পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ওয়ান্ট হুইটমান স্মরণে) শ্ৰীকালিদাস নাগ খুজে পেতে হবে খোড়া হয়েছে স্বয়েজ খাল, পূবে পশ্চিমে মেলাতে, অসীম ধনরত্বের খনি, অনন্ত রহস্তের আড়ৎ ভারত । হুইটমানের গলায় নতুন স্বর : ‘রাস্ত বাত লাও— ক্ষেপিয়ে তুলেছে নতুন ইউরোপের নতুন মানুষকে ভারতের সড়ক" । টুছে দিকে দিকে কলম্বাস ভেসপিউসি আরও কত - রাস্তা কোথায় ? পথ বার করা চাই। খোজ মিলেছে কি ? ভাসে ডোবে মরে—তবু ভয় নেই আজ ত দেখি শুধু ভারত নয়, রাস্তা বেরিয়ে যায় রোখের জোরে । ডাঙায় লাগে তরী, যেখানে ঠেকে বলে ইণ্ডিয়া ! কেঁচো খুঁড়তে বেরোয় সাপ পুরান দেশ খুঁজতে মিলে যায় অকস্মাতের দান— আনকোরা নতুন মায়া-পুরী নিছক খালি নয়, অনেক মাতুষে ভর, মায়ারাজ্যের শেষ নৃপতি মণ্ডজেমা রক্তবন্যায় শেষ করে দেয় সেকেলে ইতিহাস লাল মানুষ দিয়ে যায়, সাদা মানুষের হাতে, টাটুকা রক্তের দলিল নতুন রাজ্য গড়ে ওঠে পুরান রক্তের সারে । বিরাট পাহাড়, নদী, বন প্রাস্তর মুষ্টিমেয় মানুষের কবলে, কে কাটে জঙ্গল ? কে করে চাষ ? চাই মজুর, চাই দাস কাফ্রিগ্রাম লুটে কালো মানুষের ঘর ভেঙে আনা হয় জাহাজ ভৰ্ত্তি দাসদাসী—জন্মের মত কেন । অৰ্দ্ধেক মরে, অৰ্দ্ধেক বঁাচে, কাজ ত চলে যায় ? খোড়া হয় খনি, ওঠে সোনা রূপে কত কী— ফলে ওঠে সবুজ ক্ষেত, কালো মানুষের রক্তে উৰ্ব্বর, গর্জে ওঠে কলকারখানা কোঠা বাড়ী, আকাশ ভেদ করে ওঠে সৌধচুড়া তাজব ব্যাপার—অত্যুক্তির স্বৰ্গরাজ্য । সব চেয়ে বড় সব চেয়ে ছোট সব চেয়ে দামী সব চেয়ে ঝুটোর দেশ ! গুরুচণ্ডালী ভাষা গড়ে তুলছে নতুন গদ্য নতুন পদ্য বলতে পারে চলতে পারে যার যেমন খুলী সবার রাস্তা খোলা প্রথম কৰি গেয়ে ওঠে "খোলা পথের গান’ । চীনে জাপানী তুর্কী ইরাণীতে ভর আমেরিক, শাদ দেশের বুকে গড়ে তুলছে নতুন জাত লক্ষ লক্ষ কালে মানুষ, সঙ্গে সঙ্গে গড়ে উঠছে নতুন জাতিভেদ, নতুন ছুংমার্গ ‘তফাৎ যাও কাল আদমি !" তারই মধ্যে ডাক পড়ে কালাদের, মরতে হবে যখন, বিরাট সাগর দুটে হবে মেলাতে কাটতে হবে পানামা খাল, মরতে মরতে, ‘যো হুকুম হুজুর’ কাল মজুরের এক কথা । সাগরে সাগরে দেশে দেশে হ’ল ত যোগ মানুষে মানুষে যোগটা দাড়াল কোথায় ? জেতা হলেই মানতে হবে তার সব দাবী সব অন্যায় অবিচার ? চআর টিকিট আইনের যুগে উড়িয়েছিলে আমেরিকা ন্তায্য দাবীর ঝাগু!— তোমার ওয়াশিংটন জেফারসনের দল জয়ডঙ্কা বাজিয়েছিল সাম্য স্বাধীনতার, চম্কে উঠেছিল সারা ইউরোপ তোমার ঘরানা ইংরেজও বুঝেছিল, জেগেছে নতুন জাত গাইছে নতুন স্বর গড়ছে নতুন রাষ্ট্র, নতুন মানুষ । থোরোএমারসনের রচনায়মিতালি করেছ ভারতের সঙ্গে ভারতের এক স্পর্শ করেছিল তোমার প্রাণু, তাই ত লিনকনের যুগে তুলেছিলে বড় প্রশ্ন অনেক রক্তপাত অনেক ক্ষতি সয়েও সত্য রক্ষ করেছিলে তুমি— চামড়ার রঙ যাই হোক, মানুষ যখন, দাস থাকৃবে নাক আর । তাই হুইটমানের গলায় বেজেছিল মহামানবের উদাত্ত - সঙ্গীত ।