পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१9● প্রবাসী—কার্ভিক, ১৩৩২ [२८* छां★, २ग्न थ७ সাবিত্রীর" উপাখ্যান হইতে আরম্ভ করিয়া—ইহার সব ইতিহাসই বঙ্গরমণীর নিকট স্বপরিচিত—কৃত্তিবাসকাশীরামদাসের কল্যাণে বাজলার জলবায়ুর সঙ্গে-সঙ্গে বাঙালী ইতিহাস হজম করিয়া মুখে মুখে আবৃত্তি করিতে শিখিয়াছে। কৃত্তিবাস প্রকৃত পক্ষে বাংলার তুলসীদাস। কারণ, কৃত্তিবাসের রামায়ণ শুধু মহাকাব্য নয়, তুলসীদাসের রামায়ণের মতন উহা বাঙালীর ধৰ্ম্মগ্রন্থ। কৃত্তিবাস একাধারে কবি ও ধৰ্ম্মোপদেষ্ট । তিনি যেমন আনন্দ দান করেন, তেমনি ধৰ্ম্মোপদেশও দিয়া থাকেন। য়ামায়ণের অমূল্য উপদেশাবলী আবৃত্তি করিয়া বাংলা দেশে ধৰ্ম্ম ও নীতির যে উৎকর্ষ সাধিত হইতেছে, তাহা ংলার যাহারা অস্থিমজ্জা সেই পল্লীবাসীদের মধ্যে— নিরক্ষর অথবা অর্ধশিক্ষিত কৃষক হইতে, শিক্ষিত ভদ্র পরিবারে—বিশেষভাবে অনুভূত হইবে। বিদ্যাসাগরচরিত-লেখক চণ্ডীবাবু যথার্থই বলিয়াছেন, “এদেশের নিম্ন-শ্রেণীর লোক যে অন্যান্ত দেশের তদবস্থাপন্ন লোকদের অপেক্ষ নম্র ও ধর্শ্বশীল, কৃত্তিবাসের অক্ষয়কীৰ্ত্তি ও কাশীরাম দাসের ভারতরত্নখনিই তাহার প্রধান কারণ। পাশ্চাত্য জাতিসমূহের ধর্শ্ব-গ্ৰন্থ বাইবেল দ্বারা যে উদ্দেপ্ত সিদ্ধ হয় নাই, ভারতে বেদ, উপনিষদ ও পুরাণসমূহের দ্বারা যে উদ্দেশ্য সম্যকু সিদ্ধ হয় নাই, বাঙ্গল দেশে তাহা এই দুই মহাকাব্য-গ্রন্থ দ্বারা সাধিত হইয়াছে। বহুবিধ বিভিন্নতা ও বিচিত্রতার মধ্যে ভারতে জাতীয়তার শেষ রেখা সমাজ-দেহের ভিত্তি-মূলে যে দেখিতে পাওয়া ধায়, রামায়ণ ও মহাভারত তাহা নীরবে রক্ষা করিয়া আসিতেছে। বঙ্গদেশে কৃত্তিবাস ও কাশীরাম, ভারতে বৃ্যাস ও বাল্মীকি ?” 锡 রামায়ণ-মহাভারত বাঙালী স্ত্রীলোকের উপর কি প্রভূত প্রভাব বিস্তার করিয়া আছে, তাহা ভাবিলে বিস্ময়ে অবাক হইয়া যাইতে হয়। বঙ্গললন রামায়ণ-মহাভারত কি অকপট বিশ্বাসে, কি অসীম শ্রদ্ধা ও ভক্তির সহিত পাঠ করেন, তাহার একটি চিত্র শরৎবাবু র্তাহার চরিত্রীনে নিপুণভাবে অঙ্কিত করিয়াছেন। श्रृंखैबरच चान्नवारकब्र चबाबहिउ *प्ब्रड्रे একপালা রামায়ণ দেওয়া অবগু-কৰ্ত্তব্যের মধ্যে দাড়াইয়াছে। প্রেত-আত্মার কল্যাণের নিমিত্তই যে রামায়ণ দেওয়া হয় তাহা মনে করিবেন না। স্ত্রীলোক ও অশিক্ষিতদের ধারণা প্রাদ্ধের পর রামায়ণ গান হইলে বাড়ীতে আর ভূতপ্রেতের উপজৰ হয় না। ‘রাম নামে ভূত পলায়’ এই বিশ্বাসেই ভূত-শাস্তির জন্ত অর্থাৎ গৃহস্থের কল্যাণ কামনায় উক্ত প্রথা আবহমান কাল চলিয়া আসিয়াছে। আর-একটি প্রথা আছে, সন্তানাদি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ষষ্ঠ রাত্রিতে অর্থাৎ যে দিন বিধাতা পুরুষ শিশুর ভাগ্য লিখিয়া যান, ছেলে হইলে রামের জন্ম, আর মেয়ে হইলে সীতার জন্ম কৃত্তিবাস হইতে অবশু-অবগু পাঠ করিতে হয়। আজকাল বটতলার দৌলতে ঘরে-ঘরে রামায়ণের অভাব নাই—যাহার ঘরে রামায়ণ নাই, তাহার অন্যের নিকট চাহিয়া-চিন্তিয়া প্লামায়ণ জোগাড় করিতে অধিক বেগ পাইতে হয় ন—তাই প্রতিঘরে প্রস্তুতির শিয়রে অন্যান্য দ্রব্যের সহিত সযত্বে কৃত্তিবাসী রামায়ণ সাজাইয়া রাখা হয়। এ সম্মান কিন্তু কাশীদাসী মহাভারতও পান না, পূর্ববঙ্গে ঘরে-ঘরে রামায়ণ ঐরুপ ধৰ্ম্মগ্রন্থের মতন সন্ত্রম ও ভক্তিসহকারে আজিও আদৃত হয়। রাম-নাম লইলে ভূত পলায়—এ-বিশ্বাস সকলের না থাকিতে পারে, রত্নাকর-দস্থ্য 'মরণ-মরা করিয়া সৰ্ব্বপাপে পরিত্রাণ পাইয়াছেন একথাও বোধ হয় কেহু-কেহ হাসিয়া উড়াইয়াছেন, কিন্তু সাধারণ বাঙ্গালীর নিকট রামনামের যে অশেষ মহিমা ! কৃত্তিবাসের প্রসাদে বাঙালীর কাছে রাম লক্ষ্মণ সীতা র্তাহাদের মহুষ্যজন্ম পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হুইয়াছেন। রাম-লক্ষ্মণ বিষ্ণুর অবতার, সীতা ত স্বয়ং লক্ষ্মীদেবী। কোন বাঙালী অম্বীকার করিবেন, তাহারা দেবদেবীর অবতার নছেন ? ঐ যে হুকুমানজি, তিনিও ত ব্ৰহ্মার শাপে স্বৰ্গচ্যুত দেবতা। আর দশমুণ্ড কুড়িহস্ত ঐ যে রাবণ রাজা, তিনি ত ঠাকুরমা’র ঝুলির রাক্ষসদেরই পূর্বপুরুষ স্বর্ণ-লঙ্কার ঐশ্বৰ্য্য ও সভ্যতা ষে রামচন্দ্রের অযোধ্যাপুরীর অপেক্ষ বিন্দুমাত্র নূ্যন ছিল না, তাহ