পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] গৌরী জিজ্ঞাসা করলে—আমি যখন ওদের মতন বড় হবে। তখন আর কোনো দোষ হবে না ? অনল একটু কথা ঘুরিয়ে বললে—না -বড় হয়ে তুমি নিজে বুঝে-স্বঝে যেখানে যাবে, সেখানে গেলে কোনো দোষ হৰে না । গৌরী একটুক্ষণ চুপ করে থেকে ব্যস্তভাবে জিজ্ঞাসা করে’ উঠল--আমি কবে বড় হবে।—আজ, না কাল । বলে। না, বাবা । অনল দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে সক্ষেহে গৌরীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে-দিতে মিষ্টস্বরে বললে—তুমি লক্ষ্মী মেয়ে, আরো শান্ত হয়ে থাকলে শীগগিরই বড় হয়ে উঠবে। গৌরী নিজাজড়িতস্বরে বললে--আমি শাস্ত হয়ে পাকুব । খুব খুব শান্ত হবে । গৌরীর ঘুম এসেছে দেখে অনল বললে--তুমি আর কথা বোলো না, ঘুমোও ; এখন রাত জাগলে সকালে উঠতে দেরী হবে, আর তোমার মার বাড়ী থেকে তোমাকে নিয়ে যাবার জন্তে লোক এসে ফিরে” চলে’ যাবে, তোমার ধাওয়া হবে না । গৌরী ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি বলে উঠল—না বাবা না, জামাকে নিতে এলে তুমি তাদের একটু দাড়াতে বোলে, আর আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিও। অনল ঈষৎ হেসে বললে—আচ্ছা, তাই হবে । গৌরী পাশ ফিরে ছোট মাথাটি কাত করে’ লেপের মধ্যে গুটিগুটি হয়ে শুলো এবং সঙ্গে-সঙ্গেই চোখ-দুটি বুজে ফ্লাঙ্ক নিশ্বাস টেনে-টেনে ঘুমিয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পরে গৌরীর ঘুম গাঢ় হয়ে উঠেছে দেখে অমল উঠে কাপড় ছাড়লে, হাত-পা ধুলে, এবং গঙ্গাজল স্পর্শ করে ভূত্যকে ডেকে বললে—উমেশ, বামুন-ঠাকুরকে ভাত দিয়ে যেতে ৰল । অনল এখন বড়লোক হয়েছে, তার বাড়ীতে এখন চাকর দাসী রাধুনী দারোয়ান গাড়ী ঘোড়া কোচ - ম্যান সহিস । দারিজ্যের চিহ্ন তার কোনো দিকে নেই। چ-سیاس۹b নষ্টচন্দ্র やら* 畅 毒 পরদিন গৌরী জাস্বার আগেই ধনিষ্ঠ স্নান করে’ পূজা আহ্নিক সেরে একটু জল খেয়ে নিয়েছিল, কারণ লেখাপড়া করে গৌরীকে খাইয়ে ও ঘুম পাড়িয়ে তার খেতে একেবারে অপরাহ্ব হয়ে যাবে। গৌরী তার সূডন মার সঙ্গে স্থজনেরই না-বোঝা ভাষায় গল্প করতে-করতে ঘুমিয়ে পড়েছে, এবং এই অবসর পেয়ে ধনিষ্ঠা আবার স্বান করে’ শুচি হয়ে খেতে বসেছে। আল্লক্ষণ পরেই গৌরীর ঘুম ভেঙে গেল, সে চোখ মেলে দেখলে তার পাশে মা শুয়ে নেই। মাকে খোজ বার জন্তে সে ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে এল এবং চারি দিকে দৃষ্টি বুলাতে-বুলাতে লম্বা বারাও দিয়ে আপন মনে এক দিকে এগিয়ে চল ল । কিছু দূর গিয়েই বারাওরি একটা বাকের মোড় থেকে সে হঠাৎ দেখ তে পেলে সামনের এক ঘরে গরদের কাপড় পরে’ দরজার দিকে পিঠ করে একখানি বড় পুরু গালিচার আসনের উপর তার মা বলে আছে। দরজার দিকে পিঠ ফিরিয়ে থাকাতে তার মা যে কি করছেন তা গৌরী দেখতে পাচ্ছিল না, এমন সময় এমন ভাবে মা যে কি করতে পারেন ভেবে দেখবার মতন তার বুদ্ধি কি শক্তি ছিল না। মার পিছন দিক থেকে অতর্কিতে গিয়ে মার গলা হঠাৎ জড়িয়ে ধরে’ মাকে চম্কে দেবে মনে করে গৌরী কৌতুকে উজ্জল হয়ে একমুখ হাসি চেপে পা টিপে-টিপে ঘরের মধ্যে গিয়ে প্রবেশ কবুলে। সেই সময় মাধবীও একখানি শাদা পাথরের ধালার উপরে কয়েকটি শাদা আর কালে পাথরের বাটি বসিয়ে ধনিষ্ঠার জন্যে ক্ষীর দই সন্দেশ নিয়ে আসছিল; দুই হাত তার বদ্ধ, ভারাক্রাপ্ত, তার ইচ্ছা হ’লেও সে ছুটে এসে গৌরীকে ধরে ফেলতে পারলে না, সে দূর থেকেই চেঁচাতে লাগ ল—ও মেম্দিদি-মণি তুমি ও-ঘৰে ধেও না, ও মেম্‌-দিদি-মণি তুমি ও-ঘরে ঘেও না!:-- গৌরী মাধবীর এই অকস্মাৎ চীৎকার শুনে কতকটা ভয় পেক্ষে এবং কতকটা মাধবী চীৎকার করে তার মজার খেলাটুকু নষ্ট করে দিচ্ছে ভেবে ছুটে গিয়ে ধনিষ্ঠার পিঠের উপর ঝাপিয়ে পড়ে দুই হাতে তার গলা জড়িয়ে