পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢¢रे খ্ৰীষ্টিয়ান চেনা যায়, এ-সকল বিষয়ের শাস্ত ভাবে বিচার হইতে পারে, এবং হওয়া উচিত। কিন্তু কোন প্রকার আর্থিক ব্যাপারের সংস্রবে এরূপ বিচার কেহ উপস্থিত করিলেই ধৰ্ম্ম তখন ট্রেডমার্কায় পরিণত হয়। হিন্দু, মুসলমান, বা খ্ৰীষ্টিয়াম নামটি কেহ পরমেশ্বরের নিকট হইতে রেজিষ্টরী-করা একচেটিয়া ট্রেডমার্ক স্বরূপ প্রাপ্ত হয় নাই। এই সকল নামকে ট্রেডমার্কা-রূপে ব্যবহার করা ধৰ্ম্মের জঘন্ত অপব্যবহার। আমার গায়ে কোন একটি সম্প্রদায়ের ছাপ আছে, উহার গায়ে নাই ; অতএব আমার জিনিষ ভাল, উহার ভাল নয়, এরূপ কথা নিরক্ষর বা অল্পশিক্ষিত মুদি-ময়রারাও বলে না। কিন্তু কোন কোন সাহিত্যব্যবসায়ী স্পষ্টভাবে বা প্রকারাস্তরে এরূপ কথা বলিতে লজ্জ বোধ হয় না। অথচ দেখা যাইতেছে, পৃথিবীতে সাহিত্য হইতে আরম্ভ করিয়া কোন জিনিষেরই উৎকর্ষ, উৎপাদক ও বিক্রেতার ধৰ্ম্মসম্প্রদায়সূচক ছাপের উপর নির্ভর করে নাই। এই বাংলাদেশেই সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট মহাকাব্য, লিথিয়া গিয়াছেন একজন খ্ৰীষ্টিয়ান, মাইকেল মধুসূদন দত্ত । অধিকতর দুঃখের বিষয় এই যে দুর্ভিক্ষ ও বন্যায় বিপন্ন লোকদের সাহায্য করার মত সাধুকার্ঘ্যে ৪ কেহ কেহ ধৰ্ম্মকে ট্রেডমার্কায় পরিণত করিতে চেষ্টা করিতেছে। এত বেশী লোকের অন্নকষ্ট হইয়াছে, বন্যায় এত বেশী লোক নিরাশ্রয় হইয়াছে, ধে, যত দল লোক সাহায্যদানকার্ষে। ব্ৰতী হইয়াছেন, সকলে খুব চেষ্টা করিলেও হয় ত কেহ কেহ সাহায্য পাইবে না। অথচ ইহাতেও, অমুক লোকের হিন্দু নয়, উহাদিগকে টাকা দিও না, এরূপ লেখা কাগজে বাহির হইতেছে। সাহায্যদান একটা ব্যবসা নয়, এবং মগুলীবিশেষের নামও তাহার ট্রেডমার্ক নয়। যিনি ধেভাবে কাজ করেন, তদনুসারে তিনি সৰ্ব্বসাধারণের নিকট হইতে চাদ পাইতে পারেন; সাহায্যদানকাৰ্য্যে ব্ৰতী অন্য কোন দলকে গালি দিয়া টাকা সংগ্ৰহ করিবার কোন প্রয়োজন নাই। যুদ্ধের সময় থোকাথুকির জন্মের হার। গত অক্টোবর মাস হইতে অষ্টিয়ার রাজধানী উয়েন। নগরে যত শিশুর জন্ম হইয়াছে, তাহার কিয়দংশের সংখ্যা - برای برنمیمیر مینیمم ുസ്സു বিশ্লেষণ করিয়া দেখা যায় যে ৫৫৯টি শিশুর মধ্যে ெ বালক। সাধারণতঃ ঐ সহরে ১•• বালিকা জন্মিলে ১৯৮টি বালক জন্মে ; কিন্তু পূৰ্ব্বোক্ত সংখ্যাগুলি হইতে দেখা যায় যে ১৯১টি বালিকা এবং ১২৮টি বালক, এই অনুপাতে শিশুগুলির জন্ম হইয়াছে। ভয়েনার একটি শিশুদের তত্ত্বাবধায়কসমিতি বহুলন যে তাহদের যত্বাধীন পরিবারসকলে ১ বালিকা ও ১৪, বালক এই অনুপাতে শিশু জন্মিতেছে। যমকের সংখ্যাও বাড়িয়াছে। যুদ্ধের সময় স্ত্রীলোক অপেক্ষ পুরুষের মৃত্যু অনেক বেশী হয়। তাহতে যুদ্ধে লিপ্ত দেশসকলে নারী অপেক্ষ পুরুষের সংখ্যা অনেক কমিয়া যায়। এই অবস্থা স্থায়ী হইলে দেশের সকল প্রকার কাজেই