পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

टनीच ভারতে পল্লী-উন্নয়ন কার্ষ্য ٩وخVe প্রকাশিত হওয়ায় তাহার পুনরুল্লেখ নিম্প্রয়োজন মনে করি। এই বৎসর বাংল-গভর্ণমেণ্ট পল্লী-উন্নয়ন কার্ধ্যের জন্ত যে আরও ১৮ লক্ষ টাকা পাইয়াছেন তাহার ব্যয়ের সম্পূর্ণ স্বীমৃ এখনও প্রকাশিত না হইলেও ইহা বিজ্ঞাপিত হইয়াছে যে এই অর্থ যথেষ্ট না-হওয়ায় উহা অনেকগুলি ব্যাপারে ব্যয়িত হওয়া অপেক্ষা কয়েকটি বাছা বাছা নির্দিষ্ট ব্যাপারে ব্যয়িত হইবে, যাহাতে ইহার দ্বারা সেই সেই ব্যাপারে যথেষ্ট উপকার সাধিত হইতে পারে। এই বিষয়ে জনসাধারণ ও দেশের নেতাদের একটি প্রধান কৰ্ত্তব্য-কর্তৃপক্ষকে জানান কোন কোন বিষয়ে পত্নীগুলির অভাব-অভিযোগ সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক ও যাহা নিবারণের আবশুকতাও সৰ্ব্বাগ্রে ৷ স্বখের বিষয় এই যে, জনসাধারণ এক্ষণে গভর্ণমেণ্টের এই প্রচেষ্টায় বিশেষ আনন্দিত হইয়াছেন এবং বিভিন্ন জেলায় জেলা-কৰ্ম্মচারীদের সহিত এ-বিষয়ে সহযোগ করিতেছেন। এ-কথা সকলেই অনুভব করেন বা বুঝেন যে, বাংলার ন্যায় এক বিশাল দেশে গভর্ণমেণ্ট প্রদত্ত উক্ত অর্থ পল্পীউন্নয়ন কার্ধ্যের জন্য অল্প বা অযথেষ্ট । এ-কথা যেমন জনসাধারণ অনুভব করেন, তেমনই গভর্ণমেণ্ট-কর্তৃপক্ষও তাহা অবগত আছেন। এবং এইরূপ অর্থদান যখন কেন্দ্রীয় গভর্ণমেণ্ট হইতে প্রতি বৎসর পাইবার আশা নাই তখন কেবল অর্থের দ্বারা উক্ত কাৰ্য্য যথেষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কত অল্প। সেই জন্য গভর্ণমেণ্ট কর্তৃপক্ষ এক উপায় উদ্ভাবন করিয়াছেন। তাহা হইতেছে পল্লীবাসীদের স্ব-স্ব গ্রামের উন্নতি বা সংস্কারকার্ষ্যে স্বতঃপ্রণোদিত ও আত্মনির্ভরশীল হইয়া ব্ৰতী হইবার জন্য প্রেরণা দান বা উদ্বোধন। জেলা কৰ্ম্মচারীরা স্ব-স্ব জেলার প্রধান প্রধান লোকদের সহিত মিলিত হইয়া খাল-পুষ্করিণী খনন, জঙ্গল পরিষ্কার প্রভৃতির ন্তায় কাৰ্য্য নিজেরা স্বহস্তে করিয়া পল্লীবাসীদের প্রেরণা দান বা উদ্বুদ্ধ করিয়া থাকেন। তাহার উপর বাহতে পল্লীবাসীদের উদ্যম এ-বিষয়ে অধিকতর প্রাণবান ও গতিশীল হয় তাহার জন্ত পুরস্কারপ্রদান করিয়া এক প্রতিযোগিতাও স্থাপন করিয়াছেন। ইহা “অাদর্শ গ্রাম প্রতিযোগিতা" নামে বিদিত। এই উপায়ের দ্বারা গভর্ণমেণ্ট-কর্তৃপক্ষ বাংলার বিভিন্ন জেলায় কিরূপ কাৰ্য্য করিতে সমর্থ হইয়াছেন তাহারও বিবরণ সংবাদপত্রগুলিতে মাঝে মাঝে প্রকাশিত হওয়ায় এখানে তাহার পুনরুল্লেখ নিম্প্রয়োজন। বাস্তবিক গভর্ণমেন্ট কর্তৃপক্ষের এই নূতন উপায়ের দ্বারা পল্লীবাসীরা নিজেদের কৰ্ত্তব্য বুঝিতে পারিয়া ষে অপরের অপেক্ষা না রাখিয়াই স্ব-স্ব পল্লীর যথেষ্ট উপকার সাধন করিতে পরিবে সে-বিষয়ে অধিক বলাই বাহুল্য, এবং যিনি এই উপায় উদ্ভাবন করিয়াছেন তাহাকেও সমূহ প্রশংসা দান করিতে হইবে। এক্ষণে দেশের অন্ত যাহারা পল্লী-উন্নয়ম কার্ঘ্যে ব্ৰতী হইয়াছেন র্তাহাদের পল্লীবাসীদের স্বকৰ্ত্তব্যবোধে উক্তরূপ উদ্ধপ্ত করার উপায়টি বিশেষ অনুকরণীয়। অর্থের সাহায্য অপেক্ষ ইহার দ্বারাই পল্লী-উন্নয়ন কাৰ্য্য বহুল পরিমাণে অধিকতর সম্ভব হইবে। যাহা হউক, উপসংহারে আমরা বলিতে চাহি যে, যখন একেবারে অর্থ ব্যতীত কোন কাৰ্য্যই সম্ভব নহে, তখন কেন্দ্রীয় গভর্ণমেণ্টই হউ বা প্রাদেশিক গভর্ণমেন্টই ইউ পরী-উন্নয়ন কাৰ্য্যের জন্য অধিক অর্থ মজুত রাখিবার কর্তব্যটি ভুলিবেন না, এবং তাহাদের উচ্চ কৰ্ম্মচারীরা এক্ষণে যেভাবে পল্লীবাসীদের উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করিতেছেন তাহা হইতেও নিবৃত্ত হইবেন না। কারণ, যে কারণেই হউক, গভর্ণমেণ্টের জনপ্রিয়তার যেভাবে লাঘব ঘটিয়াছে তাহা দূর করিবার উপরিউক্ত কৰ্ম্মই প্রকৃষ্ট উপায় হইবে। লোকেরা যদি দেখেন ও বুঝেন যে রাজকর্তৃপক্ষ বাস্তবিকই তাহাদের স্বৰ্গ-স্বাচ্ছদ্য বিধানের জন্য এক্ষণে দেশীয় লোক অপেক্ষ অধিকতর উন্মুখ ও আগ্রহশীল তাহা হইলে ইহার দ্বারা সহজেই তাহার যেরূপ জনসাধারণের চিত্ত জয় করিতে পরিবেন, তেমনি অপর দিকে দেশীয় নেতাদেরও প্রশংসাভাজন হইতে পারিবেন।