পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৬ দেখিছি,বেছি বাবারে দোহাই ।ि રો विब्रां প্রবঞ্চনা চলিতেছে! অথচ এইসকল প্রতিষ্ঠানের পরিচালক যাহারা তাহাদের সম্মান অক্ষুণ্ণ । নিরীহ প্রজাকে লাঞ্ছিত করিবার জন্য রাজতন্ত্রের নামে কী বীভৎস মিথ্যাবাদ প্রচারিত হইতেছে দেখিতেছি, অথচ যাহার এই রাজতন্ত্রের কর্ণধার তাহারা সকলেই আচার-আচরণ ও বংশগরিমায় ভদ্র । ইহার কারণ এই যে, মানুষ যখন এইসকল বিপুল যন্ত্রসংঘকে নির্বিচারে মানিতে স্বরু করে, তখন তাহার এই যন্ত্রকেই দেবতা বলিয়া মানিয়া লইয়া অশেষ গৌরব অনুভব করে এবং অন্ধ ভক্তের মতো এই যন্ত্রের নামে ভয়াবহ অবিচার-সাধনেও কুষ্ঠিত হয় না। এই আধুনিক জড়-পৌত্তলিকতার (fetish worship) প্রভাবে অন্যসব মানবীয় ধৰ্ম্ম লোপ পাইতে বসিয়াছে –মাতুব ও মনুষ্যত্ব বলির অসংখ্য উপায় এই পৌত্তলিকতাই দিনদিন জোগাইয়া দিতেছে । আমার এই চিন্তাধারায় সহানুভূতিসম্পন্ন একজন শ্ৰোতা আমাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন—এই সংঘ যন্ত্রকে ঠেকাইয় রাখা যায় কি করিয়া ; তাহার ভয় ছিল যে,তাহা করিতে গেলেই অন্তপ্রকারের যন্ত্র মাথা খাড়া করিয়া উঠিবে। আমি বলিয়াছিলাম—ব্যক্তিস্বরূপ ( personality ) ও আদর্শ ( ideal ) যাহাদের জীবনে একীভূত এমন কতকগুলি মানুষের ( individual ) উপর আমার ভরসা আছে । যে যন্ত্রশক্তির বিরুদ্ধে তাহারা দণ্ডায়মান, তাহার সহিত তুলনায় তাহার ক্ষুদ্র ও দুৰ্ব্বল মনে হইতে পারেন, প্রকাও একটি জড় পৰ্ব্বতের পাশে সজীব একটি বৃক্ষকে যেমন মনে হয় । কিন্তু প্রাণের ইন্দ্রজালশক্তি ত এই বৃক্ষের আছে, দিনে দিনে উঃা আপনার প্রাণশক্তির নবনব প্রকাশে আপনার জীবনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে, পরাস্ত হইয়া আপাতমুতুমুখে পতিত হয়, শুধু পুনৰ্ব্বার সঞ্জীবিত ইষ্টয়া উঠিবার জন্ত। আমার বিশ্বাস অমানুষিক জড়শক্তি যখন দিকে-দিকে প্রভাব বিস্তার করে, তখন মহুষ্যত্বে দৃঢ় বিশ্বাসপরায়ণ কতকগুলি ব্যক্তির উদ্ভব হয়। র্তাহার মানুষের প্রাণ শক্তির অবমাননায় তীব্রভাবে সচেতন হইয় উঠেন এবং অবজ্ঞা ও নিঃসঙ্গতার মধ্যেও অকুতো প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩২ ভয়ে আপনাদের নিৰ্দ্ধারিত পথ অনুসরণ করিয়া চলেন। [ ২৫শ ভাগ, ২য় খণ্ড ইংলওে ঠিকৃ এম্নি একটি ব্যক্তির পরিচয় পাইয়াছি। তিনি ই, ডি, মোরেল (E.D. Moral ) । তিনি আজ মরিয়াও অমর হইয়াছেন। মৃত্যুতে ইহাদের সমাপ্তি নহে। এমন সব লোককে দেখিলে বুঝিতে পারি এই সৰ্ব্বব্যাপী জড়ত্বের মধ্যে মানব-প্রাণ-শক্তির স্ফুলিঙ্গ এখনো জলিতেছে —নিরাশ হুইবার কারণ নাই। মানবের সভ্যতা যেমন কয়েকটি ব্যক্তির দ্বারা স্বল্প হইয়াছে—কয়েকটি ব্যক্তিই তাঙ্গ; বঁচাইয়া রাখিবে। আঞ্জিকার দিনে জড় যন্ত্রের একছত্র আধিপত্যের মধ্যে যে এমন-সব ব্যক্তি জন্মিতে পারে, ম্যা কুলার জীবন ও সাধনা তাহার একটি প্রক্লষ্ট প্রমাণ। যে নিদারুণ অপমান ও লাঞ্ছনা ঠাই।াকে নিরঞ্জর সহিতে হইয়াছে, ভাঙ্গাই প্রমাণ করিয়া দিতেছে যে আজিকার দিনে তাংশকে জগতের একান্ত প্রয়োজন আছে এবং এই লাঞ্ছনা ও অপবাদের দ্বারাই তাহার সমসাময়িক মানুষের র্তাহার মহত্ত্বকে স্বীকার করিয়া লইতেছে।” রবীন্দ্রনাথ যে সকল মহাপুরুষকে আধুনিক জড়জগতে প্রাণস্ফুলিঙ্গ বলিয়া বর্ণনা কবিয়া স্বৰ্গীয় মগজু। মোরেল ও বিশ্বপ্রাণ মনম্বী বুলাকে দৃষ্টান্তস্বরূপ উল্লেখ করিয়াছেন তিনি নিজেও তাছাদের অন্যতম ; তাহার বিশ্বপ্রাণভার কথা দিকে-দিকে প্রচারিত হইতেছে শু আমাদের দেশ ও জাতিকে বিশ্বমানবের কাছে গৌরবান্ধিত ও স্বপ্রতিষ্ঠিত করিতেছে । বিশ্বপ্রেমিক রমা রলার জন্মদিনে এখন দেশে-দেশে উৎসব হইতেছে এবং তাহাতে যোগ দিয়া বিশ্ববাসী তাহাদের অন্তরের প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করিতেছে। কবির সহিত আমরাও এই মহাপুরুষের সম্বৰ্দ্ধনা করিতেছি এবং বলিতেছি, *দেশের গণ্ডী বা ক’লের গণ্ডী দ্বারা তোমরা বদ্ধ নও, তোমরা সৰ্ব্বকালের এবং সৰ্ব্বদেশের । তোমরা যে সত্য প্রচার করিতেছ তাহা চিরন্তন, মহুষ্যত্বের জয় পতাকা তোমরা ছঃখ, দারিদ্র্য ও লাঞ্ছনীর মধ্যেও বহন করিতেছ, তোমাদের কার্য্য জয়যুক্ত হউক।”