অস্থবিধ জয়ে এবং সামাজিক পবিত্রত রক্ষা করাও কঠিন হয়। যুদ্ধের সময় বালক বেশী জন্মিলে দু-এক পুরুষে নরনারীর সংখ্যা আবার সমান হষ্টয় আসে। যাঙ্গারা আস্তিক তাহারা বিশ্বাস করেন যে বিধাতার কোন নিগৃঢ় নিয়ম অনুসারে এই প্রকারে সমাজের মঙ্গল সাধিত হয়। বিধাতার এই বিধান কি প্রণালীতে কাজ করে, তাহা এখনও নির্ণীত হয় নাই। ভারতীয় বিজ্ঞানমন্দির । রামমোহন লাইব্রেরীতে তাহার সম্বৰ্দ্ধন উপলক্ষে আচার্য জগদীশচন্দ্র বস্তু যে বক্তৃত করেন, তাহার প্রারম্ভে তিনি বলেন যে তিনি কিছুদিন হইতে বিজ্ঞানের যে বিভাগে নূতন নূতন সত্য আবিষ্কার করিতেছেন, তাহাতে ভারতবর্ষ যে ইউরোপ আমেরিক অপেক্ষ অগ্রসর তাহ ঐ দুই মহাদেশের বৈজ্ঞানিকগণ স্বীকার করিয়াছেন। তথাকার কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় হইতে বিদ্যার্থীর তাহার নিকট শিক্ষা পাইবার জন্য আবেদন করিয়াছে। এই প্রকার ঘটনার মধ্যেই প্রকৃত ভারতবর্ষীয় বিশ্ববিদ্যা, লয়ের স্বচন দেখা যাইতেছে। এখন ভারতবর্ষে যেসকল বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেগুলিকে “ভারতবীর বিশ্ববিদnলয়" না বলিয়া বলা উচিত “ভারতবর্ষে স্থিত পাশ্চাত্য বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ এইগুলিতে ভারতবর্ষের নিজের জ্ঞানরত্ব আবিষ্কৃত, আন্ধত বা বিতরিত হয় না, কিন্ধনিজের কোন শিক্ষাপ্রণালী অমুস্থত হয়। না। নান প্রবাসী-ভার্জ, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ,১ম খণ্ড | م--------------------------------.... দেশে যে-সকল টোল আছে, তাহাদের নানা অসম্পূর্ণতা সৰেও বরং তাহাদিগকে ভারতবর্ষীয় বিশ্ববিদ্যালয় বল৷ স্থায় ; কারণ তথায়। ভারতবর্ষের জ্ঞান ভারতবর্ষের প্রণালী অনুসারে ছাত্রগণ লাভ করে। আচাৰ্য্য বস্ব মহাশয় তাহার বক্তৃতাতে যে বিদ্যমন্দিরের কথা বলিয়াছেন, যেখানে ভারতবর্ষীয় সত্যাম্বেী নিজের আবিষ্কৃত সত্য বিদ্যার্থীদিগের গোচর করিবেন, এবং তাছাদের প্রাণে সত্যজিজ্ঞাসার উদ্রেক করিবেন, সেই বিজ্ঞানমন্দিরই প্রকৃত আধুনিক ভারতবর্ষীয় বিশ্ববিদ্যালয় হইবে। তখন আবার, যেমন প্রাচীন নালন্দা তক্ষশিলায় নানাদেশ হইতে আগত ছাত্রের শিক্ষালাভ করিত, তেমনি সেখানে নানাদেশের ছাত্রের বিদ্য। অর্জন কৱিবে। এই বিদ্যামন্দির প্রতিষ্ঠিত করিয়া স্থায়ী করিতে হইলে, কতকগুলি জ্ঞানতপস্বীর প্রয়োজন, যাহারা সাংসারিকমুখ ঐশ্বর্ষ্যের বিষয় ভাবিবেন না এবং যাহাদিগকে দেশবাসীগণ খাওয়াপরার জন্য উপার্জনের উদ্বেগ হইতে মুক্ত রাখিবেন। তাহার কেবল জ্ঞানলাভে ও জ্ঞানদানে ব্যাপৃত থাকিবেন। ইংরেজের যখন আমাদিগকে চাকরীর প্রাণী না হইয়া সত্যাম্বেৰী হইতে বলেন, তখন সে উপদেশ আমাদের ভাল লাগে না। কারণ, তাহার মোট বেতনের সব চাকরীগুলি একচেটিয়া করিয়া লইয়া টাকার থলিগুলির বোঝা বহন করিয়া নিজনিজ সিন্দুক পূর্ণ করিবার ভার