পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ولاهما

  • ヘ^^ヘヘヘヘヘヘヘヘヘいペ、いし、ヘル、ヘヘヘヘ

( २ ) যথাসময়ে স্কুলের কৰ্ম্মে ছুটি লইয়। রুদ্রকান্ত কলিকাত৷ গিয়া যথাবিহিত বিধানে পরীক্ষা দিয়া যেদিন বাট ফিরিল, তাহার পরদিন প্রাতঃকালে ওপাড়ার তিহুশেখ আসিয়। ক্টাদিয়া বলিল, রুদ্রকাস্তের অনুপস্থিতিকালে জমিদারের কোপে তাহার সৰ্ব্বনাশ হইতে বসিয়াছে,—তাহার বাটীর প্রবেশপথে সরকারী সঙ্কীর্ণ রাস্তায় দুই তিনটি বিষ্কৃতশাখা নারিকেল গাছ জন্মিয় পথটি চলাচলের পক্ষে অত্যন্ত অপরিষ্কার করিয়া তুলিয়াছিল বলিয়, সেগুলি সে প্রায় পাচমাস পূৰ্ব্বে কৰ্ত্তন করিয়া দিয়াছিল ; এখন জমিদার বক্রেশ্বর বস্ব সেই তুচ্ছস্বত্র ধরিয়া মামল বাধাইয়। তাহাকে সৰ্ব্বস্বাস্ত করিবার উপক্রম করিয়াছেন । এমন কি স্ত্রীলোকদের পর্য্যন্ত সন্ত্রম রক্ষা করা দায় হইয়। উঠিয়াছে ! রুদ্রকাস্তু তখনি তাহার সহিত ঘটনাস্থলে গিয় স্বচক্ষে সব দেখিয়া এবং তাঁহার মুখে জমিদারের অন্যায় অত্যচারের কাহিনী সব শুনিয়া অত্যন্ত উষ্ণ হইয়া উঠিল, এমন নরাধম উন্থ লোকদের কাছে স্তুতি মিনতির সহিত মামলা তুলিয়া লইবার অনুরোধ করার কল্পনার বিরুদ্ধে তাহার চিত্ত একেবারে উদগ্র হইয়া বাকিয় বসিল। রুদ্রকান্ত সজোরে তিতুশেখকে জিজ্ঞাসা করিল,—“সাক্ষী আছে কে?” তিস্থশেখ বলিল তাহার মাতুল জমিদারের নায়েব নলীরুদ্দীন শেখ একজন, দ্বিতীয় ব্যক্তি জমিদারেরই অন্তগ্রহ-পালিত ব্যবসাদার সাক্ষী । নসরুদ্দীন শেখকে রুদ্রকান্ত বিশেষভাবে চিনিত, এক সময় সে তাহার মাতুলের নিকটই গোমস্ত ছিল, এখন কৰ্ম্মদক্ষতার গুণে বক্রেশ্বর বস্থর সৰ্ব্বোচ্চ কৰ্ম্মচারীরূপে পরিগণিত হইয়াছে। নগীরুদ্দীন লোকটির বয়স হইয়াছে, এবং সকল দিকে একরকম শাস্ত শিষ্ট বুদ্ধিমান হইলেও প্রজ৷ পীড়নের কার্য্যে একেবারে নিৰ্ম্মমরূপে ধৰ্ম্মহীন,—এ স্বভাব অনেকটা প্রভূর মনস্তুষ্টির জন্যও বটে। রুভ্রকান্ত তৎক্ষণাং সেই বেশে দ্বিপ্রহরের রৌদ্রে লাঙ্গল-কর্ষিত উত্তপ্ত মাঠ অতিক্রম করিয়া তিমুশেথকে প্রবাসী-ভাদ্র, ১৩২২ ༧ ༨ ། །: , ༦༨ | [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড --০৮:৪৪, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)০৮:৪৪, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি) সঙ্গে লইয়া তাবিঙ্গপুরের জমিদার কাছারীতে গিয়া উপস্থিত হইল। দ্বারে ঝাকৃড়া-কেঁকুড়া চুলো গালপাটা-বাধা নিটোলমন্থণ কৃষ্ণকাস্তি বাগদী জাতীয় নদীর দল অতিক্রম করিয়া সবেগে কাছারীর মধ্যস্থলে গিয়া রুদ্র কান্ত দাড়াইল৷ জমিদার বাবু তখন স্নানাহারে উঠিয়া গিয়াছেন, নায়েব গোমস্তার দল তল্পতল্প গুটাইয়া উঠিবার উপক্রম করিতেছে। হাওকাটা লংক্লথের মেরুজাই গায়ে নায়েব