পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8°ኰ” সম্পর্কিত। খৃষ্টানদিগের বাইবেলগ্রন্থে যে জনপদের উল্লেখ আছে সেই জনপদের ভূগোল ও ইতিহাস বুঝাইবার জন্য এই বিভাগ গঠিত। Old Testament অর্থাৎ ইহুদিদের প্রাচীন ধৰ্ম্মপুস্তকে যেরূপ ধৰ্ম্মজীবন, মন্দির, যজ্ঞশাল, পশুবলি, আচারব্যবহার ইত্যাদির বিবরণ পাওয়া যায় তাহা আজকাল সহজে বুঝিবার উপায় নাই । ডাক্তার FTG foss ( Dr. Conrad Schick ) ATT so ব্যক্তি জেরুজেলেমে বসিয়া সেই জীবন বুঝিবার প্রয়াস করিতেছেন। তিনি নানা উপায়ে প্রাচীন হীব্র সভ্যতার চিত্র অঙ্কন করিয়া নানাস্থানে পাঠাইতেছেন। এখানে প্রাচীন ইহুদিমন্দির, সলমনের প্রাসাদ ও মন্দির, হীরডের ভবন ইত্যাদি কয়েকটি গৃহের কাল্পনিক চিত্র ও মডেল দেখিলাম । প্রাচীন প্যালেষ্টাইন ও সীরিয়ার নরনারীদিগের জীবনযাপন-প্ৰণালী ব্যতীত এই গৃহে আধুনিক এশিয়ামাইনরের দ্রব্যাদিও সংগৃহীত হইয়াছে। জীবজন্তু,কাঠ, ধাতু, পোষাক, অলঙ্কার ইত্যাদি নানাবিধ বস্তু দেখিতে পাওয়া গেল । "সেমিটিক" শব্দে একপ্রকার বিশেষ ভাষায় কথাবাৰ্ত্ত৷ বলে এরূপ জনগণের সংক্ষিপ্ত বিবরণ বুঝায়। এইরূপ আরএকটি শব্দ “অর্ঘ্য"। আর্য্য বলিলে পণ্ডিতেরা আর্য্যভাষাভাষী জনগণকে বুঝিয় থাকেন। ভাষা ব্যবহারের সঙ্গে রক্তসংমিশ্রণ অথব| বংশমর্য্যাদা কিম্ব জাতিকৌলীন্য ইত্যাদির কোন সম্বন্ধ নাই। নৃতত্বের (Anthropology) শ্রেণীবিভাগ অনুসারে আর্য্য বা সেমিটিক ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার হয় না। ভাষা-বিজ্ঞানের জাতিবিভাগ অনুসারেই এই সমুদয় পারিভাষিক শব্দ ব্যবহৃত হইয়া থাকে। সেমিটিক ভাষাভাষী জনগণের সভ্যতা প্রধানত: তিনটি ক্ষেত্রে বিকাশলাভ করিয়াছে। প্রথমত: প্রাচীন এসিরিয়া ও ব্যাবিলনিয়ার হিটাইটুসভ্যতা। দ্বিতীয়ত: প্রাচীন এশিয়ামাইনরের হীব্র বা ইহুদিসভ্যতা। তৃতীয়ত: বর্তমান আরবের মহম্মদীয় সভ্যতা । সুতরাং সেমিটিক সংগ্রহালয়ে মুসলমানী সভ্যতার নিদর্শনও থাকা আবশ্যক। হার্ভার্ডের মিউজিয়ামে তাহার কিঞ্চিৎ পরিচয় পাওয়া গেল। ভারতবর্ষ, মিশর, পারস্য ও আরব ইত্যাদি নানাদেশ হইতে সংগৃহীত কয়েকখান। প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড হস্তলিখিত কোরান-গ্ৰন্থ দেখিতে পাইলাম। কাইরোর আরবী মিউজিয়ামে এই-সমুদয় অসংখ্য দেখিয়াছি। বৰ্ত্তমান মুসলমান-জীবনও বুঝিতে পার গেল । আমেরিক জাতি-তত্ত্ব-আলোচনার প্রধান কেন্দ্র । AGJ Anthropology ( HEQ ), Ethnology / HTTPজাতিতত্ত্ব ) ইত্যাদি বিজ্ঞানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা সৰ্ব্বত্রই আছে । হাণ্ডার্ডবিশ্ববিদ্যালয়ে এজন্য নানাপ্রকার সুবিধাও প্রদত্ত হয়। ছাত্রবৃত্তি, পর্য্যটনের ব্যয়, নৃতত্ত্ববিষয়ক তথ্যসংগ্রহ ইত্যাদি সকলদিকে সুযোগ পাওয়া যায় । নৃতত্ত্বসম্বন্ধীয় সংগ্ৰহালয়ও মন্দ নয়—ইহা ক্রমশই বাড়িয়াই চলিয়াছে। ত্রিটিশ মিউজিয়ামে নিউইয়র্কের মিউজিয়ামে এবং হার্ভার্ডের এই মিউজিয়ামে—সৰ্ব্বত্রই লোহিতাঙ্গদিগের বৈষয়িকজীবন বেশ বুঝিতে পারা যায়। প্রধানত: চামড়ার কাজ এবং বেতের কাজে ইহার দক্ষ । ইহাদের দেবদেবী, মুখোস, ইত্যাদি অন্যান্য স্থানীয় নরসমাজের উদ্ভাবিত ধৰ্ম্ম-কলারই অতুরূপ বোধ হয় । ইহাদের হস্তশিল্প দেখিয়া মুগ্ধ হইতে হয়। বর্তমান যুগের বাপশক্তিব্যবহারের পূৰ্ব্বে ইয়োরোপের জনসাধারণ কিরূপ ছিল ? তাহা একবার | কল্পনা করিয়া লইলে লোহিতাঙ্গ ইণ্ডিয়ানদিগকে Primitive বা আদিম, অসভ্য, অথবা অৰ্দ্ধসভ্য বলিতে প্রবৃত্তি হইবে না। বস্তুত: রাগদ্বেষবিবর্জিত, কুসংস্কারহীন ও নিরহস্কার দৃষ্টিতে যতই মানবাত্মার বিভিন্ন অভিব্যক্তি দেখা যাইবে ততই "সভ্যতা” শব্দটা নূতন করিয়া বুঝিবার প্রয়োজন উপস্থিত হইবে । Comparative অর্থাং তুলনাত্মক জীববিদ্যা বিষয়ক সংগ্ৰহালয় নৃতত্ত্ববিষয়ক মিউজিয়ামেরই অনুরূপ । দুইই বহুকাল পূৰ্ব্বে প্রায় একসময়ে স্থাপিত। হার্ভার্ডে জীবতত্ত্ব ও প্রাণবিজ্ঞান সম্বন্ধে চর্চা অনেকদিন হইতেই চলিতেছে। এখানকার জীবতত্ত্ববিং আগাসিজ জগৎপ্রসিদ্ধ ছিলেন । এই সংগ্ৰহালয়ের একটি ক্ষুদ্র গৃহে জীবজগতের সকলগুলি বিভাগই অতি সংক্ষেপে দেখান হইয়াছে। এই গৃহে ২৪ বার যাওয়া আসা Zoology করিলে Zoology বা জীববিদ্যার প্রাথমিক জ্ঞান সহজেই লাভ করা যায় । এই হিসাবে নিউইয়র্কের ( Botanical Museum ) বোটানিক্যাল মিউজিয়ম ও বিশেষ উপকারী। I ৪র্থ সংখ্যা ] এই ক্ষুদ্র গৃহের জীবশ্রেণীগুলি দেখিয়া প্রত্যেক শ্রেণীর অন্তর্গত জীব-সম্প্রদায় দেখিবার জন্য অন্যান্য গৃহে আসিতে হয়। এইরূপ বহু কুঠুরী অতিক্রম করিলে জীবজগতের বৈচিত্র্য হৃদয়ঙ্গম করা যায়। সঙ্গে সঙ্গে প্রাচীনকালের জীবজন্তু বুঝাইবার ব্যবস্থাও আছে। এতদ্ব্যতীত সমুদ্রের অভ্যস্তর হইতে জীব-সংগ্ৰহ করিবার যন্ত্র, জাল, ইত্যাদিও দেখিতে পাইলাম । মিউজিয়ামগুলি আয়তনে স্ববৃহৎ নয় বলিয়া সহজে বুঝিতে পারা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ চালাইবার