পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সম্পূর্ণ হয় না। সাংখ্যকার বলিয়াছেন, অতিদূরত্ব হেতু, অতিসামীপা হেতু, স্বশ্বত্ব হেতু, অন্য বস্তুর ব্যবধান হেতু, অন্য পদার্থের দ্বারা অভিভব হেতু, সমান বস্তুর সহিত মিশ্রণ হেতু প্রত্যক্ষ জ্ঞানের বাধা হইয় থাকে। তখন স্বত্রের বিন্যাসে সংশয় আসে। সংশয় ও বিতর্কে স্বত্র কল্পিত হয়, উহ আশ্রয় করিতে হয়। নূতন-লব্ধ জ্ঞান পুরাতন স্বত্রের, - সংশয় চিরদিন থাকিবে, সংশয়-মোচনের প্রয়াস– গবেষণাও চিরদিন থাকিবে! - কিন্তু এত চেষ্টা এত গবেষণা কাহার নিমিত্ত ? প্রকৃতি পুরুষের, সেই আমার, নিমিত্ত, আমার বর্তন নিমিত্ত বিজ্ঞান। আমাকে ছাড়িয়া বিজ্ঞান নহে। আমার সৌখ্য চিন্তা বিজ্ঞানের কৰ্ত্তব্য না হইলে বিজ্ঞানে কি ফল ? স্বদেশের বিদেশের আমির সৌখ্য নহে, মানবের সৌথ্য বিজ্ঞানের চিন্তা। ইহার দেশ বিস্তীর্ণ, কাল বিস্তীর্ণ, পাত্র বিস্তীর্ণ। এই হেতু বিজ্ঞানের সমাদর, পূজা ; বিজ্ঞানের - - দেশে বিজ্ঞানের স্থিতি । ੰ “” - এখানে অনেক বিজ্ঞান-অধ্যাপক উপস্থিত আছেন , তাহাদিগকে আমি একটা প্রশ্ন করিতেছি। তাহারা বিজ্ঞানের সার্থকতা দেখিতেছেন কি? কয়জন ছাত্র পাইয়াছেন, যাহার বিজ্ঞানের মহত্ব হৃদয়ঙ্গম করিয়াছে, যাহাদের চরিত্রে বিজ্ঞানের বিনয় ও জ্ঞানের লক্ষণ দৃষ্ট হইয়াছে, যাহারা - বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধিসংগ্ৰহ মুখ্য উদেশ্ব না করিয়া বিজ্ঞানশালায় প্রবিষ্ট হইয়াছে ? আমার জানায় শত জনের - په بينيټه د - - পাচজনও হয় কিন, সন্দেহ। কিছুকাল বিজ্ঞানশালায় কাটাইলে বৈজ্ঞানিক মার্গে চলিলে বিনয় অবশু অভ্যাস -- - o হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার যোগ্য জ্ঞানও অবশ্ব হয়। - কিন্তু ইহাই কি পরম লাভ বলিতে হইবে ? কেহ কেহ বৈজ্ঞানিক তথ্য আবিষ্কার দ্বারা বিজ্ঞানঅভ্যাসের সফলতা দেখিতে অভিলাষী। এই যথার্থ মুভিলাষ - প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩২২ S S S S S S S S S S S SJJMSJMMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSS [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড পূর্ণ হইতেছে না কেন ? ছাত্রের দোষে ? আমাদের ছাত্রের ওড়বুদ্ধি, অধ্যবসায়হীন ? বিলাতের লোকের, অধ্যাপকের কিন্তু আমাদের ছাত্রদিগের মেধা দেখিয়া চমৎকৃত হন। । কেহ কেহ বলেন, আমাদের, অধ্যাপকবর্গের অসিদ্ধিহেতু । .ছাত্ৰগণেরও অদিদ্ধি। যাহার স্বয়ং অসিদ্ধ, তাছার অপরকে সিদ্ধ করিতে পারেন না। কথাটা একেবারে হইবে, অধ্যাপকবর্গের অসিদ্ধিরও কারণ আছে। অধিকাংশ সময় দৈনন্দিন অধ্যাপনায় কাটে। ইহার পর ক্লাস্তি আসে । শরীর মন বয় না। যাহারা এই গুরুকৰ্ম্মের পর বৈজ্ঞানিক অতুসন্ধানে রত হইতে পারেন, তাহারা নিশ্চয়ই অসাধারণ। হয়ত তাহারা লোহার দেহ পাইয়াছেন, কিংবা দেহটা ক্ষণভঙ্গুর করিয়াছেন। এখানে মধামের কথা