নসীরুদ্দীন শেখ শটুক টানিতেছিলেন, এবং নিকটে মাসিক ৬ টাকা মাহিনীর আলবার্ট-টেড়ি-কাটা আদ্ধির-পাঞ্জাবী-গায়ে ফিতাপেড়ে ধুতি-পরণে সগোপ জাতীয় এক ছোকরা গোমন্ত৷ কি একটা রেজেষ্ট্রী দলিল অত্যন্ত দ্রুতস্বরে পড়িয়া শুনাইতেছিল। ময়লা জুটফ্লানেলের-কামিজ-গায়ে, চটিপায়ে শুষ্ক-কঠোর-মূৰ্ত্তি ক্ষুদ্রকান্ত অকস্মাং সামনে আসিয়া দাড়াইতে নসীরুদ্বীনের শটুকী স্তন্ধ হইয়া গেল, বিশ্বিত হইয়৷ বলিলেন “একি ?” রুদ্রকান্ত ভূমিকা মাত্র না করিয়া একেবারে পাশ্ববর্তী তিস্থশেখকে টানিয়া সামনে আনিয়া দৃঢ়স্বরে—আমুরোধ নয় –স্পষ্ট আদেশ করিল—“দরিদ্রকে উৎপীড়ন করিলে চলিবে না, অন্যায় মামলায় মিথ্য সাক্ষ্য দিওনা ।” মলিনবেশী অপরিচিত লোকটির অপরিসীম ধৃষ্টতায় আশ্চৰ্য্য হইয়া ছোকুর গোমস্তাটি দ্রুত রুক্ষস্বরে স্বধাইল, “তুমি কেহে? পাগল নাকি ?” রুদ্রকান্ত তাহার প্রতি দৃকপাত করিল না। পুনশ কঠোর স্বরে নগীরুদ্দীনকে আপনার বক্তব্য বুঝাইয়া দিল, এবং তিনকড়ি শেখ যখন ধৰ্ম্মাবতাররূপী মাতুলের উদেশে কাদ-কাদ স্বরে ধৰ্ম্মের দোহাই, রক্তের সম্পর্ক, নাড়ীর টান, ইত্যাদি আধ্যাত্মিক তত্ব লইয়া বক্তৃতা করিবার। উপক্ৰম করিল, তখন ক্ষুদ্রকান্ত বজ্রগঞ্জনে তাহাকে নিরন্ত হইতে এমনই আদেশ দিল যে তিনকড়ির আর বাক্য: স্মৃত্ত্বির ক্ষমত রহিল না। ༥།༽ নসরুদ্দীন রুদ্রকাস্তকে বিশেষ রকম চিত; এক সময় তাহাকে ভয়ও বিলক্ষণ করিত,-কিন্তু এখন উষ্ণমস্তিষ্কে ক্ষুধাপূর্ণ উদরে, মৰ্ম্মঘাতী শ্লেষের ছলে বিদ্ধ হইয়া, ৫ম সংখ্যা] জলিতচিত্তে প্রৌঢ় নলীকদ্বীন স্বভাবসিদ্ধ মৃদুবচনে তিনকড়িকে গোটকতক মৰ্ম্মান্তিক তীক্ষ কথা নাই। বুদ্ধিমান রুদ্রকান্ত বাবুকে অনধিকারচর্চা ছাড়িয়া আপনার চরকায় তৈল প্রয়োগ করিতে উপদেশ দিলেন। তাসহিষ্ণু হুইয়। রুদ্র কাস্ত বলিল “আমি কথা নিয়ে ঝগড় করতে আসিনি, এসেছি কাজের জন্তে " " পরম ঔদান্তে চক্ষু হইতে চশমা খুলিয়া, নসীরুদ্দীন মিষ্ট মিষ্ট বচনে বলিল "তা অবশ্য, কিন্তু সে কথা ত আমার সঙ্গে হবে না, কৰ্ত্তার হাত সে, তিনি আস্থন”— ছোকরা গোমস্তাটি লঘু কণ্ঠে দ্রুতস্বরে বলিল “কওঁ। আসবেন বেলা চাট্রেয়, হয় সেই পৰ্য্যন্ত বসে থাক, না হয় ফিরে যাও ।" রুদ্রকান্ত বসিল ও না, ফিরিলও না, ক্ষিপ্ত ক্রোধে গর্জন করিয়া বলিল “তুমি সাক্ষী ?—নগীরুদ্দীন সাহেব, জানোয়ারের চামড় পরে জানোয়ারের কাছে নায়েব করতে এসেছ ? জীবন মরণের তোয়াক্কা ছেড়ে—হাতের জোরে গরীবের গলায় ছুরী দাও ? খাওয়া অভাবে যে হতভাগার প্রাণে মরে রয়েছে, জলে ভিজে রোদে পুড়ে শোকে রোগে দেহ পাত করে যারা তোমাদের ডান হাতের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে,—বছরে কিস্তি কিস্তি যাদের রক্ত শুষে চৰ্ব্বি ফোলাচ্ছ—তাদের নির্দম