জন্য এইরূপ সংগ্রহই আবশ্যক। উচ্চ অঙ্গের অনুসন্ধান ইত্যাদির নিমিত্ত স্বতন্ত্র ল্যাবরেটরীর প্রয়োজন । মিউজিয়ামে তাঙ্গার ব্যবস্থাও আছে। একটা বিশেষ নিয়ম দেখিলাম । জনসাধারণ এই-সমুদয় সংগ্ৰহালয় বিনামূল্যে দেখিতে অধিকার পায়। প্রাচীন ক্রীটের মিনোয়ান সভ্যতা । একজন ইয়াঙ্কি বষ্টন-রমণীর গৃহে নিমন্ত্রণ ছিল। ইহার গৃহ যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ অঞ্চলে—নিগ্রোজাতীয় লোকেরা সাধারণতঃ ঐ অঞ্চলে বাস করে । এই ইয়াঙ্কিরমণী কুমারী অভিংটনের ন্যায় নিগ্রোসমাজের অন্যতম হিতৈষী— কিছুকাল হইতে উত্তরে আসিয়া বাস করিতেছেন। ইনি প্রথমেই বলিলেন “মহাশয় পৃথিবীর সভ্যতা এতদিন পুরুষের হাতে ছিল—ক্রমশঃ নারীজাতির হাতে আসিতেছে । ভবিষ্যতে মানবসমাজ রমণীতন্ত্র হইবে তখন সভ্যতার নূতন রূপ দেখিতে পাইবেন " আমি জিজ্ঞাসা করিলাম—“কিরূপ হইবে তাহার ইঙ্গিত করিতে পারেন কি?” ইনি বলিলেন—“জগতে যুদ্ধবিগ্রহ মারামারি কাটাকাটি থাকিবে না। আমার বিশ্বাস বৰ্ত্তমানে যে সংগ্রাম চলিতেছে ইহাই পৃথিবীর শেষ সমর। এইখানেই পুরুষ-নিয়ন্ত্রিত সভ্যতার চরম । রমণীর বাণী যদি আদৃত হইত তাহা হইলে যুদ্ধ বাধিত না।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম—“রমণী-জাতি কি যুদ্ধ চাহে .না? স্ত্রীলোকেরা কি দেশের গৌরব ও সম্মান রক্ষা করিতে ইচ্ছা করে না ? ইনি বলিলেন—"পুরুষের ওজর দেখায় যে তাহার রমণী-জাতির শোচনীয় পরিণাম নিবারণ পাতালের অক্সফোড় জন হার্ভার্ড, হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রপাত-কৰ্ত্ত । করিবার জন্য শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্ৰধারণ করে। কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে রক্তারক্তির ফলে স্ত্রীলোকের এবং পরিবারের স্থখবৃদ্ধি ত হয়ই না—শেষ পর্য্যন্ত দেশের মুখ উজ্জ্বলও হয় না। প্রথমতঃ, জননীরা তাহদের কৰ্ম্মঠ সন্তানগণকে স্বচক্ষে মরিতে দেখে । যুদ্ধে যেসকল পুরুষ প্রাণত্যাগ করে তাহাদের কষ্ট একপ্রকার নাই বলিলেই চলে। কিন্তু রমণীরা স্বামীপুত্ৰহীনভাবে প্রতিদিন তিল তিল করিয়৷ মরিতে থাকে। এই কষ্ট পুরুষেরা বুঝিবে না। তারপর যুদ্ধের সময়ে অবল রমণী কোথায় না লাঞ্ছিত অপমানিত ও নির্ধ্যাতিত হইয়াছে ? একে প্রিয়জনের বিয়োগ, তাহার উপর শক্রহস্তে অমানুষিক অত্যাচার-প্রত্যেক সংগ্রামে রমণীসমাজকে এই দুই প্রকার দুৰ্দ্দৈব ভোগ করিতে হয়। কাজেই যেদিন হইতে রমণীজাতি রাষ্ট্রশাসনে যথার্থ