পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S్స89 প্রবাসী SN9gN9 এ বৎসরও হইয়া গিয়াছে। এইরূপ সভার অধিবেশন হউক বা না-হউক, তাহাতে রামমোহন রায়ের কোন হিত বা অহিত হয় না। আমরা যদি বৎসরের মধ্যে অন্ততঃ একদিন র্তাহাকে স্মরণ কৃতজ্ঞতার ও শ্রদ্ধার সহিত করি, তাহা হইলে আমাদের উপকার হয়। এই বৎসরের সভাগুলির সংবাদের একটি বিশেষত্ব বা অসম্পূর্ণতার কারণ আমরা স্থির করিতে পারি নাই। অন্য অনেক জায়গায় যেমন স্থতিসভা হইয়াছিল, তেমনই গত বহু বৎসরের মত কলিকাতার রামমোহন লাইব্রেরী হলেও সভা হইয়াছিল। কিন্তু কলিকাতার কোন দৈনিক কাগজে এই সভার এক পংক্তি রিপোর্টও দেখিতে পাই নাই, যদিও বঙ্গের ও বঙ্গের বাহিরের অন্ত অনেক রামমোহন-স্মৃতিসভার সংবাদ বাহির হইয়াছে। রামমোহন রায়ের চাকরী-গ্রহণের কারণ প্রবাসীর বর্তমান সংখ্যায় ঐযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ রামমোহন রায়ের বৈষয়িক জীবন সম্বন্ধীয় প্রবন্ধে তাহার চাকরী-গ্রহণের কারণ আলোচনা করিয়াছেন। এ বিষয়ে আমার অনুমান এইরূপ, যে, অন্য কারণ যাহাই থাকুক, তিনি শাসন, বিচার, খাজনা নিৰ্দ্ধারণ ও আদায় প্রভৃতি নানা সরকারী বিভাগ সম্বন্ধে প্রত্যক্ষ জ্ঞান লাভের জন্তও চাকরী লইয়া থাকিবেন। র্তাহার জীবনের ঘটনাবলী স্রোতে ভাসমান তৃণখণ্ডের ইতস্ততঃ গতির মত ছিল বলিয়া মনে করা যায় না। তিনি জীবনে কি করিবেন, তাহা আগে হইতেই ভাবিয়া স্থির করিয়া রাখিয়া থাকিবেন। ধৰ্ম্ম সমাজ রাষ্ট্র প্রভৃতি সকল বিষয়ে সংস্কার সাধন তিনি জীবনের ব্ৰত বলিয়া মনে মনে অপেক্ষাকৃত অল্প বয়সেই গ্রহণ করিয়া থাকিবেন। রাষ্ট্রীয় নানা বিভাগের কার্ধ্য সম্বন্ধে প্রত্যক্ষ জ্ঞান ব্যতিরেকে তাহার সংস্কার সাধন করা যায় না। সেই জ্ঞান ষে তাহার ছিল, তাহার গ্রন্থাবলী পড়িলে তাহা জানা যায়। বিলাতী পালেমেন্টের অবগতির জন্ড তিনি এ-দেশের বিচার-বিভাগ, খাজনা-বিভাগ প্রভৃতি সম্বন্ধে যে প্রশ্নোত্তর রচনা ও প্রকাশ করিয়াছিলেন, তাহ হইতে বুঝা যায় ঐ সকল বিষয়ে তাহার জ্ঞান কিরূপ পুখামুপুখ ও ভ্রমরহিত ছিল। আমার অল্পমান, ঐরূপ জ্ঞানলাভ র্তাহার চাকরী গ্রহণের, একমাত্র বা প্রধান না হইলেও, অন্ততম উদ্দেশু ছিল। রামমোহন রায়ের বিচার আগে আগে ক্লাইব ও ওয়ারেন হেষ্টিংস সম্বন্ধে ইংরেজরা ষে-সব বহি লিথিয়াছিলেন, তাহাতে র্তাহীদের দোষের পরিচয় ও প্রমাণ পাওয়া যায়। তাহার পর যে-সব বহি লিখিত হইয়াছে, তাহার অনেকগুলিতে দোষ ক্ষালনের ও চাপা দিবার চেষ্টা আছে । ইহার কারণ, ইংরেজরা স্বদেশের প্রসিদ্ধ লোকদিগকে ভাল লোক বলিয়া জগতের কাছে উপস্থিত করিতে চায়। আমরা আমাদের দেশের কোনও প্রসিদ্ধ বা অপ্রসিদ্ধ ব্যক্তির দোষ চাপ দিবার পক্ষপাতী নহি । কিন্তু যে-ক্ষেত্রে কেবল অনুমান করা যায়, প্রত্যক্ষ কোন প্রমাণ নাই, সেখানে মন্দটাই অনুমান করিবার রীতি সমর্থনযোগ্য মনে করি না। মন্দটারই অনুমান মক্ষিকাবৃত্তি মাত্র। রমাপ্রসাদ বাবু প্রবাসীর বর্তমান সংখ্যায় (৩৯ পৃষ্ঠার পাদটীকায় ) মিঃ ক্রিম্পের একটা মস্তব্যে উল্লিখিত শোনা কথা ধৰ্ত্তব্য নহে বলিয়াছেন। কিন্তু, ধরুন, যদি তাহা বোর্ডের চিঠিতেই থাকিত, তাহা হইলেও তাহা হইতে রামমোহনের কোন একটা দোষই কেন কল্পনা বা অনুমান করা হইবে ? রামমোহনের জীবনচরিতের আলোচক ও পাঠকেরা জানেন, যেমন সৌজন্য সেইরূপ আত্মসম্মানবোধ তাহার স্বভাবসিদ্ধ ছিল। কোনও ইংরেজের চাকরী করেন বলিয়া তাহার উদ্ধত, অশিষ্ট, বা অন্যায় আচরণ বরদাস্ত করিবার বা অবৈধ গৰ্হিত আদেশ পালন করিবার লোক তিনি ছিলেন না। সেকালের ( এবং একালেরও) সব ইংরেজ কৰ্ম্মচারী ডিগবী সাহেবের মত ভদ্র ও সদাশয় ছিলেন না। অন্ত রকমের কোন ইংরেজ কৰ্ম্মচারী রামমোহনের স্বাধীনচিত্ততা ও আত্মসন্মানবোধের জন্তই Фteta жw afеки инч (“unfavourable mention" ) করিয়া থাকিতে পারেন, ইহা কি হইতে পারে না ? রামমোহন রায়ের সম্বন্ধে তাহার সমসাময়িক ভারতীয় ইংরেজ কৰ্ম্মচারীদের অনেকের যে একটা উদ্ধত বিদ্বেষ ও ঈর্ষার ভাব ছিল, তাহা তৎকালীন সমর-সচিব ( military