সাধারণের কথা আলোচ্য। চারিপাচ বৎসর পূর্ব পর্য্যস্ত কলেজের । অধ্যাপকের নিজের বলিতে একটু সময় থাকিত না; } এমন ঘটনাও জানা আছে অধ্যাপকের গবেষণার প্রতি- বা গড়ে, কিংবা পিতার সাহায্য করে ? চেষ্টা করিলে কূলতা করা হইত। কলেজের বাহিরের লোকে এসৰ সংবাদ রাখেন না, অধ্যাপনার ঘণ্ট। গণিয়া অধ্যাপকের শ্রমের পরিমাণ করেন। ক্লাস্তি ও অবসাদ আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশযোগ্য হইলেই সকল ছাত্র মেধাবী ও শ্রমশীল হয় না। অবকাশ আছে বটে, কিন্তু সকল দেশ দার্জিলিঙ্গ নহে ; - গ্রীষ্মের - বিজ্ঞানকৰ্ম্মশালায় ১ম সংখ্যা ] -- ------------ - ছাত্রের চর্ণিত চৰ্ব্বণ করে, যে বিষয়ের অধ্যাপনা হইয়াছে, যাহা ছাত্রেরা শুনিয়াছে দেপিাছে, তাহারই পুনরাবৃত্তি করে। ইহাতে তাহদের হাত আসে, কিন্তু উপায় করে না, সে সমাজের বুদ্ধির প্রশংসা করিতে কিন্তু বুদ্ধি আসে না। হাত আন চাই না, নহে ; কিন্তু কেবল অভ্যাস উদেখা নহে। বহু বহু ছাত্র চোখ বুজিয়া o অভ্যাস করে ; পুস্তকে মুদ্রিত উপদেশ পড়িয়া যথাযথ ভাবে এ দ্রবোর - সহিত সে দ্রব্যের যোগাযোগ করে । অধ্যাপকের উপদেশ শুনিয়া কিংবা কৰ্ম্ম অর্থাং তাহারা অনুকরণে দক্ষ হয়, প্রকরণে হয় না। বলা বাহুল্য, প্রকরণের । সঙ্গে-সঙ্গে কৰ্ম্মে অভ্যাস জন্মিতে পারে। কলেজে প্রথম বর্ষ হইতে ছাত্রকে গবেষণায় প্রবৃত্ত কবিতে পারিলে তাহার কৰ্ম্মশক্তি, আত্মপ্রত্যয় জন্মে, শিক্ষায় উৎসাহ হয়। কখনও কোন ছেলেকে মকষ করিতে ব্যগ্ৰ দেখিয়াছেন কি ? দেশের ছুতারের ছেলে কি বাটালি করাত লইয়া কিছুদিন হাত করে, না প্রথম হইতেই ছোট ছোট কিছু প্রয়োজনীয় আমিও পারি, আমিও মানুষ ; এই প্রত্যয় দৃঢ় হইলে আর |- - | কিছু দেখিতে হয় না। অন্ততঃ জ্ঞানান্বেষণা, গবেষণার তাহারা জানেন না, ছাত্রদিগের বিজ্ঞানকৰ্ম্মশালায় তাহাদের সহিত দুই ঘণ্টা পরিশ্রমে কি ৷ নামে ভয় ঘুচিয়া যায়। অবশু, কথাটা বলা যত সোজা, - কথার মতন কাজ করা তত সোজা নহে। তথাপি এই আদর্শ ধরিয়া চলিতে চলিতে উপায়ও আসিতে পারিবে । বস্তুত, আমরা যে বিজ্ঞানের অন্বেষণ করিতেছি, তাহ ধনশালী ইয়ুরোপের বিজ্ঞান। বিজ্ঞানশিক্ষা ব্যয়সাধ ; এবং নহে বলিয় অবকাশ দেওয়া হইয়া থাকে। তথাপি । ইয়ুরোপে ও আমেরিকায় যেখানে ছাত্রের শিক্ষার সম্যক কলেজের বিজ্ঞান-অধ্যাপকগণের নিকট গবেষণা আশা করা অন্যায় নহে । কি কারণে এদেশে বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত হইতেছে না । তাহার পর্য্যালোচনা আবশ্বক হইয়াছে। ডা: বস্ব কিংবা ডাঃ রায় কিংবা তাহার দুই চারিজন ভাগ্যবান ছাত্রের - সকল বিষয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের । স্বারা দেশের দশ ফিরিতে পারে না। মধ্যম লইয়া বিচার করিতে হইবে । নূতন বিধানে ছাত্রের জ্ঞান পূৰ্ব্বাপেক্ষা গাঢ় হইতেছে। এখনও ইহার ফলভোগের সময় আসে নাই, কিন্তু অধিক প্রত্যাশার হেতুও দেখিতেছি না। এই