পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনিত্যের যত আবর্জনা পুজার প্রাঙ্গণ হতে প্রতিক্ষণে করিয়ো মার্জনা । জীবনে তব প্রভাত এল নব অরুণ-কাস্তি, তোমারে ঘেরি মেলিয়া থাক শিশিরে ধোওয়া শাস্তি । মাধুরী তব মধ্যদিনে শক্তিরূপ ধরি কৰ্ম্মপটু কল্যাণের করুক দূর ক্লাস্তি । জালো নবজীবনের নিৰ্ম্মল দীপিকা, মৰ্ত্ত্যের চোখে ধরে স্বগের লিপিকা । আঁধার গহনে রচো আলোকের বীথিক, কল-কোলাহলে আনো অমৃতের গীতিকা । ভজন-মন্দিরে তব পুজা যেন নাহি রয় থেমে, মানুষে কোরো না অপমান । যে ঈশ্বরে ভক্তি কর হে সাধক, মানুষের প্রেমে র্তারি প্রেম করো সপ্রমাণ । বাহিরের আশীৰ্ব্বাদ কি আনিব আমি অস্তরের আশীৰ্ব্বাদ দিন অন্তৰ্য্যামী পথিকের কথাগুলি লভিবে পথের ধুলি জবন করিবে পূর্ণ জীবনের স্বামী । জন্মদিনে লিখে দিয়েছিলেন দু-জনকে— জন্মের দিন করেছিল দান তোমারে পরম মূল্য, রূপ মহিমায় হোলো মহীয়ান সূৰ্য্য তারার তুল্য। দূর আকাশের পথ যে আলোক এনেছে ধরার বক্ষে নিমেষে নিমেষে চুমি তব চোখে তোমারে বেঁধেছে 2. সখ্যে, দূর যুগ হতে আসে কত বাণী কালের পথের যাত্রী, সে মহাবাণীরে লয় সম্মানী তোমার দিবস-রাত্রি । জন্মদিনে রহিল নাম লেখা, মৃত্যুপটে রবে কি তার রেখা ? কবিতার অর্ঘ্য পেয়ে উংসারিত হয়েছিল দুটি কবিত— আমার আপন ভালো লাগায় রচি আমার গান, তুমি দিলে তোমার আপন ভালো লাগার দান । মোর আনন্দ এমনি করে নিলে আঁচল পেতে তোমার আনন্দেতে h সঙ্গীতের বাণীপথে - ছন্দে গাথা তব নমস্কৃতি জাগাল অন্তরে মোর প্রেমরসে অভিষিক্ত গীতি । বসন্তে কোকিল গাহে অলক্ষিত কোন তরুশাখে দূর অরণ্যর পিক সেই স্বরে তারে ফিরে ডাকে । রবীন্দ্রনাথ আমাদের এই মাটির পৃথিবীকে, তার আনন্দ এবং সৌন্দর্ঘ্যের বিচিত্র প্রকাশকে ষে অস্তরের সঙ্গে কত ভালবাসেন, তার অজস্র প্রমাণ “স্বৰ্গ হইতে বিদায়” প্রভূতি বড় বড় কবিতাতে আছে, কিন্তু এখানেও সে পরিচয়ের অভাব নেই— সময় আসন্ন হোলে আমি যাব চলে, হৃদয় রহিল এই শিশু চারাগাছে এর ফুলে, এর কচি পল্লবের নাচে অনাগত বসন্তের আনন্দের আশা রাখিলাম, আমি হেথা নাই থাকিলাম ।