করে পিষে ফেলবার জন্যে, গাটের টাকা খরচ করে আইন আদালত করবে ? তোমরা উচ্ছন্ন যাও, তোমাদের জমিদারী উচ্ছন্ন যাক, তোমার জমিদার উচ্ছন্ন যাক। চলে এস তিনকড়ি, দেখা যাক কি হয়। জানোয়ার সবাই নয়, মানুষও আছে!" তিনকড়িকে টানিয়া লইয়া রুদ্র কাস্ত দ্রুতপদে চলিয়। ( | নসীরুদ্দীন উঠিয় দাড়াইল, ছোকরা গোমস্ত দলিলহাতে স্তম্ভিত হইয়া বসিয়া রহিল, বহিদ্বর্ণরে নগদীর দল লাঠি ঘাড়ে তুলিয়া পরস্পর মুখ চাওয়াচাওয়ি করিতে লাগিল । ( 2) ”یے “জনৈক উদ্যোগ আয়োজনে, অনেক কাট খড় পূড়াইয়া, যথাকালে তিনকড়ি শেখের মামলাপর্ক শেষ ੋ కాక 4 من হইল ; রুদ্রকান্ত স্বয়ং দেনা করিয়া, ভাল ভাল উকীল মোক্তার লাগাইয়া, প্রচুর তদ্বিরের দ্বার মোকদম চালাইল। ফলে তিনকড়ি শেপ বে-কতুর অব্যাহতি লাভ করিল, এমন কি কাৰ্বত গাছ তিনটির মূল্য বাবদ, যে এক টাকা দশ আন দুই পয়ল দণ্ড দিতে বাধ্য হইবার উপক্রম হইয়াছিল, তাহাও নাকি প্রধান সাক্ষী নীরুদ্বীনের দোষে বৃদ্ধ হইয়। গিয়াছে, সাক্ষীর কাটগড়ায় দাড়াইয়া, একবার নাকি তিনি “ই৷” বলিতে ভুলিয়। "না" বলিয়া ফেলায়, উক্ত বিপত্তির ভিত্তি স্থাপন হয়—পরে উকীলের মুখে লিপির পাক সদৃশ স্বয়ম্বন্ধ জেরা সমষ্টির প্রবল আবর্তে পড়িয়া সোজা মামলাটি একেবারে বাকিয়া চুরিয়া নিঃশেষে । উৎসন্ন হয় । - - - তিনকড়ির মামলার রায় বাহির হইবার পরদিনই রুদ্রকাস্তুের পরীক্ষার ফল বাহির হইল, সে প্রথম স্থান লাভ করিয়া পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছে। রুদ্রকান্ত সংবাদটা শুনিল মাত্র বিশেষ উৎসাহিত হইতে পারিল না, কেননা সে তখন পরিপূর্ণ চেষ্টায় দেন পরিশোধে মনোযোগী। যতক্ষণ কাজ সামনে পড়িয়া থাকে ততক্ষণ সে শুধু পূর্ণোদ্যমে থাটিতে থাকে, কাজটা শেষ না হওয়া পৰ্যন্ত নূতন চিন্তায় নূতন সঙ্কল্প গঠন তাহার দ্বারা সম্ভবপর নহে। অক্লাস্ত পরিশ্রমে চেষ্টা করিয়া পশ্চিমে এক প্রসিদ্ধ উকীলের দুইটি ছেলেকে পড়াইবার চাকরী যোগাড় করিল, বেতন দুই শত টাকা; চাকরী ঠিক হইবামাত্র একটি দিন বৃথা নষ্ট না করিয়া, রুদ্রকান্ত সরাসর একাকী পশ্চিম চলিয়৷ গেল। বাটীতে গিয়া পত্নীর সহিত সাক্ষাং করিয়া কাম্নাকাটির আড়ম্বরে বিদায়ের ব্যাপারটা খুব জাকাইয়ু তুলিবার লেশ মাত্র ইচ্ছা ছিল না, সুতরাং চণ্ডালবধূর তত্বাবধানে পত্নীকে রাখিয়া, তিনকড়ি প্রভৃতিকে মৌখিক খোজ খবর লইতে বলিয়া, আপনি চলিয়া গেল। নৈশবিদ্যালয় তখন অবশ্য উঠিয়া গিয়াছিল। কৃতজ্ঞ তিনকড়ি শেখ বাড়ীতে আসিয়া দুটি বেলা মাতৃসম্বোধিত হৰ্ষমার তত্ত্ব লইয়া যাইত, এবং প্রত্যহ রাত্রে সপরিবারে আসিয়া আপনি রুদ্রকাস্তের বহির্বাটতে শয়ন করিত ও পত্নীকে বাটীর মধ্যে শিশুপুত্র লইয়া শয়ন করিতে পঠাইয়া দিত। - SJSMSMS SS