নিজেদের উপর রাখেন এবং কেবল উপদেশের বোঝাটা আমাদের ঘাড়ে চাপাইয় দেন। কিন্তু আমরা আমাদের নিজেদের মধ্যে শ্রমবিভাগ করিয়া লইতে চাই। সংবাদপত্রসম্পাদকগণ, ব্যবস্থাপক সভার সভ্যগণ, কংগ্রেস কনফারেন্সের বক্তাগণ যোগ্য ভারতবাসীরা যাহাতে উচ্চবেতনের কাজ পান তৰিয়ে চেষ্টত থাকিবেন। কিন্তু যাহারা সত্যাম্বেষী তাহারাটাকার জন্য স্থা করিয়া বসিয়া থাকিবেন না। র্তাহারা ভারতের ও জগতের জ্ঞানবৃদ্ধির চেষ্টাই একাগ্ৰচিত্তে করবেন। বেশী টাকার চাকরী করিলেই ভারতের জ্ঞান গোঁৱৰ বাড়ে না। আচার্ধ্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় শিক্ষাবিভাগের প্রাদেশিক স্তরেই রহিয়া গেলেন, তাহার পর তাহার চেম্বে যোগ্যতর মহেন এমন ২৪ জন ভারতবাসী উচ্চতর

বিবিধ প্রসঙ্গ-জাপান ও ভারতবর্ষ AMMMMAMMJMBMBMeTTS @@& বিভাগে কাজ পাইয়াছেন। কিন্তু দেশের জানগোঁৱৰ কাহার দ্বারা বাড়িতেছে, তাহা সকলেই জানেন। আচাৰ্য্য জগদীশচন্দ্র বস্তু উচ্চতর বিভাগে কাজ করিয়া আসিক্তে ছেন; কিন্তু ভারতবর্ষের জ্ঞানগৌরব তিনি বড় চাকরী করিয়াছেন বলিয়া বাড়ে নাই, তাহার প্রতিভ, অধ্যবসায় ৪ একাগ্রতা দ্বারা বাড়িয়াছে। আমরা জানি উচ্চতর বিভাগে কাজ পাইলে গবেষণার বেশী সুযোগ পাওয়া যায় ; কিন্তু সেই স্থযোগের সদ্ব্যবহার কয় জন করে ? পক্ষান্তরে, বৈজ্ঞানিক আবিজিয়ার ইতিহাসে দেখা যায় যে সামান্য ব্যয়ে ও সামান্ত আয়োজনে গরীব লোকদের দ্বারা অনেক বড় আবিক্রিয়া হইয়াছে। জাপান ও ভারতবর্ষ। আচাৰ্য্য বস্থ মহাশয় তাহার বক্তৃতায় বাণিজ্য শিল্প প্রভৃতি বিষয়ে জাপানীরা যেরূপ সিদ্ধি লাভ করিষ্কাছে, তাহার বর্ণনা করিয়ু, জাপান যে ভারতবর্ষের আশঙ্কার একটি গুরুতর কারণ তাহার উল্লেখ করেন। আশঙ্কা দুই রকমের, বাণিজ্যিক ও রাষ্ট্রনৈতিক।-বাণিজ্যিক আশঙ্কার কথা তিনি খুব খুলিয়া বলিয়াছেন, রাষ্ট্রনৈতিক বিপদ সম্বন্ধে কেবল ইঙ্গিত করিয়াছেন। আমরা প্রবাসীতে উভয় প্রকার বিপদের কথা বহু পূৰ্ণ হইতে বলিয়া আসিতেছি। জাপান কিরূপে আমাদের দেশে বাণিজ্যবিস্তার করিতেছে, এবং জাপানী জিনিষকে প্রায় স্বদেশীর সমান আদরণীয় মনে করা যে কিরূপ ভূল, তাহ আমরা অনেকবার বলিয়াছি। সম্প্রক্তি ভারতবর্ষের বাজারে অষ্ট্রিঞ্জ, জামেনী ও বেলজিয়মের সস্তা জিনিষ সব আর পাওয়া না যাওয়ায় জাপান সব রকম জিনিষে ভারতের বাজার পূর্ণ করিবার জন্ত বিপুল উদ্যমে লাগিয়া পড়িয়াছে। জাপানীরা জামেনদের চেয়েও সপ্ত দরে জিনিষ বেচিতেছে। তাহার নানারকম কারণ আছে। জামেনীর চেয়ে জাপানে মজুর সস্তা, জাপানীরা কৃষি ও শিল্প দুই একসঙ্গে চালাইতে অভ্যস্ত। এইরূপ আরঙ অনেক কারণ আছে। সময় থাকিতে সাবধান না হইলে জাপানীদের প্রতিযোগিতায় কেবল যে ভারতবর্ষীয় শিল্প নষ্ট হইবে তাহ নয়, ইংলণ্ডের ভারতবর্ষীয় বাণিজ্যও নষ্ট হইবে। ইতিমধ্যেই তাহার লক্ষণ দেখা যাইতেছে। সকলেই জানেন