নূতন বিধানও আমাদের দোষে সম্যক ফলদায়ক হইতেছে না। অধিকাংশ -- - - - - ব্যবস্থা আছে সেখানে আরও ব্যয়সাধ্য। অথচ আমরা সে দেশের সিদ্ধির সহিত এদেশের কৃত কৰ্ম্মের তুলনা করিতে চাই। বামুনের গরু সুলভ নহে। অবশ্য এমন বিষয় আছে, যাহার এষণায় প্রচুর অর্থব্যয় আবশ্বক হয় না। নাই হউক ; কিন্তু যে ছাত্রের অনুচিত। চমৎকারা, তাহার নিকট অন্য চিন্তা উপহাস্য নহে কি ? কি কায়ক্লেশে অধিকাংশ ছাত্র বিদ্যা অভ্যাস করে, তাহা ত আমাদের অজ্ঞাত নহে। আগে প্রাণৈষণ, তার পর অল্প কথা । প্রাগৈষণার পর ধনৈষণ স্বাভাবিক। আমরা চাই, জানৈক্ষণ। আমরা চাই, আমাদের ছাত্রের ধন মান তুচ্ছ করিয়া, মরি-পাচি পণ করিয়া জানমার্গে দেশে বিজ্ঞান-প্রতিষ্ঠা পারি না। এই ঘোর কলিকালে, জ্ঞানার্থে জ্ঞান অর্জন, । সত্যযুগেও বিনা ৷ ধৰ্ম্মার্থে ধৰ্ম্মাচরণ কদাচিৎ সম্ভবে। আয়োজনে বিনা ব্যয়ে যজ্ঞ সমাধা হইত না। অন্যকে যজ্ঞকারীকে ঋত্বিকৃগণের গ্রাসাচ্ছাদনের ভার লইতে হইত। - যখন উপযুক্ত ছাত্র সমাজকে জিজ্ঞাসা করে, কেন তাহাকে অনশনে নিষ্কাম-ব্রতের আদেশ হইতেছে, কেন সেই “চৌর্য্যাপরাধে দোষী’ হইঘাছে, কেন সে উকীল হাকিম হইয়। অপর দশজনের তুল্য সংসারধৰ্ম্ম প্রতিপালন করিবে রায়ের কয়েকটি কৃতী ছাত্র গবেষণা ত্যাগ করিয়া গৃহস্থাশ্রমে ধনোপার্জনে মনোযোগী হইয়াছে। আমি ইহা দূষ্য মনে বটে, কিন্তু তাহাদিগকে কি প্রত্যাশা দিয়াছিলাম ? এই - দুশ্চিন্তার সময় স্যর তারকনাথ পালিত ও মহোদয় রাসবিহারী ঘোষ বদান্যতার দ্বারা আমাদিগকে কিঞ্চিৎ আশা ১৩১ ৷ ধাবিত হউক। কিন্তু চাইলেই আকাশের চাদ হাতে । চলিয়া আসে না। যে সমাজ জ্ঞানৈষণার আকাঙ্কণ করে - - ন্বিত করিয়াছেন। কিন্তু আরও পালিত, আরও ঘোষ । মহাশয়গণের আবির্ভাব না হইলে দুশ্চিন্তার হ্রাস হইবে না। বিজ্ঞানার্থী ছাত্র নিধন, দেশও নিধন ; ধনসাধ্য বিজ্ঞান । তিষ্ঠিতে পারিতেছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধানের উদ্দেশু —ছাত্রকে কেবল বিনয় ও জ্ঞানদান নহে। সে উদ্বেশ্ব । - হইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে আরম্ভ হইতে শেষ পৰ্য্যন্ত একটি দুইটি বিষয়ে আবদ্ধ রাথিতেন না, বিজ্ঞানের স্বন্ধ সূক্ষ্ম বিষয় শিখিবার, মনে রাখিবার পরীক্ষা করিতেন না। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রগণকে এক এক বিষয়ে প্রাজ্ঞ করিতে অভিলাষী। বিলাতে যাহা সম্ভাবিত হইয়াছে, এদেশেও তাহা হইবে, এই আশায় বিলাতী বিশ্ববিদ্যালয় এদেশে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। কিন্তু দেখা যাইতেছে, সে আশা সম্যক ফলবতী হইতেছে না। দেশের প্রজ উত্তম হউক, বিদ্বান হউক, জ্ঞানী হউক, প্রথমে এই কামনা। - কেহ কেহ এক এক বিষয়ে প্রাজ্ঞ হউক, ইহা দ্বিতীয় কামনা। প্রথমে সমাজদেহ পুষ্ট ও বলবান হউক, তার পর আবশ্বক অঙ্গ উক। এই ভাবে দেখিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম -